ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অটিজম মোকাবেলায় ১৬ সাল থেকে পঞ্চবার্ষিকী কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে ॥ সায়মা হোসেন

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১২ আগস্ট ২০১৬

অটিজম মোকাবেলায় ১৬ সাল থেকে পঞ্চবার্ষিকী কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে ॥ সায়মা হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অটিজম দূর করতে পাঁচ বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পায় ৪৫ লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন অটিজম বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সভাপতি সায়মা ওয়াজেদ হোসেন। তিনি বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যারা অটিজম মোকাবেলায় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই পরিকল্পনা মাধ্যমে অটিজম মোকাবেলায় কতটুকু সফলতা অর্জিত হয় তা আমাদের দেখতে হবে। এটির সফল বাস্তবায়ন হলে আমরা কী করতে পারি তা পৃথিবীকে দেখানো যাবে। কর্মপরিকল্পনার মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৬-২০২১ সাল পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডার ২০১৬-২০২১’ শীর্ষক সেমিনারে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদা মালেক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ ইকবাল আর্সলান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ দীন মোঃ নূরুল হক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের। অটিজম মোকাবেলায় এসব লক্ষ্যের মধ্যে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা, পরামর্শ, পরিবারে অটিস্টিক শিশুর স্বাস্থ্য, প্রশিক্ষণ, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা, কমিউনিটি সহযোগিতা, অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়নে সুশীল সমাজ ও সরকারী কর্মকর্তাদের পৃথক ভূমিকা অন্যতম। সায়মা হোসেন বলেন, পরিবারে কোন শিশু অটিস্টিক হলে তার সারাজীবনের জন্য পরিবারের একটি পরিকল্পনা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সমাজের সবাইকে তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন, অটিস্টিক শিশুর মা তার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি বুঝতে পারে। এ কারণে শিশুর বিষয়ে মাকে সচেতন করে তুলতে হবে। পরিবারকে প্রশিক্ষণের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অটিস্টিক শিশুর জন্মের পর থেকে তার বেড়ে ওঠা, প্রশিক্ষণ, কর্মক্ষেত্রে যোগদানের মতো বিষয়গুলো পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অটিজম সংক্রান্ত জরিপ কাজ কঠিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে জরিপ একটি গুরুত্বপূর্র্ণ বিষয়। এজন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিষয়টি মানবিক বিবেচনা করে সবাই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সায়মা। দিনাজপুরে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে জঙ্গীবাদ বিরোধী সমাবেশের কারণে প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তার বক্তব্য পাঠ করে শোনানো হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, দেশে বিশাল জনগোষ্ঠী অটিজম সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন। সরকারের একার পক্ষে আক্রান্ত সবার সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এজন্য সুনির্দিষ্ট ও সাজানো কর্মপরিকল্পনা পথ দেখাবে। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে পারলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা সেবা পাবে। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হোন। তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ান, তারাও আমাদের সমাজের অংশ, আমাদের সম্পদ। তাদের কোন না কোন বিষয়ে সুপ্ত প্রতিভা থাকে। তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দিলে তারাও সমাজ ও জাতির জন্য অনেক বড় বড় কাজ করতে পারে। অটিস্টিক শিশুরা সমাজের বোঝা হতে পারে না। তাদের অবহেলা করা যাবে না। তাদের সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। অধ্যাপক ডাঃ ইকবাল আর্সলান বলেন, অটিস্টিক শিশুদের সমাজের মূল ধারায় নিয়ে আসতে তাদের শিক্ষিত করে তুলতে হবে। এজন্য সরকার প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা গ্রহণ করেছে। অটিস্টিকদের সার্বিক উন্নয়নে চিকিৎসক সমাজও কাজ করছে বলে জানান বিএমএ মহাসচিব।
×