ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সম্মেলনের তিন মাস পরও জাপার পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৩ আগস্ট ২০১৬

নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সম্মেলনের তিন মাস পরও জাপার পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি

রাজন ভট্টাচার্য ॥ কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর প্রায় তিন মাস কেটেছে। দীর্ঘ সময়েও ঘোষণা হয়নি বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকের আশঙ্কা, কমিটি দিতে বিলম্ব হওয়ায় ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা নাও হতে পারে। উড়ে এসে জুড়ে বসা অনেক নেতাই হয়ত ঠাঁই পাচ্ছেন নতুন কমিটিতে। তবে দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, নতুন নেতাদের সর্বোচ্চ পদ হলো সদস্য। এদিকে দলীয় সূত্রগুলো বলছে, রওশনপন্থীদের দলে রাখা না রাখা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা, কেন্দ্রীয় প্রায় সব নেতার বছরের পর বছর সংগঠনের চাঁদা বকেয়া থাকা ও এরশাদের ঘন ঘন বিদেশ সফর। তবে পদ-পদবি ঠিক রাখতে ইতোমধ্যে ৬০জন ছাড়া বাকি সবাই চাঁদা পরিশোধ করেছেন। চলতি বছরের ১৪মে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির অষ্টম কাউন্সিলের আয়োজন করা হয়। চার বছর পর সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। ১৮৮৬ সালের এক জানুয়ারি জাতীয় পার্টির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক সেনাপ্রধান এইচ এম এরশাদ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, আমৃত্যু দলের চেয়ারম্যান থাকতে চান তিনি। কথাও রেখেছেন। সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলনে নিজেই চেয়ারম্যান থেকেছেন। বলা হয়েছিল, গঠনতন্ত্র সংশোধন করে পার্টির প্রধানের ক্ষমতা বিন্যাস করা হবে। হয়েছে উল্টো। গঠনতন্ত্র সংশোধন হয়েছে ঠিক। কিন্তু ক্ষমতা বেড়েছে এরশাদের। অর্থাৎ দল পরিচালনায় সর্বময় ক্ষমতা এখনও তার হাতেই। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, পার্টির মধ্যে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে স্ত্রী রওশন এরশাদকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও ভাই জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের পদ দিয়েছেন। যদিও এ নিয়ে অনেক আগে থেকেই নিজেদের মধ্যে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল। সম্মেলনে পার্টির শীর্ষ চার পদের নাম ঘোষণা হয়। কিন্তু নেতাকর্মীদের দাবি ছিল সকল পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার। জবাবে এরশাদ বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে যোগ্যতা অনুযায়ী কমিটির সকল সদস্যের নাম ঘোষণা হবে। সম্মেলনের পর পর নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করে দলটি। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে আবেদনকারীদের ১৩ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত সাক্ষাতকার অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে ১৩ জুন খুলনা ও রংপুর বিভাগের আবেদনকারীদের সাক্ষাতকার। ১৪ জুন রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের সাক্ষাতকার। ১৫ জুন সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের সাক্ষাতকার, ১৬ জুন ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আবেদনকারীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হয়। পার্টি সূত্রগুলো বলছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে ৬শ’র বেশি আবেদন জমা পড়েছে; যা দলটির ইতিহাসে রেকর্ড। বিপরীতে পদ খালি ছিল মাত্র ৫০টি। তাই কাকে নেয়া হবে? এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে দলটি।
×