ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলায় ‘জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৩ আগস্ট ২০১৬

শিল্পকলায় ‘জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গীবাদী তৎপরতার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। দেশের উগ্রপন্থার আস্ফালন ও তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী চক্রের ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে এ আন্দোলনেই মুক্তির পথ খুঁজছেন দেশের শিক্ষাবিদ-সংস্কৃতিকর্মীরা। ধর্মের অপব্যাখ্যায় তরুণ প্রজন্মের এই অংশটি যখন মরণনেশায় উন্মুখ হয়ে উঠছে তখন একাডেমির পক্ষ থেকে দেশের প্রতিটি জেলায় এ কার্যক্রম শুরু করার উদ্যোগ নেয়া হয়। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে শুক্রবার দুপুরে ‘জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের অতিথি শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমরা সারা জীবন যেটা করার জন্য দাবি জানিয়েছিলাম, সরকার আজ তার উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের মধ্যে যে অনুভব ছিল, তা আজ দেশ ও রাষ্ট্র অনুভব করছে। পারলৌকিক চিন্তায় বিভোর তরুণ প্রজন্মের সেই অংশের মধ্যে ধর্মীয় বিভাজন ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছে গেছে বলেও মন্তব্য করেন জনপ্রিয় এই কথাসাহিত্যিক। কম বয়সী ছেলেগুলো যখন নিজেদের এবং দেশ ও সমাজকে নিয়ে চিন্তা করবে, তখন তারা ভাবছে, অন্য ধর্মাবলম্বীদের হত্যা করে তারা পরকালে বড় জায়গায় যাবে। আমার মাথায় এসব চিন্তাধারা ঢুকে না। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সাংস্কৃতিক আন্দোলনই হতে পারে সত্যিকারের সমাধান। সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে যুক্ত মানুষ হৃদয়ে শান্তি পায়, চলে যায় অন্য এক জগতে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শত বাউলদের জীবনধারা, ভাববাদের কথা উল্লেখ করে তাদের ওপর হামলা, নিপীড়নের তীব্র নিন্দা জানান তিনি। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমও বাউলদের ওপর অত্যাচার, নিপীড়নের নিন্দা জানান। মমতাজ বলেন, আজকের এই জঙ্গীবাদ এক দিনে কিংবা এক মাসে তৈরি হয়নি। পনেরো অগাস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে জঙ্গীবাদী শক্তিটি তিল তিল করে গড়ে উঠেছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে আমরা নাটক-গান-কবিতার বড় আসর করে মানুষকে বলব আমাদের কথা। আপনারা আয়োজন করুন, আমি আছি আপনাদের সঙ্গে। অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ, সংসদ সদস্য ও কবি কাজী রোজী, কবি মুহাম্মদ সামাদ, শাহজাদী আঞ্জুমান আরাসহ আরও অনেক কবি। অনুষ্ঠানে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বাউলরা। বৃন্দ পরিবেশনা ছিল ঢাকা সাংস্কৃতিক দলের।
×