ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মূল সমস্যা বিজয়সরণি মোড় সিগন্যাল ;###;সড়কের পরিধি কম, বাড়ছে গাড়ির চাপ ;###;দুটি পাম্প ও একটি ওভারব্রিজের কারণে চার লেনের রাস্তা হয়েছে তিন লেন ;###;গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ভিআইপি প্রটোকল বড় সমস্যা ;###;উল্টোপথে গাড়ি চলা ও যত্রতত্র রাস্তা পারাপারে যানজট বাড়ছ

ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফার্মগেট আসতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা ॥ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে অহেতুক যানজট

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১০ আগস্ট ২০১৬

ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফার্মগেট আসতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা ॥ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে অহেতুক যানজট

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ জাহাঙ্গীর গেট থেকে ফার্মগেটসহ আশপাশের রাস্তায় ঘন-ঘন সিগন্যালের কারণে পুরো এলাকার যানজট এখন মাত্রা ছাড়িয়েছে। ফলে পাঁচ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিতে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটিতে বেশিরভাগ সময় এরকম ভোগান্তি থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রী থেকে শুরু করে পরিবহন চালকদের সবাই। গাড়ি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দিন দিন যানজট ও দুর্ভোগ বাড়ছে সমানতালে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, বিজয় সরণি ট্রাফিক সিগন্যাল প্রতিটি স্বতন্ত্র। অর্থাৎ আলাদা আলাদা করে চারবার সিগন্যাল ছাড়তে হয়। এতে অন্য সিগন্যালগুলোতে বাড়তে থাকে গাড়ির সারি। যাত্রীরা বলছেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফার্মগেট আসতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। অথচ ফার্মগেট থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত প্রায় সম-পরিমাণ রাস্তা অতিক্রম করতে সময় লাগে সর্বোচ্চ তিন থেকে পাঁচ মিনিট। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এই সমস্যাকে যানজট নয়, বলা হচ্ছ গাড়ি জট বা সিগন্যাল জট। ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, এই এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ভিআইপি প্রটোকল, রাস্তার স্বল্পতা, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের উল্টো পথে গাড়ি চালানো, যত্রতত্র রাস্তা পারাপার, অপ্রয়োজনীয় পেট্রোল পাম্পই যানজটের মূল কারণ। সঙ্কট সমাধানে উত্তর-দক্ষিণমুখী রাস্তায় ওভারপাস নির্মাণ, বিজয় সরণি মোড়, কাওরান বাজারে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বলছেন, ওভারপাস নির্মাণ হলে ক্যান্টনমেন্ট থেকে জাহাঙ্গীর গেট, বিজয় সরণি ওভারপাস, মখাখালী ফ্লাইওভারসহ আশপাশের সকল রাস্তা যানজটমুক্ত হবে। বিজয় সরণি মোড় ॥ ক্যান্টনমেন্ট, মহাখালী, লাভ রোড কিংবা আগারগাঁও থেকে আসা গাড়ি চলাচলে মূল সমস্যা হলো বিজয় সরণি চার রাস্তার সিগন্যাল। এই পয়েন্টে প্রতিটি গাড়িতে আধাঘণ্টা থেকে ৪০ মিনিট পর্যন্ত আটকে থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দিন দিন এই এলাকায় দুর্ভোগের মাত্রা বাড়ছে। যাত্রীরা বলছেন, সকালে ও বিকেলে সবচেয়ে বেশি সময় সিগন্যালের অপেক্ষায় থাকতে হয়। এমন হয় দীর্ঘ সিগন্যালের কারণে সময়মতো অফিসেও পৌঁছানো সম্ভব হয় না। বিজয় সরণি ওভারপাস জুড়েই থাকে গাড়ির জটলা। অন্যদিকে চন্দ্রিমা উদ্যান সিগন্যাল, জাহাঙ্গীর গেটসহ ফার্মগেট পর্যন্ত গাড়ির জটলা লেগেই থাকে। যাত্রীদের অভিযোগ উত্তর-দক্ষিণমুখী সিগন্যাল চার মিনিট ছাড়া হলে পূর্ব-পশ্চিমমুখী সিগন্যাল ছাড়া হয় সর্বোচ্চ এক মিনিট। এই পয়েন্টে যানজটের