ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ বাংলার বাউল

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ১১ আগস্ট ২০১৬

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ বাংলার বাউল

বাংলার মাটি ও মানুষের সঙ্গে একেবারে মিশে যাওয়া একটি গোষ্ঠী হলো বাউল। যা একটি বিশেষ লোকাচার ও দর্শন। এর সৃষ্টিও এই মাটিতে। বাউল গান যেমন জীবন দর্শনে সম্পৃক্ত তেমনি সুরসমৃদ্ধ। বাউলদের জীবন অত্যন্ত সাদামাটা ও কৃচ্ছ্রসাধনার। একতারা বাজিয়ে গান গেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোই তাদের অভ্যাস। দারুণ ছন্দের মাধ্যমে তাত্ত্বিক বাক্যের সুডৌল বিন্যাসে গান বাঁধেন। সে গানে থাকে জীবন ও আধ্যাত্মিকতার অবিবার্য বাক্য। এ সঙ্গীতের যাত্রা ঠিক কবে থেকে তা বলা মুশকিল। তবু বাঙালীর হাজার বছরের ঐতিহ্যে বাউল সঙ্গীত যে স্বতন্ত্রধারা তা পণ্ডিতরা মানেন। ২০০৫ সালে ইউনেস্কো বিশ্বের মৌখিক ও দৃশ্যমান ঐতিহ্যসমূহের মধ্যে বাউল গানকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই বাউলদের জীবন আজ সঙ্কটাপন্ন আমার বাংলায়। আজ একটি স্বার্থান্বেষী মহল ধর্মের নামে উঠতি বয়সী কিছু যুবককে মগজধোলাই করে বিপথগামী করে তুলছে। তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে বাউল মতবাদ ধর্মে ‘বেদাদ’। তাদের দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করা ইমানি দায়িত্ব। উঠতি বয়সী ওই সব যুবক স্বার্থবাদী মহলের সুকৌশল প্রশিক্ষণে প্রভাবিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে তাদের উপর। হামলা চালাচ্ছে বাউলদের আখড়ায়। দেশে যেমন মুক্তচিন্তার মানুষ আছেন হুমকির মুখে তেমনি আছেন বাউলেরা। এখান থেকে উত্তরণের জন্য দরকার সরকারকে আরও কঠোর হওয়া। দরকার শুধু জঙ্গী নয় তাদের পেছনের শক্তিকে খুঁজে বের করা এবং বাউলদের নিরাপত্তা দেয়া। বাউলদের নিরাপত্তা মানে বাঙালী সংস্কৃতির নিরাপত্তা। যারা সোনার বাংলার কোমলমতি মগজধোলাই করে জান্নাতের লোভ দেখিয়ে নামিয়ে দিচ্ছে বিপথে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দড়াটানা, যশোর থেকে
×