ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানদের কমিটিতে রেখে বিএনপি জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে ॥ শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৮:৩৪, ৯ আগস্ট ২০১৬

যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানদের কমিটিতে রেখে বিএনপি জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে ॥ শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের সন্তানদের নবগঠিত কমিটিতে রাখায় বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, এর মাধ্যমে বিএনপি সমগ্র জাতির সঙ্গেই প্রতারণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এমন লোকদের দিয়ে তাদের নতুন কমিটি সাজিয়েছে যারা যুদ্ধাপরাধের দায়ে আদালতে দ-প্রাপ্ত অপরাধী। ..একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদেরও কমিটিতে জায়গা দিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা সমগ্র জাতির সঙ্গে, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ২ লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোন-সকলের সঙ্গেই প্রতারণা করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে ‘শ্রদ্ধা এবং ভালবাসায় স্মরণীয় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচনকালে এ কথা বলেন। খবর বাসসর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী যুবলীগ এই গ্রন্থটি প্রকাশ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিকে তাদের গঠনতন্ত্র দেখা উচিত- এতে কত জন আছে এবং কিভাবে কমিটি গঠন হবে, তা দেখা উচিত।’ তিনি কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, বিএনপি কি ধরনের রাজনৈতিক দল, তাদের কি কোন নীতি বা নিয়মতান্ত্রিকতা নেই। দেখা যাচ্ছে যে- এই কমিটি স্বার্থানেষী মহলের কমিটি ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা জাতিকে কী-ই বা দিতে পারে। জেনারেল জিয়াই দেশে প্রথম যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় বসিয়ে পুনর্বাসিত করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার পরিবারও একই কাজ করে যাচ্ছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার মূল্যবোধকে ধ্বংস করেন। তিনিই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথকে রুদ্ধ করে খুনীদের বিদেশে মিশনে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেন। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজও কেউ বিচার চাইতে এলে এই প্রশ্ন জাগে, আমাকে আমার বাবা-মা, ভাইদের হত্যাকারীদের বিচারের জন্য ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। বিএনপির কোন গঠনতন্ত্র, লক্ষ্য এবং নীতি নেই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের একমাত্র লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া এবং ক্ষমতায় গিয়ে সীমাহীন দুর্নীতি এবং এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করা।’ বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই মহীয়সী নারী বঙ্গবন্ধুকে জাতির গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে প্রেরণা যোগাতেন। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গমাতাই বোধহয় সবচেয়ে আগে জানতেন এই বাংলাদেশ একদিন স্বাধীন হবে। তাঁর এই বিশ্বাসের দৃঢ়তার কারণেই বাংলার স্বাধীনতা ত্বরান্বিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব খুব সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু কখনই এজন্য তাঁর কোন আক্ষেপ ছিল না। তিনি বলেন, বরং বঙ্গমাতা তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতা দিয়ে বাবা কারাগারে থাকার সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের পরিচালনা করতেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ওপর বই প্রকাশ করায় আওয়ামী যুবলীগকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশীদ। বইটির সম্পাদক ও প্রকাশক ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সার্বিক পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন ইয়াসিন কবির জয়।
×