ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জঙ্গীবাদের নামে সারাদেশে নির্যাতন চালাচ্ছে সরকার ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৩ আগস্ট ২০১৬

জঙ্গীবাদের নামে সারাদেশে নির্যাতন চালাচ্ছে সরকার ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খালেদা জিয়ার অন্তর থেকে জাতীয় ঐক্যের ডাক নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বিএনপির চেয়ারপার্সন হিসেবে অন্তর থেকেই জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছাও তার নেই। তিনি সবাইকে নিয়ে বসতে চান, কথা বলতে চান। সঙ্কট উত্তরণে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চান। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্র্স ইউনিটি মিলনায়তনে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি) আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন। এনডিপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাংবাদিক আনোয়ার জাহিদের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। চলমান সঙ্কট উত্তরণে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কোন বিকল্প নেই দাবি করে ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া জাতীয় নেতার দায়িত্ববোধ থেকেই জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ কে ক্ষমতায় থাকবে কে থাকবে না তা নয়, জাতির স্বার্থেই আমাদের ঐক্যের দরকার। জাতীয় স্বার্থেই যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন এ কথা সরকারের উপলব্ধি করা দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আওয়ামী লীগ কোনদিন জাতিকে রক্ষার ডাকে সাড়া দেয় না। বরং উপেক্ষা করে এবং জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করার চেষ্টা করে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার জঙ্গীবাদের বিষয়টিকে ক্ষমতায় টিকে থাকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সারাদেশে অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য যেভাবেই হোক ক্ষমতায় টিকে থাকা। আজ যা চলছে তা দেশের জন্য ভয়াবহ অশনি সঙ্কেত। আমাদের দেশ কি আফগানিস্তানে পরিণত হবে। আমাদের দেশে কি পাকিস্তানের মতোই মুহুর্মুহু বোমায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হবে? অথবা সিরিয়ার মতো লাখ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হয়ে চলে যাবে? এটা আমাদের গভীরভাবে ভাবা উচিত। তিনি বলেন, দেশে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত করার মধ্য দিয়েই সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। ফখরুল বলেন, দেশে জঙ্গীবাদ দমন করার নামে ১৬ হাজার গ্রেফতার করা হলো। তারাই বলছে এর মধ্যে ১৮৯ জন জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িত। তাহলে বাকিরা কারা? টিভি ও পত্রপত্রিকা খুললে আজ প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে বন্দুকযুদ্ধে কেউ না কেউ নিহত হচ্ছে। যাদের জঙ্গী হিসেবে ধরা হচ্ছে তারা আদালতে মুখ খুলছে না। তারা পরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হচ্ছে। এভাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সন্ত্রাস চলছে। দেশে কোন মানুষ নিরাপদ নয়। কোন মানুষ ভবিষ্যত নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছে না। মানুষ আজ আতঙ্কিত। সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আজকে দেশে জঙ্গীবাদ বলুন আর সন্ত্রাসবাদ বলুন, সবকিছুর মূলে দেশে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি। গণতন্ত্র নেই বলেই আজকে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও হিংস্রতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মর্তুজার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেলে রহমান গানি, এনপিপি সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ডিএলএ সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমদ মনি, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমাতুল্লাহ, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর হোসেন ঈসা, সাংবাদিক ও কলামিস্ট মোবায়দুর রহমান প্রমুখ। কোকোর জন্মদিনে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন ॥ শুক্রবার ছিল বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৪৭তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতাকর্মীরা দুপুরে বনানী কবরস্থানে গিয়ে কোকোর কবর জিয়ারত করেন। এছাড়া বাদ আছর নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো কোরানখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
×