ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পুরুষদের দলগত ফ্রিস্টাইল ইভেন্টে স্বর্ণ জিতে নিজের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করলেন এ কিংবদন্তি

স্বর্ণ দিয়ে শুরু ফেলপসের

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ৯ আগস্ট ২০১৬

স্বর্ণ দিয়ে শুরু ফেলপসের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লন্ডন অলিম্পিক শেষের কিছুদিন পরই অবসর ঘোষণা দিয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন মাইকেল ফেলপস। তবে সাঁতারে বাটারফ্লাই ইভেন্টের অবিসংবাদিত এ সম্রাট জলের টান থেকে দূরে থাকতে পারেননি। বয়সটাও যথেষ্ট ছিল এবং তখনও ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন। অলিম্পিক ইতিহাসে সর্বাধিক ১৮ স্বর্ণসহ ২২ পদকের রেকর্ড যার গলায় ঝুলানো তিনি বিদায় নেবেন এভাবে? অবশেষে ফিরে এসেছেন, ফেরার সেই পথটা ছিল বেশ কঠিন। অনেক ঝঞ্ঝা আর সংগ্রাম করে এবার রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকে আসা যুক্তরাষ্ট্রের এ কিংবদন্তি সাঁতারুর দিকে সবারই নজর ছিল। হতাশ করেননি ক্রীড়াবিশ্বের ভক্ত-সমর্থকদের। রিও অলিম্পিকের পুলে নেমেই শুরু করেছেন স্বর্ণ পদক জয় দিয়ে। পুরুষদের ৪ী১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে যুক্তরাষ্ট্রের জয়ের পেছনে দুর্দান্ত ভূমিকা ছিল ফেলপসের। এই জয়ের মাধ্যমে তার রেকর্ড স্বর্ণ পদক জয়ের সঙ্গ যোগ হলো আরেকটি সোনা। এখন অলিম্পিকে তার স্বর্ণ পদকের সংখ্যা ১৯! রিও অলিম্পিকে অংশ নেয়ার ইচ্ছাটা বেড়ে যাওয়ার পর আর অবসরে থাকতে পারেননি ফেলপস। ‘ফ্লাইং ফিশ’ খ্যাত এ তারকা। ধীরে ধীরে ২০১৪ সালের এপ্রিলে অবসর ভেঙ্গে ফিরে আসেন আবার প্রতিযোগিতামূলক সাঁতারে। কিন্তু নিজের সেই গতিটা ফিরে পাচ্ছিলেন না। অখ্যাত সাঁতারুদের সঙ্গেই পেরে উঠছিলেন না। তবে নিয়মিত অনুশীলন, তীব্র ইচ্ছাশক্তির জোরে তিনি দ্রুতই নিজেকে ফিরে পান। কিন্তু মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে আইনী জটিলতায় পড়েন ৩১ বছর বয়সী এ কিংবদন্তি। সে কারণে গত বছর বিশ্ব সাঁতারে যুক্তরাষ্ট্র দলে সুযোগ পাননি। তবে ইউএস জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপসে ঠিকই ঝড় তোলেন। ১০০ ও ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে এবং ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে স্বর্ণ জয় করেন। তিনটিতেই তিনি জেতেন বছরের লিডিং টাইমিং নিয়ে। নিশ্চিত হয় রিও অলিম্পিকে ব্যক্তিগত এ তিনটি ইভেন্টে তিনি অবশ্যই থাকছেন। এছাড়াও এবার রিও অলিম্পিকে ফেলপস লড়বেন দলগত ৪ী১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল, ৪ী২০০ মিটার ফ্রিস্টাইল এবং ৪ী১০০ মিটার মিডলে রিলে ইভেন্টে। বাল্টিমোর বুলেটের দিকে নজর ছিল সবার। জলে নামতে পারলে সাক্ষাত ‘টর্পেডো’ হয়ে ওঠেন। রিও অলিম্পিকে এর ব্যতিক্রম হলো না। শুরুতেই পেলেন সোনায় মোড়ানো সাফল্য। কিংবদন্তি এ সাঁতারুকে উজ্জীবিত রাখতে এবং অনুপ্রাণিত করতে উপস্থিত ছিলেন বাগদত্তা নিকোল। কাউকেই হতাশ করেননি ফেলপস। এ জলদানব লন্ডনে হারিয়ে ফেলেছিলেন এ ইভেন্টের স্বর্ণটা। ২০০৮ সালে বেজিং অলিম্পিকে এ ইভেন্টে স্বর্ণ পদক জিতলেও লন্ডনে গলায় ঝুলাতে পেরেছিলেন রৌপ্য। কিন্তু এবার যে আরও ভয়ানক গতিসম্পন্ন হয়ে ফিরেছেন সেটার প্রমাণ দিয়ে দিলেন ভালভাবেই। নিজের ল্যাপটা শেষ করেছেন ৪৭.১২ সেকেন্ডে। আর সবমিলিয়ে নাথান আড্রিয়ানের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র শেষ করে ৩ মিনিট ৯.৯২ সেকেন্ডে। এর ফলে গত দুটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপস এবং লন্ডন অলিম্পিক থেকে এ ইভেন্টে ফ্রান্সের আধিপত্য খর্ব হলো। জয়ের পর ফেলপস বলেন, ‘খুবই উন্মাদনাময় একটি সময় গেছে। আমি দেখলাম কালেব ড্রেসেল একেবারেই কাছে এবং সত্যি বলতে কি আমি তখন নিজের ওপর এতটাই চাপ অনুভব করছিলাম যে মনে হচ্ছিল বুক চিড়ে বের হয়ে আসবে হৃৎপি-টা। কিন্তু আমরা সবাই চাইছিলাম এই রেসে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ফিরে পেতে। এখন দলের তরুণরা কাঁদছে, আমিও কাঁদছি। আমার শেষ ফ্রিস্টাইল রিলে ইভেন্ট ছিল এবং জিতে ফেরার পর আমার অত্যন্ত ভাল লাগছে।
×