ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যাজুয়ালরা পে স্কেলের বকেয়া পাচ্ছে না, অশান্ত হয়ে উঠছে বিমান

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৩ আগস্ট ২০১৬

ক্যাজুয়ালরা পে স্কেলের বকেয়া পাচ্ছে না, অশান্ত হয়ে উঠছে বিমান

আজাদ সুলায়মান ॥ বিমানের নিম্ন আয়ের দৈনিক ভিত্তিক ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারীদের সদ্য ঘোষিত পে স্কেলের বকেয়া বেতন না দেয়ার সিদ্ধান্তে অশান্ত হয়ে উঠছে বিমান। অন্যান্য নিয়মিত সব শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যে বকেয়া বেতন ভাতাদি পরিশোধের হিসাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের বাইরে রেখেই বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে। বিমানের এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের খবরে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের মাঝে। বিমান সিবিএ সভাপতি মশিকুর রহমানকে ইতোমধ্যেই চাপে রাখার কথা জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা। যদিও মশিকুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেছেন, বিমানের এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার মতো নয়। এটা বরদাস্ত করার মতো নয়। যারা সবচেয়ে বেশি কাজ করে তারাই সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত ও শোষিত। যাদের বেতন এমনিতেই সর্বনিম্ন, তাদের বকেয়া বেতন দেয়া হবে না। আর যারা লাখ টাকার বেতন পান- তাদেরই বকেয়া পরিশোধ করা হবে এটা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটা অমানবিক ও অযৌক্তিক। বিমানের মতো একটা আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সে বেতন কাঠামোতে নিম্ন বেতনভুক্ত ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের নতুন পে স্কেলের সঙ্গে বকেয়া না পরিশোধ করার অর্থই বিমানকে আন্দোলনের মুখে ঠেলে দেয়া। যারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা সত্যিকার অর্থে বিমানের কল্যাণ চায় নাকি সুস্থ কর্মপরিবেশ বিনষ্ট করতে চায়- সেটাই এখন দেড় হাজার ক্যাজুয়াল শ্রমিকের প্রশ্ন। তবে আশা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। আলোচনা চলছে। জানতে চাইলে বিমান চেয়ারম্যান এয়ারমার্শাল ইনামুল বারী জনকণ্ঠকে বলেছেন ক্যাজুয়ালদের প্রতি আমার দরদ মোটেও কম নয়। ওদের দিতে পারলে আমার ভাল লাগত। কিন্তু আইনগত জটিলতায় তাদের বকেয়া পরিশোধ করার কোন সুযোগ নেই। তাদের ১০ দিন আর ৮৯ দিন পর পর নিয়োগ দেয়া হয়। এ কারণেই বকেয়া থাকার আইনগত ভিত্তি থাকে না। তিনি বলেন, ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের স্থায়ী করার জন্য আমিই ২০০৯ সালে পর্ষদের সদস্য থাকার সময়ে একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সেটা আর এগোয়নি। এখন আমাকেই কিছু একটা করতে হবে। ওদের এটা বুঝতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে। উল্লেখ্য, বিমানে সরকারী বেতন স্কেল কার্যকর করার ঘোষণা দেয়া হয় গত মাসে। এক বছর আগেই সরকারী কর্মচারীরা নতুন স্কেলে বেতন ভাতাদি পেলেও বিমানে তা কার্যকর করা হচ্ছিল না। বিমান পর্ষদ আর্থিক অবস্থা বিবেচনা ও নানা অজুহাতে নতুন স্কেল বাস্তবায়ন করতে টালবাহানা করছিল। এ অবস্থায় বর্তমান সিবিএ নতুন পে স্কেল কার্যকরের দাবিতে চাপ সৃষ্টি করে এবং আন্দোলনের হুমকি দিলে পর্ষদ শেষ পর্যন্ত এ দাবি মেনে নেয়। নতুন স্কেলের পাশাপাশি বিগত এক বছরের বকেয়া পরিশোধেরও ঘোষণা দেয়। এতে বিমানের প্রায় চার হাজার জনবলের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। অর্থ শাখা জানায়, নতুন স্কেলে বিমানের চার হাজার জনবলের মাসিক বেতন এখন দাঁড়াচ্ছে ২৪ কোটি টাকা। গত বছরের জুলাই থেকে বকেয়া পরিশোধের জন্য লাগছে অতিরিক্ত ২০ কোটি টাকা। ক্যাজুয়াল দেড় হাজার শ্রমিকের এক বছরের বকেয়া বাবদ দরকার মাত্র এক কোটি টাকারও কম। তারপরও এটা দেয়া হচ্ছে না।
×