ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দায়ী করলেন বৈরী আবহাওয়াকে, ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় দ্বিতীয় রাউন্ডে

হতাশায় শুরু সিদ্দিকুরের

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১৩ আগস্ট ২০১৬

হতাশায় শুরু সিদ্দিকুরের

ব্যর্থতার মিছিল যখন বড় হচ্ছিল, তখন ক্রীড়াপ্রেমীরা অনেক আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে ছিলেন গলফার সিদ্দিকুর রহমানকে নিয়ে। কিন্তু বাংলার টাইগারের শুরুটা হলো হতাশার, তাও প্রথম পর্বে প্রায় তলানিতে। ৬০ জনের মধ্যে যুগ্মভাবে ৫৬তম স্থানে এই গলফার। একেবারেই প্রত্যাশার বাইরে। ঠা-া বাতাসে গত দু’দিনে রিও ডি জেনিরোর আবহাওয়া পুরোপুরি বিপরীত। গরমের পরিবর্তে প্রচ- ঠা-া। আটলান্টিকের দমকা বাতাসে জ্যাকেটে প্যাকেট হাত দিয়ে হয়ে বাইরে বেরুতে হয়। এছাড়া উপায় নেই। যদিও অভ্যস্ত ব্রাজিলের নারী-পুরুষদের কাছে এটা কিছুই না। বাচ্চাদের গায়ে হাল্কা গরম কাপড় পরিয়ে নিজেরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন, চিরাচরিত টি শার্ট-প্যান্ট পরিধান করে। এটা তাদের কাছে আয়েশের। তবে যত সমস্যা এশিয়া, দক্ষিল এশিয়াবাসীদের। আমাদের কাছে মাঘ মাসের শীতের চেয়েও বেশি। প্রবাদ আছে, মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে- কিন্তু কাঁপে না ব্রাজিলিয়ানরা। কেঁপেছেন বাংলার টাইগার সিদ্দিকুর। শুরুটা খুবই হতাশজনক, বলছিলেন নিজেই। দায়ী করলেন ঠা-া বাতাসকে। আবাহওয়ার পরিবর্তন না ঘটে স্বাভাবিক থাকলে নিজেও খেলতে পারতেন স্বাভাবিক খেলা। যদিও খেলোয়াড়দেন জন্য প্রশ্নবিদ্ধ এই বৈরী আবাহওয়ায় খেলে পদকের লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেসার মার্কাস, সুইডেনের স্টেইনসন হেনরিখ আর কানাডার গ্রেহ্যামের মতো নন্দিত তারকা গলফাররা। তারা ঠিকই পেরেছেন। ব্যতিক্রম কেবল সিদ্দিকুর। লড়াই শেষে গলফ কোর্সে দাঁড়িয়ে রিও অলিম্পিক কভার করতে আসা বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বলছিলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শুরুটা ভাল করতে পারতাম। তবে এতটা খারাপ করব ভাবিনি। কিন্তু হয়ে গেছে। যদিও এখনও সময় আছে ঘুরে দাঁড়ানোর। দ্বিতীয় রাউন্ডে চেষ্টা করব রিকভারি করার। রিও গেমসের ষষ্ঠ দিনে বৃহস্পতিবার পারের চেয়ে ৪ শট বেশি খেলেছেন সিদ্দিকুর। অন্যদিকে পারের চেয়ে ৮ শট কম খেলে শীর্ষে অছেন আস্ট্রেলিয়ার মার্কাস। দ্বিতীয় স্থানে কানাডার গ্রেহ্যাম খেলেছেন পরের চেয়ে ৫ শট কম। সুইডিশ তারকা হেনরিখও পারের চেয়ে ৫ শট কম। মূলত এই তিন জনের সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। প্রথম রাউন্ডে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে আরও সতর্ক হয়ে খেলবন তারা। এটাই স্বাভাবিক। সিদ্দিকুর রহমানকে লড়াইয়ে ফিরতে হলে অসাধ্য সাধন করতে হবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। পারের চেয়ে অন্তত পাঁট শট কম খেলতে পরলে আর অন্যরা বেশি খেললেই তার পক্ষে সম্ভব ঘুরে দাঁড়ানো। কিন্তু, কথায় আছে-মনিং শোজ দ্য ডে। সকালের সর্যটায় শুরুতেই খেই হারিয়ে এখন দারুন চাপে তিনি। চার রাউন্ডের লড়াইয়ে আজকেই শেষ ভাগ্য পরীক্ষা হয়ে যেতে পারে সিদ্দিকুরের। অসাধারণ কিছু করতে পরলেই সক্ষম হবেন সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে। তা না হলে যোগ হয়ে পড়বেন ব্যর্থতার মিছিলে। এদিন তিনি দুটি বার্ডির সঙ্গে ছয়টি বগি করায় হতাশ হয়ে ফিরতে হয় প্রথমদিনে। প্রথম নয় হোলেও মোটামুটি ভালই করেছিলেন সিদ্দিকুর। টানা চার হোলে পারের সমান শট খেলার পর পঞ্চম হোলে করেন প্রথম বার্ডি। ষষ্ঠ হোলে পারের সমান শট খেলার পর সপ্তম হোলে বোগি করেন। অষ্টম হোলে বার্ডি করে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর ঈঙ্গিত দেয়া সিদ্দিকুর পরের হোলে পারের সমান শট খেলেন। এরপর আর ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি। ক্রমেই পিছিয়ে পড়েন এশিয়ান ট্যুরের দুই শিরোপা জয়ী বাংলার টাইগার। নয় শটের মধ্যে করেন পাঁচটি বোগি। দেশের প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে তিনিই সরাসরি অলিম্পিকে খেলছেন এবার। ঐতিহাসিক মারাকনা স্টেডিয়ামে রিও অলিম্পিক গেমসের বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বাহক তিনি। রিওর গলফ কোর্সে ক্যারিয়ারের প্রথম অলিম্পিক গেমসে সিদ্দিকুর কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন সেটাই এখন দেখার। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১১২ বছর পর অলিম্পিকে ফের জায়গা গেয়েছে গলফ, রিওতে। উল্লেখ্য আগেরদিন তীরন্দাজ শ্যামলী রায়ও একই কথা বলেছিলেন। মেক্সিকোর প্রদ্বিন্ধির কাছে হেরে বিদায় নিয়ে দায়ী করেছিলেন আবহাওয়াকে। ঠান্ডায় নাকি তার আঙ্গুল অবশ হয়ে পড়ছিল। ফলে শুরুটা ভাল করলেও পরে আর পারেননি লক্ষ্য ভেদ করতে। সেই একই সুর বাজালেন বৃহস্পতিবার গলফার সিদ্দিকুর। অলিম্পিকে ফিজির প্রথম স্বর্ণ স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজেদের অলিম্পিক ইতিহাসে প্রথম স্বর্ণপদক জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছে ফিজি। রিও অলিম্পিকে প্রথমবারের মতো অন্তর্র্ভুক্ত হওয়া রাগবি সেভেন্স ইভেন্টে স্বর্ণ জয় করে ইতিহাস গড়েছে দেশটি। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোরে ফাইনালে শক্তিশালী ব্রিটেনকে ৪৩-৭ পয়েন্টে উড়িয়ে দিয়ে প্রথম হওয়ার কৃতিত্ব দেখায় ফিজি। ওয়ার্ল্ড সিরিজ চ্যাম্পিয়নশিপেও ওসিয়া কোলিনিসাওর নেতৃত্বে ফিজি শিরোপা জিতেছিল। এবারও তার নেতৃত্বে ফিজি অপ্রতিরোধ্য পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে। প্রথমার্ধে দ্বীপ দেশটি ২৯-০ পয়েন্টে এগিয়ে ছিল। এই ইভেন্টে জাপানকে ৫৪-১৪ পয়েন্টে হারিয়ে ব্রোঞ্জপদক জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঝাং জাইককে হারিয়ে বিশ্বের এক নম্বর তারকা চীনের মা লং শুধু অলিম্পিক টেবিল টেনিসের সিঙ্গেলসে স্বর্ণই জয় করেননি, এর মধ্য দিয়ে টেবিলে টেনিসের গ্র্যান্ডসøামও পূরণ করেছেন। অলিম্পিকের স্বর্ণ জয়ের আগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্বকাপ ও ওয়ার্ল্ড ট্যুর টাইটেল জয় করে এই সøাম পূরণের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ২৮ বছর বয়সী লং। সিঙ্গেলস ফাইনালে তিনি দীর্ঘদিনের সতীর্থ ও ভাই ঝাং জাইককে ১৪-১২, ১১-৫, ১১-৪, ১১-৫ পয়েন্টে পরাজিত করে স্বর্ণ জয় করেন। ম্যাচ শেষে বাঁহাতি মা লং বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমি এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। সে কারণেই এই পদকটা আমার কাছে একটু ভিন্ন। জাইক ও আমি অনেকদিন ধরে একসঙ্গে খেলছি। আমরা একসঙ্গে অনুশীলন করি, আগে সে আমার থেকে ভাল ছিল, সেখান থেকেই আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি। স্বদেশী তারকা কি বো-বায়ের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে মেয়েদের ব্যক্তিগত আরচারিতে স্বর্ণপদক জিতেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার চাং হে জিন। ফাইনালে চ্যাং ৬-২ পয়েন্টে হারান জার্মানির লিসা উনরুহকে। এদিকে অলিম্পিকে আগের তিন আসরে কোন পদক না পাওয়া বারবারা এংলেডের রিও অলিম্পিকে পেয়েছেন অধরা পদক। মেয়েদের ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশন ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতেছেন জার্মানির এই শূটার। হাঁটু গেড়ে, উপুর হয়ে শুয়ে ও দাঁড়িয়ে রাইফেল চালিয়ে মোট ৪৫৮.৬ স্কোর করে সেরা হন ৩৩ বছর বয়সী এংলেডার। শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে মাত্র ০.২ কম স্কোর করে রৌপ্যপদক জয় করেন এবারই প্রথম অলিম্পিকে আসা চীনের ঝাং বিনবিন। ২০০৮ সালের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ঝাংয়ের স্বদেশী ডু লি জয় করেন ব্রোঞ্জপদক।
×