নেপথ্যে তিন ধরনের সমস্যা পাওয়া গেছে। একটি হলো বিজয় সরণি মোড়ের প্রতিটি সিগন্যাল পৃথক পৃথকভাবে ছাড়তে হয়। অর্থাৎ এই পয়েন্টে পূর্ব-পশ্চিম বা উত্তর-দক্ষিণ অর্থাৎ অন্য পয়েন্টের মতো একযোগে দুটি সিগন্যাল ছাড়ার কোন ব্যবস্থা নেই। দ্বিতীয় কারণ হলো, হলি ফ্যামেলি হাসপাতাল থেকে সাতরাস্তা পর্যন্ত উড়াল সড়ক উদ্বোধনের পর লাভরোড হয়ে বিজয় সরণি ওভারপাস দিয়ে মিরপুরমুখী যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে ১৫ মিনিট পর্যন্ত সিগন্যাল ছাড়ার চাহিদা থাকলেও সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট ছাড়া যায়। এতে অনেক সময় পুরো ওভারপাস জুড়ে গাড়ির জটলা হয়। অন্য একটি সমস্যা হলো, সিগন্যালের একাংশে দুটি পাম্প ও অপরাংশের সামনে আরেকটি ওভারব্রিজ করা হয়েছে। এতে সড়কের দুই অংশে একলেন করে রাস্তা কমেছে। পাশাপাশি অপ্রশস্ত সড়ক, ভিআইপি ও ভিভিআইপি প্রটোকল, বিজয় সরণি মোড়ে ওভারব্রিজ না থাকায় রাস্তা দিয়ে অবাধে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের কারণেও গাড়ি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। দীর্ঘ সিগন্যাল থাকলে উল্টো পথে সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের গাড়ি চলাচলের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এতেও অপ্রত্যাশিত যানজটের অভিযোগ পরিবহন চালকদের অনেকের। পুলিশ বলছে, এই সিগন্যালের একপাশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনা রয়েছে। সংসদ ভবন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, সংসদ সদস্যদের বাস ভবন, নভো থিয়েটার, খামারবাড়ি, সামরিক জাদুঘরসহ বেশ কিছু স্থাপনা। এসব স্থাপনায় রাত-দিন ভিআইপিদের আনাগোনা। ফলে ভিআইপি সড়কগুলো ফ্রি রাখতে গিয়ে অন্য সড়কগুলোতে গাড়ির চাপ বাড়ে। এতে দুর্ভোগ হয়। সরেজমিন গিয়ে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পার হওয়ার আগেই চোখে পড়ে প্রাইভেটকারের দীর্ঘ সারি। বিআরটিএ কার্যালয় ঘেঁষে লেনটি ঠেকেছে ‘ট্রাস্ট ফিলিং এ্যান্ড সিএনজি স্টেশন পর্যন্ত’। এ পর্যায়ে চার লেনের রাস্তা তিন লেন। দুটি স্টেশনের জন্য একটি লেন পৃথক করা হয়েছে। ফলে গাড়ি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত ট্রাফিক কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, একটি লেন সব সময় সিএনজি স্টেশনের জন্য বন্ধ রাখতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এ দুটি স্টেশন না রাখার প্রস্তাব পুলিশের। ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজয় সরণি পয়েন্টের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জনকণ্ঠ’কে বলেন, চলাচলের সুবিধার জন্য এই পয়েন্টে প্রতিটি সিগন্যাল স্বতন্ত্র। একটি সিগন্যাল চললে দেখা যায় বাকি তিনটি বন্ধ রাখতে হয়। ফলে অন্য সিগন্যালগুলোতে গাড়ি জমতে থাকে। প্রতিটি সিগন্যাল তিন মিনিট চললে চারটির জন্য ১২মিনিটের প্রয়োজন। দেখা যায় তিন মিনিটে একটি সিগন্যালে জমে থাকা গাড়ি পার হতে পারে না। তিনি জানান, মগবাজার-মৌচাক উড়াল সড়কের একাংশ উদ্বোধনের পর চারলেন হয়ে আসা গাড়িগুলোকে লাভ রোড হয়ে দুই লেনের বিজয় সরনি ওভারপাস ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে গাড়ির জটলা বাড়ে। তিনি বলেন, ভিআইপি প্রটোকল, বাড়তি গাড়ির চাপ, রাস্তার স্বল্পতা, যত্রতত্র রাস্তা পারাপারসহ সব মিলিয়ে এই সিগন্যাল সামলাতে আমরা প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যে আছি। ভিআইপি প্রটোকল হলে অন্য পয়েন্টগুলোতে গাড়ির চাপ সামলাতে আমাদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। বিজয় সরণি মোড়ে ফুট ওভারব্রিজ বা আন্ডারপাস স্থাপনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন এতে পথচারীদের চলাচলে সমস্যা মিটবে। এছাড়া ফার্মগেট থেকে ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত একটি ওভারপাস করা গেলে উত্তর-দক্ষিণমুখী গাড়ি চলাচলে আর কোন সমস্যা হবে না। তিনি জানান, মনিপুরী পাড়ায় আওলাদ হোসেন মার্কেটের সামনে ওভারব্রিজটি অপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। এতে চার লেনের রাস্তা কমে তিন লেন পর্যন্ত ঠেকেছে। এছাড়া বিআরটিএ কার্যালয়ের পাশে দুটি পাম্পের কারণে রাস্তার এক লেন কমে গেছে। এত গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। লাভ রোড থেকে বিজয় সরণি পর্যন্ত তিন মিনিটের রাস্তা আসতে সময় লাগে ২০ মিনিটের বেশি। জাহাঙ্গীর গেট ॥ ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফার্মগেট এলাকায় চলা বাস, লেগুনাসহ বিভিন্ন পরিবহনের চালক জানিয়েছেন, প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে যানজটের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। তারা বলছেন, সকালে দীর্ঘ সিগন্যালের কারণে ফার্মগেটমুখী পরিবহনগুলোকে অন্তত ২০মিনিট আটকে থাকতে হয়। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে ওয়ার্কশপ পয়েন্ট থেকে এক কিলোমিটারের বেশি রাস্তায় যানজট জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত এসে ঠেকে। পাঁচ থেকে আট মিনিট পর পর সিগন্যাল ছাড়া হয় সর্বোচ্চ দু’মিনিটের জন্য। এতে সব গাড়ি সিগন্যাল পার হতে পারে না। ফলে গাড়ি জটলা বাড়ে। তবে ফার্মগেট থেকে সারসরি ক্যান্টনমেন্টে যেতে রাস্তাটি কার্যত ফাঁকাই থাকে। জাহাঙ্গীর গেট সিগন্যালে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা বলছেন, সকালে স্কুল ও অফিসমুখী গাড়ির চাপ সবচেয়ে বেশি। রাস্তার পরিধি অনুযায়ী গাড়ি বেশি হওয়ায় চাপ সামলাতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। এ্মন বাস্তবতায় গুরুত্ব বিবেচনায় সিগন্যাল ছাড়া হয়। তবে সামনের সিগন্যাল ফাঁকা না হলে কিছুই করার থাকে না। পুলিশ বলছে, অনেক সময় দেখা যায় ভিআইপি প্রটোকলের কারণে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সামনে সিগন্যাল দেয়া থাকে প্রায় ২০ মিনিট থেকে আধাঘন্টা পর্যন্ত। তখন গাড়ি চলার কোন সুযোগ থাকে না। এছাড়া বিজয় সরণি মোড়ের সিগন্যাল পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত আমরাও গাড়ি ছাড়তে পারি না। এতে দেখা যায় মহাখালী ফ্লাইওভারের পুরো অংশেই অনেক সময় যানজট থাকে। সোজাসোজি তা ক্যান্টনমেন্টের অনেক ভেতর পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে। বিজয় সরণি মোড় পার হয়ে জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত গেলেই একটি সাইন বোর্ডে নির্দেশনা চোখে পড়বে। এতে লেখা আছে, ‘সকল প্রকার সামরিক যানবাহন ডান দিকে। অসামরিক কার/জীপ, মাইক্রোবাস বাম দিকে’। অসামরিক যানবাহনগুলোকে চেক করে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এতে দীর্ঘ জটলা দেখা দেয়। ফলে ডানদিকে টার্ন নিয়ে ফ্লাইওভারে ওঠতে গাড়িগুলোকে কিছুটা বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। অন্যদিকে মহাখালী ফ্লাইওভার থেকে গাড়িগুলো নেমে আবারো ইউটার্ন করে যাচ্ছে মহাখালীর দিকে। এক্ষেত্রে প্রাইভেটকার, পিকআপ সবচেয়ে বেশি। দেখা গেছে, ফ্লাইওভার থেকে নামার পর কয়েক সারি গাড়ি ইউটার্ন করার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে। বাম দিকে চলাচলের রাস্তা সরু হয়। অনেক ক্ষেত্রে পুরোপুরি আটকে যায়। ফার্মগেট থেকে ফ্লাইওভার বা মহাখালীমুখী গাড়িগুলোকে সিগন্যাল রেখে ইউটার্নেও সুযোগ দিতে হয়। এতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফার্মগেটমুখী গাড়িগুলোকেও সিগন্যালে পড়তে হচ্ছে। এছাড়াও জাহাঙ্গীর গেটের একটু সামনে বি এ এফ শাহীন কলেজ ও সিভিল এ্যাভিয়েশন উচ্চ বিদ্যালয়। এ দুটি প্রতিষ্ঠান রাস্তার দু’পাশে। সমস্যা হলো শাহীন