ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শোকের মাস

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১১ আগস্ট ২০১৬

শোকের মাস

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বাঙালী জাতির বেদনাবিধুর শোকের মাস আগস্টের আজ এগারোতম দিন। সেই ভয়াল ও নিষ্ঠুরতম রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট যতই ঘনিয়ে আসছে অসংখ্য শোকের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দোসর এবং জঙ্গী-সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের অঙ্গীকার ততই শানিত হচ্ছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর অবিসংবাদিত নেতা। তাঁর অমোঘ গর্জনে, নেতৃত্বে, দর্শনে, অঙ্গুলী হেলনে কোটি কোটি বাঙালীই একদিন নেমেছিল পথে, আন্দোলনে, সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামে। সুশিক্ষিত পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যার যা আছে তাই নিয়ে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়েছিল। ত্রিশ লাখ মানুষ হাসতে হাসতে জীবন দিয়ে ছিনিয়ে এনেছিল মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। একদিনে আসেনি বাঙালীর হাজার বছরের এই লালিত স্বপ্নের বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বাঙালীর অধিকার আদায়ের সব সংগ্রামেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রথম সারিতে, অনন্য ভূমিকায়। তাঁর ডাকেই সূচিত হয়েছিল ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর বৈপ্লবিক নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালীর কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। আগস্ট এলেই তাই কাঁদে বাঙালী। বাঙালীর মন খারাপের মাস এটি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিটি বাঙালীর হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু চিরঞ্জীব। এপ্রান্ত থেকে সেপ্রান্ত , এ ঘর থেকে সে ঘর; সবখানে, সর্বত্র, সমানভাবে জুড়ে রয়েছেন তিনি আজও। শাহাদাতের ৪১ বছর পরও, আজও, আলোয়-উদ্ভাসনে, সঙ্কটে ও সম্ভাবনায়, বাঙালীর চিরমানসপটে চিরসমুজ্জ্বল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। কারণ, তিনিই তো বাঙালীর শতসহস্র বছরের অবিস্মরণীয় এক রাজনৈতিক নেতা, বাঙালী জাতির পিতা। শত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ঘৃণিত খুনীদের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। এখনও বেশ ক’জন মৃত্যুদ-প্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর খুনী বিদেশে পালিয়ে থেকে ষড়যন্ত্র করছে। তাই এবারের জাতীয় শোক দিবসের প্রতিটি অনুষ্ঠানেই সোচ্চার দাবিÑদ্রুত খুনীদের ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকরের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হোক। ব্যক্তি মুজিব নয়, ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাকেই হত্যার অপচেষ্টা হয়েছে- শিল্পমন্ত্রী আমু ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, পঁচাত্তরের পনেরো আগস্ট ব্যক্তি মুজিবকে নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। এ হত্যাকা-ের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে পাকিস্তানের কলোনি হিসেবে ব্যবহার করা। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি তারাই দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীর সহায়তায় পনেরো আগস্টের নৃশংস হত্যাকা- ঘটিয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু আজ এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর বিসিআইসি মিলনায়তনে শিল্প মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
×