ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ধরলা সেতুর টোল

৩৪ লাখ টাকা বেশি দরের পরেও পঞ্চম দফা টেন্ডার!

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৩ আগস্ট ২০১৬

৩৪ লাখ টাকা বেশি দরের পরেও পঞ্চম দফা টেন্ডার!

রাজুমোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম ॥ সড়ক ও জনপথ বিভাগে ধরলা ব্রিজের টোলের টেন্ডারের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্বাহী প্রকৌশলী অদৃশ্য কারণে টোলের সর্বোচ্চ দরদাতাকে কাজের অনুমোদন না দিয়েই রাতারাতি আবারও পুনঃটেন্ডার আহ্বান করেছেন। বিশেষ গোষ্ঠীকে কাজ পাইয়ে দিতে এ তুঘলকি কারবার। এ নিয়ে কয়েক লাখ টাকা লেনদেনের খবর এখন বাতাসে উড়ছে। এটি এখন টক অব দ্য টাউন। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বরকত খুরশীদ আলম তার বিরুদ্বে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর জন্য পঞ্চমবারের মতো টেন্ডার আহ্বান করেছেন। আগামী ১৬ আগস্ট পুনঃটেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে আর দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে ১৭ আগস্ট। এ সংক্রান্ত টেন্ডার নোটিস তাড়াহুড়া করে অনলাইনে এবং বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ধরলা ব্রিজের টোল আদায়ের নিমিত্তে প্রতি বছর সড়ক ও জনপথ বিভাগ টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারাদার নিয়োগ করে। এবারও গত ৮ মে প্রথম টেন্ডার আহ্বান করা হয়। কোন দরপত্র জমা না পড়ায় আবারও গত ৮ জুন টেন্ডার আহ্বান করা হয়। কিন্ত এবারও কোন টেন্ডার না পড়ায় ৩০ জুন টেন্ডার আহ্বান করা হয়। কিন্তু কোন দরদাতা তাতে অংশগ্রহণ করেনি। এর পর চতুর্থবার গত ২৪ জুলাই টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এ টেন্ডারে লুৎফর রহমান বকসী, মনিরুজ্জামান, মোস্তাফিজার রহমান রাজু ও শাহজাহান মিয়া দরপত্র ক্রয় করেন। গত ৮ আগস্ট এসব দরপত্র দাখিল হয়। ওই দিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সড়ক ও জনপথ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী উপস্থিত টেন্ডারদাতাদের সামনে দরপত্র খোলেন। এতে মোস্তাফিজার রহমান রাজু এক কোটি ৮৩ লাখ টাকা, লুৎফর রহমান বকসী দ্বিতীয় দরদাতা এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, তৃতীয় দরদাতা মনিরুজাম্মান এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা দর প্রদান করেন। নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বরকত খুরশীদ আলম মোস্তাফিজার রহমান রাজুকে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ঘোষণা করেন। গত বছর সর্ব্বোচ্চ দর ছিল এক কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এবারের দর গতবারের চেয়ে ৩৪ লাখ টাকা বেশি। অথচ রাত সাড়ে ৯টার দিকে অদৃশ্য কারণে নির্বাহী প্রকৌশলী তার একক ক্ষমতাবলে টেন্ডারটি পঞ্চমবারের মতো ফের অনলাইনে দরপত্র আহ্বান করেন। এ দরপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ আগস্ট। এতে হতবাক হয়ে যান প্রথম দরদাতা মোস্তাফিজার রহমান রাজু। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বরকত খুরশীদ আলম জানান, আমি কোন অনিয়ম করিনি। সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর জন্য আমি পুনঃটেন্ডার আহ্বান করেছি। আগামী ২৪ আগস্ট বর্তমান ইজারদারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। তাই আগামী সাত দিনের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করব। আর তা না হলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে ধরলা সেতুর টোল আদায় করা হবে।
×