কলেজের সামনে প্রাইভেটকার, ভ্যান ও রিক্সার জটলা। একারণে গাড়ি চলাচলে স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়। বিপরীত দিকে একটি অবৈধ পরিবহন টার্মিনাল হয়েছে। এখানে সব অটোরিক্সা, রিক্সা, প্রাইভেটকার দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য প্রতিদিনের। ফলে মহাখালী রেল গেটের নিচ দিয়ে আসা ফার্মগেটমুখী গাড়িগুলো চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়। পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, জাহাঙ্গীর গেটে তিনমুখী রাস্তায় ১০গুণ বেশি গাড়ি। ফলে এই পয়েন্টে যাত্রীদের দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাদের পরামর্শ কাকলী, সোনারগাঁও, বিজয় সরণি ও ফার্মগেট পয়েন্টে ওভারপাস নির্মাণ করা সম্ভব হলে এই এলাকায় যানজট থাকবে না। ফার্মগেট ॥ অল্প জায়গায় ঘন-ঘন ক্রসিং হওয়ায় ফার্মগেট এলাকায় যানজটের মূল কারণ। পুলিশ বলছে, আসাদগেট পার হয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত গাড়িগুলোকে আসতে তিনটি সিগন্যালের মুখে পড়তে হয়। আবার জাহাঙ্গীর গেট থেকে ফার্মগেটমুখী গাড়িগুলোকেও তিনটি সিগন্যালের মুখে পড়তে হচ্ছে। জাহাঙ্গীরগেটমুখী গাড়িগুলোর অবস্থা একই। এরমধ্যে বিজয় সরণিতে চারটির মধ্যে একটির বেশি সিগন্যাল ছাড়া যায় না। পাশাপাশি ভিআইপি প্রটোকল। সব মিলিয়ে এলাকার যানজট নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতিটি ক্রসিং ছাড়া হয় জানিয়ে ফার্মগেটে দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক কনস্টেবল মোঃ হারুন জনকণ্ঠকে জানান, সকাল সাতটা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত যানজট বেশি থাকে। তিনি জানান, তেজকুনিপাড়া এলাকায় নামী দামী বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় গাড়ির জটলা সৃষ্টি হয়। যা মূল সড়ক পর্যন্ত আসে। ফলে রাস্তায় সিগন্যাল ক্লিয়ার থাকলেও গাড়ি চলাচল করতে পারে না। তিনি জানান, অফিস টাইম শেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। সার্জেন্ট রফিকুল জনকণ্ঠ’কে জানান, অল্প রাস্তায় ঘন ঘন সিগন্যাল থাকায় যানজট হচ্ছে। তিনি জানান, রাস্তা পরিষ্কার রাখতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। দায়িত্বে কারও কোন ঘাটতি নেই। কিন্তু সমস্যা পথচারীরা আইন মানেন না। ফুট ওভারব্রিজ থাকলেও তা ব্যবহার না করে মাঝরাস্তা দিয়ে গাড়ি থামিয়ে পথ চলেন। ফলে গাড়ি চলাচলে স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়। তিনি জানান, আইন অমান্য করে রাস্তা পারাপারের কারণে তিন মাসে ফার্মগেটে সড়ক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যুসহ অন্তত ৩০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। সোনারগাঁও-বসুন্ধরা পয়েন্টে আন্ডারপাস করার পরামর্শ দিয়ে পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, কাওরানবাজার এলাকায় ফুট ওভারব্রিজ না থাকায় পথচারীরা ইচ্ছেমতো রাস্তা পারাপার হচ্ছেন। এতে যানবাহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। তারা বলছেন, রাস্তা পারাপারে নিরাপদ কোন ব্যবস্থা না থাকায় এই পয়েন্টে এক প্লাটুন পুলিশ দিয়ে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। এতে অন্য সিগন্যালগুলোতে প্রভাব পড়ছে। সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্রুত ইউলুপগুলো নির্মাণের তাগিদ দেয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এছাড়াও দ্রুত বাস বে নির্মাণ, লোকাস বাস ও পিকআপের জন্য স্ট্যান্ড করা হলে যানজট অনেকটাই সহনীয় মাত্রায় আসবে। যাত্রী ও চালকরা বলছেন, ফার্মগেটের আশপাশ এলাকায় প্রায় সবকটি সিগন্যালে ২০ থেকে ৪০ মিনিট পর্যন্ত আটকে থাকতে হয়। অথচ ফার্মগেট সিগন্যাল পার হয়ে বাংলামোটর আসতে সময় লাগে সর্বোচ্চ তিন মিনিট।
×