ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে ২২ ভাগ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৩ আগস্ট ২০১৬

সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে ২২ ভাগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর দেশজুড়ে যে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল দেরিতে হলেও তার সুফল মিলেছে। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের অব্যাহত চাপ এবং গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ভূমিকার কারণে দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে হ্রাস পেয়েছে। এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের হার গত বছরের তুলনায় এ বছর যথাক্রমে ৪৪ ও ২৬ ভাগ পর্যন্ত কমেছে। একইভাবে দুর্ঘটনার হার কমেছে ২২ভাগ। ২০১৫ সালে গড়ে প্রতিমাসে ৫৬৮ জন নিহত হয়েছেন, চলতি বছর এই সংখ্যা নেমে দাঁড়িয়েছে ২৯৭ জনে। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। ২০টি জাতীয় দৈনিক, আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থা এবং ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয় বলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার জোকা নামক স্থানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ এবং এটিএন নিউজের প্রধান সম্পাদক আশফাক মুনীর (মিশুক মুনীর)। আগামীকাল শনিবার তাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। এনসিপিএসআরআরের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক দশকে ৪৪ হাজার ৭১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ হাজার ৬২৭ জন নিহত ও ৮২ হাজার ১৫২ জন আহত হয়েছেন। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ২০১৫ সালে ৪ হাজার ৫৯২টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হন যথাক্রমে ৬ হাজার ৮২৩ ও ১৪ হাজার ২৬ জন। এই হিসাবে গত বছর গড়ে প্রতিমাসে ৫৬৮ জন নিহত এবং ১ হাজার ১৬৯ জন আহত হয়েছেন। আর প্রতিমাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৮২টি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে সারা দেশে ২ হাজার ৮২টি দুর্ঘটনায় ৩১১ শিশু ও ৩০১ নারীসহ অন্তত ২ হাজার ২৪৫ জন নিহত এবং ৬হাজার ৩১ জন আহত হয়েছেন। এই হিসাবে এ বছর দুর্ঘটনা, নিহত ও আহতের সংখ্যা গড়ে প্রতিমাসে যথাক্রমে ২৯৭, ৩২০ ও ৮৬২। অর্থাৎ ২০১৫ সালের তুলনায় এ বছর দুর্ঘটনা, নিহত ও আহতের হার যথাক্রমে ২২, ৪৪ ও ২৬ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে জানান, তাদের পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসের জন্য পাঁচটি প্রধান কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বছরজুড়ে গঠনমূলক সংবাদ প্রচার, দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে সামাজিক সংগঠনগুলোর ধারাবাহিক কর্মসূচী পালন, বছরের অধিকাংশ কর্মদিবসে রাজপথে সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর পদচারণা, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও জাল ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা ও পুলিশের দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকিপূর্ণ অনেক বাঁক চিহ্নিত করে সতর্কীকরণ সংকেত স্থাপন ও সড়ক সংস্কার।
×