ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

শ্রাবণ সন্ধ্যায় চিত্রশালায় মরমী গানের আসর

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১২ আগস্ট ২০১৬

শ্রাবণ সন্ধ্যায় চিত্রশালায় মরমী গানের আসর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শ্রাবণের সন্ধ্যায় ভেসে বেড়াল লোকগানের সুর। বেজে উঠল বাউলের একতারা ও দোতারা। ছোট ছোট দলে শিষ্যদের নিয়ে বসেছিলেন সাধকরা। বৃত্তাকার হয়ে বসে চলল গানের পরিবেশনা। আর শেকড়ের সেই গানের টানে সন্ধ্যার অবসরে অনেকেই জড়ো হয়েছিলেন এ সঙ্গীতাসরে। মরমী গানের বাণী ধরে উঠে এলো লোকজ বাংলার যাপিত জীবন। দেশের নানা প্রান্তের বাউলসাধক ও তাঁদের শিষ্যরা উজার করে গাইলেন সোঁদা মাটির গন্ধমাখা গানগুলো। ছড়িয়ে দিলেন শান্তি ও সাম্যের বার্তাবহ ফকির লালনের সুরসুধা। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, বগুড়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় দেড়শ’ বাউল অংশ নিচ্ছেন এ আয়োজনে। মঙ্গলবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় অনুষ্ঠিত হলো ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে’ শীর্ষক এ সঙ্গীতাসর। বঙ্গবন্ধুর ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ ছিল এই সঙ্গীতানুষ্ঠান। আসরের ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’ শিরোনামের গানটি পরিবেশন করেন ফকির খোদা বক্সের ছেলে লতিফ শাহ। লালন ফকিরের ভাবশিষ্যরা তাঁর গান গেয়ে শ্রোতাদের মজালেন লালনের সুরে। এছাড়াও বাউল গান শোনান শিল্পী ফকির নইর সাহ্, ফকির হৃদয় সাহা এবং বাউলগুরু পাগলা বাবলুসহ অনেকে। উদ্বোধনী পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও ফকির হৃদয় সাধু। বাউল সাধনার শ্রেষ্ঠ ভাষ্যকার লালন। মানুষের প্রচলিত বিশ্বাসকে ভেঙ্গে দিয়ে এই বাউলসাধক দেখিয়েছেন সহজিয়া ঈশ^র ভজনার পথ। উচ্চবর্ণ-নিম্নবর্ণ, জাত-পাতের উর্ধে উঠে মানুষকে মূল্য দিয়েছেন। উগ্রপন্থার আগ্রাসনের অস্থির সময়ে এ গানের আসরে তাই বারবার উচ্চারিত হলো মানবতার মর্মবাণী। গানে গানের খোঁজা হলো শান্তির পথরেখা। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় একই স্থানে পরিবেশিত হবে ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ শীর্ষক লোকগানের আসর। আগামীকাল শনিবার একই সময়ে ‘সত্যবল সুপথে চল ওরে আমার মন’ শীর্ষক সঙ্গীতানুষ্ঠান। এছাড়া শনিবার সকাল ১০টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বাউল সঙ্গীত সংরক্ষণ বিষয়ক আলোচনা। আবৃত্তিসন্ধ্যা ‘শারদ সাজে কাব্য প্রেমে’ ॥ চলছে বর্ষাঋতুর শেষ বেলা। শিউলি ও কাশফুলের মিতালী গড়ার আভাস নিয়ে আসছে শরৎ। নীলাকাশে দৃশ্যমান হবে সাদা মেঘের ভেলা। নদীর ধারে দুলে উঠবে কাশফুল। ভোরের বাতাসে ছড়াবে শিউলি ফুলের সুবাস। এভাবেই প্রকৃতির বুকে এসে ধরা দেবে শরতের ছোঁয়া। তাই তো আগমনের আগেই শরতকে জানানো হলো স্বাগত। কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে বন্দনা করা হলো এই সুন্দরতম ঋতুর। অনুষ্ঠিত হলো ‘শারদ সাজে কাব্য প্রেমে’ শীর্ষক আবৃত্তিসন্ধ্যা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আবৃত্তি সংগঠন ত্রিলোক বাচিক পাঠশালার। ত্রিলোক বাচিক পাঠশালার সভাপতি আবৃত্তিশিল্পী মাসুম আজিজুল বাসারের পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে প্রায় ২৫ জন আবৃত্তিশিল্পী একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন। নারী ও সাহিত্য শীর্ষক আলোচনাসভা ॥ শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে যেমন এগিয়ে চলেছেন দেশের নারীরা তেমনিভাবে সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনেও তারা রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাদের এ অবস্থান ধরে রাখতে হবে নিজেদের জন্য ও সাহিত্যের জন্য। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘নারী ও সাহিত্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তার এ কথা বলেন। বিশ^বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত আলোচক হিসেবে অংশ নেন ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজী ও মানবিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. ফিরদৌস আজিম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. পারভীন হাসান। সভার প্রশ্নোত্তর পর্বে বিশ^বিদ্যালয়ের সোসিওলজি এ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মালেকা বেগম আলোচ্য বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংযোজন করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজী ও আধুনিক ভাষা বিভাগের চেয়ারপার্সন আবদুস সেলিম। অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম তাঁর বক্তব্যে সাহিত্যে নারীর অবদান ও নারী-পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গিগত নানা বিষয় তুলে ধরেন। বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. পারভীন হাসান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক আজিমের সাহিত্য ও অধ্যাপনা জীবন সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত করেন। সভায় অন্যদের মধ্যে বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
×