ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা

ভোলায় ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১১ আগস্ট ২০১৬

ভোলায় ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ১০ আগস্ট ॥ ভোলা-বরিশাল ও ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি পারাপারে বাড়তি ভাড়া আদায়সহ বিভিন্ন নামে চাঁদাবাজি চলছে। বাসট্রাক লরি মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় চাঁদাবাজ চক্রের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলছে। বিশেষ করে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট মেঘনায় বিলীন হয়ে যাওয়ায় ভেদুরিয়া ঘাটই একমাত্র ভোলা-বরিশাল ও ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের একমাত্র ফেরিঘাট হওয়াতে সাধারণ মানুষের হয়রানির মাত্র কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। এসব হয়রানির প্রতিবাদে কিছু দিন আগে ব বাস শ্রমিকরা ফেরিঘাটে হামলা চালায় এবং বিআইডব্লিউটিসি অফিসে হামলা পর্যন্ত চালায়। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম অঞ্চলের যোগাযোগের সহজ মাধ্যম হচ্ছে ভোলা। কম সময় লাগার কারণে বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুট দিয়ে ২১ জেলার প্রতিদিন কয়েকশ বাসট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। এজন্য তাদের পারাপার হতে হয় ভোলার ভেদুরিয়া-লাহারহাট ও ভেদুরিয়া মজু চৌধুরীরহাট ফেরি। ফেরি পারাপার হতে যানবাহন চালকদের বাড়তি টাকা দেয়াসহ বিভিন্ন খাতে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে অসদাচরণ আর বিড়ম্বনার শিকার হন চালকরা। কোন কোন সময় দিনের পর দিন ঘাটে পড়ে থাকতে হয়। বিড়ম্বনা আর হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে বাধ্য হয়ে তাদের চাঁদা দিতে হয়। ড্রাইভাররা জানান, একটি প্রাইভেটকার ভোলা ভেদুরিয়া-লাহারহাট ফেরিতে পার হতে ৬১৫ টাকা রশিদে লেখা থাকলেও আদায় করা হচ্ছে ৮৮০ টাকা। তা ছাড়াও লাইনের জন্য ৫০ টাকা, টোল পাকিং ১০০ টাকা, শ্রমিক ইউনিয়নের জন্য ২০ টাকাসহ বিভিন্ন খাতে তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। গাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাক ভেদে ভাড়া ও চাঁদার পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। আর দাবিকৃত চাঁদা না দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি চালকদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাটে বিআইডব্লিউটিসির ভাড়া আদায়ের একটি তালিকা প্রকাশ্যে প্রদর্শনের কথা থাকলেও তা ভেদুরিয়াঘাটের কাউন্টারের ভেতরে রাখা হয়েছে। সাধারণ মানুষ জানতেই পারছে না কত টাকার ভাড়া কত টাকা বাড়তি নিচ্ছে। চাঁদা ও বাড়তি ভাড়া আদায়ের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা জানিয়েছে উর্ধতন ব্যক্তিদের নির্দেশে তারা চাঁদা নিচ্ছেন। তবে বাড়তি ভাড়া আদায়ের সঙ্গে জড়িত বিআইডব্লিউটিসি টার্মিনাল সহকারী জহিরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, সিনিয়র টার্মিনাল সুপার মোয়াজ্জেম হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ইনচার্জ কেউই কথা বলতে রাজি হয়নি। বরং তারা কাউন্টার বন্ধ করে এলাকা ত্যাগ করে। এ বিষয়ে যাতে সাংবাদিকরা রিপোর্ট না করে তা নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ম্যানেজের চেষ্টা চালায়। বিআইডব্লিউটিসির ভোলার ফেরির ব্যবস্থাপক আবু আলম হাওলাদার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে তার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অন্যদিকে ভোলা থানার ওসি মীর খায়রুল কবির চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করে বলেন, ফেরি ঘাটে ২টি শ্রমিক ইউনিয়নের গ্রুপ রয়েছে। চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে তারা ব্যবস্থা নিবেন।
×