ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের হিড়িক

প্রকাশিত: ০৪:২০, ৯ আগস্ট ২০১৬

চট্টগ্রামে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের হিড়িক

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সোমবার পর্যন্ত গত দু’দিনে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে চউক (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) ও রেল কর্তৃপক্ষ ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। চউকের অভিযানের পর নবরূপে এসব স্থাপনা গড়ে উঠা সম্ভাবনা না থাকলেও রেল কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদস্থলে আবারও অবৈধ বসতি যে গড়ে উঠবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ প্রতিবছর এ ধরনের চিত্র জনসম্মুখে ধরা পড়ছে। চউক গত দু’দিনে নগরী মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে ব্যাপক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। দুইদিনে প্রায় শতাধিক এ জাতীয় স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে। মূলত নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের কারণে প্রধান সড়ক সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় এর প্রশস্তকরণে এ উচ্ছেদ অভিযান। অপরদিকে, রেল কর্তৃপক্ষ স্টেশন কলোনি সংলগ্ন দু’শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। রেলের বিভিন্ন কলোনি সংলগ্ন এলাকাজুড়ে এ ধরনের অবৈধ স্থাপনার কমতি নেই। এসব স্থাপনায় চলে নানা অবৈধ কার্যক্রম। মাদক থেকে শুরু করে হেন কোন অপকর্ম নেই এসব স্থাপনায় চলে না। অপরদিকে, চট্টগ্রামে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার নির্মিত হয়েছে বহু আগে। এখন লালখান বাজার পর্যন্ত ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলছে। এরপরে পতেঙ্গা বিমানবন্দর পর্যন্ত এ জাতীয় ফ্লাইওভার নির্মাণের ঘোষণা রয়েছে। এরই মধ্যে চালু হয়েছে কদমতলীর ফ্লাইওভারও। ফ্লাইওভার নির্মিত হওয়ার পর এবং অপরগুলোর নির্মাণ কাজ চলতে থাকায় সড়কের প্রশস্ততা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ফলে যানজট নিত্যদিনের সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সকাল থেকে রাত অবধি ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ যেসব স্থানে চলছে প্রতিটি স্পটে যানজট লেগেই থাকছে। ফলে চউক কর্তৃপক্ষ সড়কের দুই ধারে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে। চউকের ম্যাজিস্ট্রেট ও অথরাইজড অফিসার দফতর সূত্র জানায়, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে, আগামী মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগেও শুরু হচ্ছে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান। বিশেষ করে চাক্তাই খালের দুই পাশে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ থাকবে সর্বাগ্রে। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন জনকণ্ঠকে জানান, এ নগরে জলজটের অন্যতম কারণ যত্রতত্র অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠা। বিশেষ করে নগরীর মধ্য দিয়ে যেসব খাল প্রবাহিত হয়েছে সেসব খাল দিনে দিনে সংকুচিত হয়েছে অবৈধ দখলদারদের কারণে। গড়ে উঠেছে ঘর-বাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালের দু’পাশ প্রশস্তকরণ ও ভরাট কাজ খনন করা হবে। এতে করে নগরবাসী জলজটের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে। বর্তমান বর্ষা মৌসুমেও চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলজট সমস্যা তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এছাড়া বৈশ্বিক পরিবর্তনের কারণে পানির স্তর সমতলের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুম ছাড়াও স্বাভাবিক সময়ে জোয়ারের পানি শহর এলাকায় প্রবেশ করছে। এ সমস্যা চট্টগ্রামে দিনে দিনে বাড়ছে। ইতোপূর্বে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় পরিলক্ষিত হয়। এখন তা দেশের অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ, কোরবানীগঞ্জসহ সর্বত্র সয়লাব হচ্ছে। গেল সপ্তাহে এসব এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে বিপুল অংকের অর্থ ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ব্যবসায়ীদের।
×