ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দুদকের কাজে জনগণের আস্থার ঘাটতি রয়েছে ॥ টিআইবি

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ৮ আগস্ট ২০১৬

দুদকের কাজে জনগণের আস্থার ঘাটতি রয়েছে ॥ টিআইবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যক্রমে জনগণের আস্থার ঘাটতি রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। রবিবার সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ উদ্যোগ: বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর পর্যালোচনা’ শীর্ষক তৈরি এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয় আইনী স্বাধীনতা থাকলেও সংস্থাটির কাজের ওপর জনগণের আস্থা নেই। প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়, টিআইবির ১০০ ভিত্তিক সূচকে ‘আইনী স্বাধীনতা ও মর্যাদা’ শীর্ষক ক্ষেত্রে দুদকের স্কোর সর্বোচ্চ ৭৮.৫৭। আর সর্বনিম্ন স্কোর এসেছে দুদকের কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের আস্থার ক্ষেত্রে; মাত্র ২৮.৫৭। পর্যালোচনা প্রতিবেদন তুলে ধরেন দুই গবেষক শাহজাদা এম আকরাম ও শাম্মী লায়লা ইসলাম। শাহজাদা আকরাম জানান, আইনী স্বাধীনতা ও অবস্থান, অর্থ ও মানবসম্পদ, অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম, প্রতিরোধ, শিক্ষা ও আউটরিচ কার্যক্রম, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দুদকের সহযোগিতা, জবাবদিহিতা ও তদারকি এবং কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের ধারণার মতো সাতটি ক্ষেত্রে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনালের ৫০টি নির্দেশকের আলোকে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সার্বিক স্কোর ৬৭ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে ‘উচ্চ’, ৩৪ থেকে ৬৬-এর মধ্যে হলে ‘মধ্যম’ এবং শূন্য থেকে ৩৩ হলে তাকে ‘নিম্ন’ মানদ-ের বিবেচনা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে স্কোর ৬১ দশমিক ২২ শতাংশ হওয়ায় টিআইবির বিবেচনায় দুদককে একটি ‘মধ্যম মানের’ প্রতিষ্ঠান বলা হয়েছে। সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অবস্থান মধ্যম পর্যায়ের, মানে আমাদের গ্লাসটা হাফফুল, খালি বলব না। ২১টি সূচকে আমরা উচ্চ স্কোর পেয়েছি। অনেক আশার সঞ্চার করার সুযোগ আছে। ২৮টি সূচকে হয় মধ্যম, নয় নিম্ন। একদিক থেকে আশাবাদ ও উদ্বেগের প্রতিফলন দেখতে পাই। সম্মেলনে টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল বলেন, আজ যে প্রতিবেদন পেলাম, সেটা অনেক দিনের মধ্যে বোধহয় আমাদের নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ করে দিচ্ছে। প্রচ- একটা নেতিবাচক অবস্থান আমরা দেখতে পাইনি। অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক কিছু নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। সে নির্দেশনা থেকে সামনে তাকানোর সুযোগ রয়েছে। এটা আমাদের আশাবাদী করছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে দুর্নীতি দমনের কাজটিকে যেখানে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, সেখানে বাজেটের অপ্রতুলতা কেন থাকবে- সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। গবেষক আকরাম বলেন, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে পরিচালিত এই গবেষণায় দুদকে অভিযোগকারী বা দুর্নীতির তথ্যদাতাসহ জনগণের ‘অভিগম্যতা’ বিষয়টি নিম্ন স্কোর পেয়েছে। টিআইবিসহ অন্যান্য সূচকে বাংলাদেশে দুর্নীতির উচ্চ হারের চিত্র পাওয়া গেলেও দুদকে অভিযোগ আসে বছরে গড়ে ৯ হাজার ৮১০টি, যা জনসংখ্যার হিসাবে মাত্র শূন্য দশমিক ০০৬ শতাংশ। টিআইবি মনে করছে, অভিগম্যতা এবং তথ্যদাতার নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতিই এর কারণ। সম্মেলনে টিআইবির গবেষণা পরামর্শক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান, টিআইবির উপ-নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া খায়ের সংবাদ বক্তব্য দেন।
×