ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হাতিটি সুস্থ হওয়ার পথে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৩ আগস্ট ২০১৬

হাতিটি সুস্থ  হওয়ার  পথে

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ১২ আগস্ট ॥ ভারতীয় বন্য হাতিটি এখন প্রায় সুস্থ হওয়ার পথে। দীর্ঘ চেষ্টার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে হাতিটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বন বিভাগ। এরপর থেকেই হাতিটিকে সুস্থ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বন বিভাগ। ২৮ মে ভারতের অসম রাজ্যের গভীর জঙ্গল থেকে বন্যার পানিতে ভেসে প্রথমে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলা নয়াচরের ব্রহ্মপুত্র নদের কিনারে আসে এই বন্য হাতিটি। সেখান থেকেই হাতিটি উদ্ধারে নামে বন বিভাগের একটি দল। বন বিভাগের সাবেক উপ-প্রধান বনরক্ষক ড. তপন কুমার দেব জানান, হাতিটি কুড়িগ্রাম থেকে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন চর ঘুরে ২৭ জুলাই জামালপুরের সরিষাবাড়ি আসার পর থেকে জোরালো উদ্ধার অভিযানে নামে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তারা হাতিটি উদ্ধারে দুই বার অজ্ঞান করার ইঞ্জেকশন ছুঁড়লেও উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হাতিটি অবস্থান নেয় উপজেলার কয়ড়া গ্রামে একটি মাঠে। এই সুযোগে উদ্ধারকারী দলের ডাঃ আবু সাইদ সুট করে হাতিটিকে। এ সময় হাতিটি ছোটাছুটি করতে গিয়ে একটি ডোবায় পড়ে যায়। এতে বিপাকে পড়ে উদ্ধারকারী দল। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ডোবা থেকে হাতিটি উদ্ধার করায় প্রাণে বেঁচে যায়। হাতিটি উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে হাজার হাজার উৎসুক মানুষ তা দেখতে ছুটে আসে সেখানে। মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। স্থানীয়রা বলেন, ১৫ দিন ধরে হাতির আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ। হাতিটি উদ্ধারে স্বস্তি ফিরে পেয়েছে তারা। বন বিভাগের সাবেক উপ-প্রধান বনরক্ষক ড. তপন কুমার দেব বলেন, হাতিটি অজ্ঞান করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে। যেখানে হাতিটি আছে সেখান থেকে নেয়ার কোন রাস্তা নেই এবং তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ঘা দেখা দিয়েছে। তাকে চিকিৎসা করে এখান থেকে নিতে সময় লাগবে। এই জায়গা থেকে নেয়ার পর বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে রাখা হবে। পরে উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যেহেতু হাতিটি পুরুষ। তাকে বনে ছেড়ে দেয়া হলেও দল তাকে গ্রহণ করবে না। সে আবার লোকালয়ে ফিরে আসবে এবং মানুষের ক্ষতি করবে। সেজন্য তাকে সাফারী পার্কেই পোষা হাতি হিসেবে রাখতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাতিটির নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের হাতির কাছে মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া বন বিভাগের উদ্ধারকারী দলকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
×