ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

কিংবদন্তির মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী প্রশান্তর চিত্রভাষ্যে

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ৯ আগস্ট ২০১৬

কিংবদন্তির মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী প্রশান্তর চিত্রভাষ্যে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাদা-কালোয় আঁকা হয়েছে মানুষটির মুখাবয়ব। শরীরের রংটিও একই বর্ণের। তবে মুষ্টিবদ্ধ একটি হাত শুধু চিত্রিত হয়েছে লাল বর্ণে। বিপুল শক্তির উৎস হিসেবে সাদা-কালোর মাঝে ব্যবহৃত হয়েছে প্রতীকী লাল রং। এভাবেই বক্সিং রিংয়ের রাজা মোহাম্মদ আলীকে চিত্রভাষ্যে রূপ দিয়েছেন চিত্রশিল্পী প্রশান্ত কর্মকার বুদ্ধ। রং ও রেখার আশ্রয়ে কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর তারুণ্য থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত উপস্থাপন করেছেন এই শিল্পী। সেসব ছবি নিয়ে সেজেছে গুলশান এ্যাভিনিউয়ের রেডিয়াস সেন্টারের বে-গ্যালারি। এখানে চলছে এই উদীয়মান চিত্রকরের আঁকা ৩২টি চিত্রকর্ম নিয়ে কুড়িতম একক প্রদর্শনী। শিরোনাম ‘মোহাম্মদ আলী : দ্য লিজেন্ড লাইভস অন।’ বক্সিং রিংয়ে মোহাম্মদ আলীর রাজকীয় অভিব্যক্তিকে ক্যানভাসে মূর্ত করেছেন শিল্পী। দুনিয়া কাঁপানো এই বক্সার বক্সিং রিংয়ে যেমন প্রজাপতির মতো উড়ে গিয়ে মৌমাছির মতো করে প্রতিপক্ষকে হুল ফোটাতেনÑসেসব অনবদ্য ভঙ্গিমা উদ্ভাসিত হয়েছে ছবিতে। একটি প্রতিকৃতিতে লাল রংয়ের জমিনের ভেতর থেকে আবির্ভূত হয়েছেন এই গ্রেট বক্সার। বিজয়ী হওয়ার বাসনায় চোখে-মুখে দৃশ্যমান দারুণ ক্ষিপ্রতা। আরেক ছবিতে চিরজীবন তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে সবুজ রংয়ের আশ্রয়ে মেলে ধরা হয়েছে মোহাম্মদ আলীর মুখাবয়ব। রিংয়ের দড়িতে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছেন আলী, জয়ের অদম্য বাসনায় প্রতিপক্ষকে আঘাত করছেন, ধরাশায়ী প্রতিপক্ষের সামনে পাহাড়ের মতো অবিচল ভঙ্গিমায় কিংবা মুষ্টিবদ্ধ হাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন আঘাতেরÑএমন নানা অভিব্যক্তি উপস্থাপিত হয়েছে ছবিগুলোয়। সোমবার গ্যালারি প্রাঙ্গণে কথা হয় সুমাইয়া শারমিন নামের এক দর্শনার্থীর সঙ্গে। অভিভূত এই শিল্পরসিক বলেন, এক কথায় চমৎকার। মনে হচ্ছে যেন মোহাম্মদ আলীকে সরাসরি দেখছি বক্সিং রিংয়ে। কিংবদন্তি এই মুষ্টিযোদ্ধার বক্সিং রিংয়ের অভিব্যক্তিগুলো অদ্ভুত সুন্দর করে আঁকা হয়েছে। একইসঙ্গে রিংয়ে তাঁর রাজকীয় চলন-বলনও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সমান দক্ষতায়। প্রদর্শনী প্রসঙ্গে প্রশান্ত কর্মকার বুদ্ধ বলেন, পৃথিবীজুড়ে বিখ্যাত লোকের অভাব নেই। তবে মোহাম্মদ আলীকে যেন মনে হয়েছে আমাদেরই মানুষ। এই দেশকে তিনি ভালবেসেছিলেন। ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ সফরে এলে তৎকালীন সরকার তাঁকে এদেশের নাগরিকত্ব দিয়েছিল। ওই সফরে মুগ্ধ হয়ে বক্সিং রিংয়ের এই রাজা পরবর্তীতে বলেছিলেন, আমেরিকা যদি কোনদিন আমাকে প্রত্যাখ্যান করে আমি আবাস গড়ব বাংলাদেশে। এদেশে মানুষের আতিথেয়তায় আপ্লুত হয়ে অন্যদের বলেছিলেন, তোমরা যদি সোনার মানুষ দেখতে চাও তবে বাংলাদেশে যাও। এভাবেই তিনি ধারণ করেছিলেন আমাদের এই সবুজ-শ্যামল বাংলাকে। আর শুধু বক্সিংয়ের মানবতার বিচারেও এক উদার মানুষের নাম মোহাম্মদ আলী। মার্কিনীদের চাপিয়ে দেয়া ভিয়েতনাম যুদ্ধের তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামেও মার্কিন নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন এই গ্রেট বক্সার। প্রদর্শনীর অধিকাংশ ছবিই আঁকা হয়েছে উজ্জ্বল রংয়ের ব্যবহারে। এ্যাক্রেলিক ও মিশ্র মাধ্যমের আশ্রয়ে ক্যানভাস ও পেপারে সৃজিত হয়েছে ছবিগুলো। ৩০ জুলাই থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী এ প্রদর্শনী চলবে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। শুরু হচ্ছে ম্যাজিক বাউলিয়ানা ২০১৬ ॥ ‘শোনাও বাউল গান মাতাও বাংলার প্রাণ’ সেøাগানে বাংলা লোকসঙ্গীতে নতুন প্রতিভা অন্বেষণে মাছরাঙা টেলিভিশনে শুরু হচ্ছে ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা ২০১৬’। দেশের তরুণ প্রজন্মকে বাংলা লোকগানের চিরন্তন আবেদনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে দ্বিতীয়বারের মতো স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্র্যান্ড ‘ম্যাজিক’ এবং মাছরাঙা টেলিভিশন এ উদ্যোগ নিয়েছে। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতার নিবন্ধন কার্যক্রম। অনলাইন এবং ফোন কলের মাধ্যমে নিবন্ধন করা যাবে। সোমবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। এতে প্রধান তিন বিচারক হিসেবে ফরিদা পারভীন, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী ও শফি ম-লের নাম ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং মালিক মোহাম্মদ সাঈদ ও মাছরাঙা টেলিভিশনের এজিএম (এ্যাকাউন্টস এ্যান্ড ফিন্যান্স) সারোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা ২০১৬’-এর নেমোনিক উন্মোচন ও প্রতিযোগিতার বিচারকদের নাম ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি প্রতিযোগিতার প্রমোশনাল ভিডিও এবং বাংলা লোকগানের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য, যুগস্র্রষ্টা শিল্পী, সাম্প্রতিক প্রবণতার উপর একটি তথ্যবহুল অডিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন দেখানো হয়। মালিক মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, লোকসঙ্গীত আমাদের জন্য এক বিশাল রতœ ভা-ার। কিন্তু চর্চা এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এটি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা যাচ্ছে না। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা প্রতিভা খুঁজে পাওয়া যাবে। যারা বাউল গান ও লোকসঙ্গীতকে সমৃদ্ধ করবে।’ ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা’ অন্যান্য রিয়েলিটি শোর মতো হবে না উল্লেখ করে সারোয়ার হোসেন বলেন, প্রচলিত অর্থে যে ট্যালেন্ট হ্যান্ট হয়, ম্যাজিক বাউলিয়ানা তার বাইরে। প্রতিযোগিতার পাশাপাশি লোকসঙ্গীতকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেয়াই এর মূল লক্ষ্য। এ প্রতিযোগিতাটি সবার জন্য উন্মুক্ত। বাংলাদেশের যেকোন নাগরিক এতে অংশ নিতে পারবেন। নিবন্ধনের জন্য ফোন নম্বর হচ্ছে । আর অনলাইন নিবন্ধন করা যাবে প্রতিযোগিতার ওয়েবসাইটে- । পুরো বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতার ১০টি অঞ্চলে ভাগ করা হবে। এই সময়ের বেশ কয়েকজন খ্যাতিমান বাউল শিল্পী এই ১০টি অঞ্চল থেকে ৪০ জন শিল্পীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করবেন। এরপর গ্রুমিং সেশন শেষে এই ৪০ জনকে নিয়ে শুরু হবে স্টুডিও রাউন্ড। পর্যায়ক্রমে প্রতিযোগিতার নানা ধাপ পেরিয়ে নির্বাচিত হবেন সেরা তিন শিল্পী, যারা হবেন ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা’ বিজয়ী।
×