ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হতাশ করলেন বাকি

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৯ আগস্ট ২০১৬

হতাশ করলেন  বাকি

‘অলিম্পিক কত বড় মাপের আসর, অংশ নিয়ে তা বুঝতে পারলাম। আশা ছিল ফাইনাল বা শেষ আট পর্যন্ত টিকে থাকার। কিন্তু পারলাম না। প্রথম রাউন্ড থেকেই এভাবে বিদায় নেব, ভাবতেই পারছি না। অনেক কষ্ট পেয়েছি। এখন বুঝতে পারছি অলিম্পিক খেলতে আরও প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। শুধু প্রস্তুতি নয়, আরও অনেক ... অনেক বেশি। বিদেশী কোচের অধীনে দীর্ঘ সময়ের এই অনুশীলন যথেষ্ট নয়। আরও ভাল কোচ দরকার। প্রয়োজন দেশ-বিদেশে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ। পাশাপশি প্রচুর টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া। রিওর দুঃসংবাদ আমার জন্য অনেক হতাশার। তবে এই অভিজ্ঞতা আমার জন্য আগামী দিনের পাথেয় হয়ে রইল। অলিম্পিক খেলতে কি ধরনের প্রশিক্ষণ বা প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা এখন আমার কাছে পরিষ্কার। তবে শূটিং ফেডারেশনের পক্ষে নয়। নিজেকে ভালমানের শূটার হিসেবে আন্তর্জাতিক বড় আসরে খেলার জন্য তৈরি হতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। অন্তত এক-দেড় বছর বিদেশে অনুশীলন করতে পারলেই কেবল সম্ভব ভাল কিছু করার।’ কথাগুলো বাংলাদেশী শূটার আবদুল্লাহ হেল বাকীর। এবারের রিও অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রথমবারের মতো পদক জয়ের যে ক্ষীণ আশা ছিল দুটি খেলা নিয়ে, তার একটি হচ্ছে শূটিং (অপরটি গলফ)। পুরুষদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে অংশ নিয়েছেন বাকী। বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা আশা করেছিলেন পদকপ্রাপ্তি না হোক, অন্তত নিজ ইভেন্টের ফাইনাল রাউন্ড পর্যন্ত যেতে পারবেন তিনি। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। বাছাইপর্ব থেকেই বাদ পড়েছেন কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্যজয়ী এই শূটার। ৫০ জনের মধ্যে হয়েছেন ২৫তম। তার স্কোর ৬২১.০২ পয়েন্ট। তার চেয়ে বেশি স্কোর করেছেন ভারতীয় তারকা গগন নারাং (৬২১.৭ পয়েন্ট)। বাছাইয়ে শীর্ষ ৮ শূটার চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেবেন পদকের লড়াইয়ে। প্রাথমিক পর্বে অলিম্পিক রেকর্ড গড়ে প্রথম হয়েছেন ইতালির নিকোলা কাম্প্রিয়ানি। তার স্কোর ৬৩০.২। অষ্টম স্থান নিয়ে পদকের দৌড়ে টিকে আছেন বেলারুশের ইলিয়া চারিখা। তার অর্জন ৬২৫.৫ পয়েন্ট। বাকীর আক্ষেপÑ আর মাত্র ৪ পয়েন্ট অর্জন করতে পারলেই বাকী পদকের জন্য লড়তে পারতেন। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে একজন শূটার দাঁড়িয়ে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের মধ্যে ১০টি করে একটি সিরিজের মোট ছয়টি সিরিজ (৬০টি গুলি) শূটিং করতে পারেন। বাকী তার প্রথম সিরিজে ১০৩.৮, দ্বিতীয়টি ১০৪.০, তৃতীয়টি ১০৫.৪, চতুর্থটিতে ১০৩.৬, পঞ্চমটিতে ১০০.৬ এবং ষষ্ঠ ও সর্বশেষটিতে ১০৩.৮ স্কোর করেন। গাজীপুরের ছেলে বাকী। সবসময়ই ভেবেছেন একদিন খেলবেন অলিম্পিকে। এবারই ভাগ্যদেবী মুখ তুলে তাকান তার দিকে। সর্বশেষ জুনে আজারবাইজানে বিশ্বকাপ শূটিংয়ে অংশ নিয়ে ২৮তম হন তিনি। রিওতে আসার আগে জানিয়েছিলেন নিজের সেরা স্কোর গড়তে চান। ৬২৮ স্কোর গড়তে পারলে শীর্ষ আটে জায়গা করে নিতে পারবেনÑ এমনটিই ছিল তার আশাবাদ। কিন্তু আশার সমাধি ঘটেছে। অনুশীলনেই যার স্কোর ৬৩১.৭, রিওতে এসে তার স্কোর এত কম হয় কি করে? জার্মানিতে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাকীর স্কোর ছিল ৬২৪.৮। এটাই ছিল তার সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক স্কোর। অথচ সেই স্কোরের ধারে কাছেও নেই তিনি এবার! উল্লেখ্য, বাকীই হচ্ছেন রিও অলিম্পিকে বাংলাদেশী প্রথম ক্রীড়াবিদ, যিনি পদকের লড়াই থেকে ছিটকে গেলেন। অবশিষ্ট আছেন আরও ছয় প্রতিযোগী।
×