ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

বন্ধ ঘরের অন্ধকার ঘুচাও

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৮ আগস্ট ২০১৬

বন্ধ ঘরের অন্ধকার ঘুচাও

একে একে তাঁর ফেরার সব পথ রুদ্ধ হয়ে আসছে। অন্ধকারে বদ্ধঘরে বসে তিনিও চাইছেন, পুরো দেশটা অন্ধকারে ঢাকা পড়ুক। যেমন তিনি নিজে সাজানো গৃহের অভ্যন্তরে বসে দিবাস্বপ্ন দেখছেন, নরহত্যাকারীদের কাঁধে কাঁধ রেখে সিংহাসনে আসীন হবেন। আর তার দুঃশাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট করে মারবেন নিরীহ মানুষকে। মানুষ হত্যার যে খেলা পরম্পরায় তিনি চালিয়েছেন, তা এখনও বিদ্যমান। কৃতকর্মের জন্য দুঃখ এবং লজ্জাবোধের মধ্যেই মনুষ্যত্বের প্রকাশ। কিন্তু তিনি ওই পথ মাড়াতে মোটেই রাজি নন। অযথা উন্মাদনার সৃষ্টি করে মানুষকে মনুষ্যত্ব থেকে বিচ্যুত করার চেষ্টা তিনি তার সহকর্মী, সহযোগীদের নিয়ে কম করেননি। মানুষ ও সমাজের ঘোরতর শত্রু হিসেবে নিজেদের প্রতিপন্ন করতে তাদের বাধে না। আর বাধে না বলেই একাত্তরের নরঘাতকদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বোমা মেরে আগুন জ্বেলে জীবন্ত মানুষ হত্যা থেকে গুপ্তহত্যার পথে পথে হাঁটতে হচ্ছে। হিংস্রতার রিপুতাড়িত উন্মাদনায় তাদের অনুসারী ও রাজনৈতিক মতাদর্শে অনুগামীদের হাতে ঝলসে উঠছে নানাবিধ মারণাস্ত্র। উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ থেকে জঙ্গীবাদ- এসব কিছুর পেছনে রয়েছে তাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ অবস্থান। তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্যÑ সরকার উৎখাত, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা, মামলা থেকে রেহাই পাওয়া। এটাই জঙ্গীরা ব্রত হিসেবে নিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, জঙ্গীরা তাদের গায়ে টোকাটিও দেয় না। এমনকি তাদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্যও নয়। দেশে বিদ্যমান অন্যান্য ইসলাম নামধারী দল জামায়াতের আদর্শের বিরোধী, এমনকি মওদুদীবাদের। কিন্তু তিনি তার সম্মোহনী শক্তিতে ভিন্ন ভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী ও পরস্পরবিরোধী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অবিশ্বাসী ইসলামপন্থী দলগুলোকে এক দড়িতে বেঁধে রেখেছেন। তাদের বাঁধন আলগা করা দুঃসাধ্যপ্রায়। বজ্র আঁটুনিই বটে। ফস্কা গেঁরো হলে কবেই সটকে যেত যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াতে ইসলামী বিএনপির আলিঙ্গন থেকে। আজ তারা এক দেহে লীন হয়ে আছে। বলাই তো হতো বিএনপির পক্ষ হতে, জামায়াত-বিএনপি একই পরিবার। পরিবারের সদস্যরা আলাদা হতে চায় না। এরা একান্নবর্তী পরিবারের মতো এক অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে সক্রিয় রয়েছে কর্মক্ষেত্রে। তা অপকর্ম হলেও। জামায়াতের পুরো রাজনীতিই হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অস্তিত্ববিলীন করে পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করে এক দেহে লীন হওয়া। তাই যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ফাঁসিতে দ-িত নিজামীকে ‘নিশান-ই-পাকিস্তান’ খেতাব ঘোষণা করে। এই পদকপ্রাপ্তি বেগম জিয়াকে আনন্দিত ও উৎসাহিত করতেই পারে পরিবারের কর্ত্রী হিসেবে। পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর বাংলাদেশ শাখাটি জেনারেল জিয়া, এরশাদ ও খালেদার জলসিঞ্চনে ও আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এমনই হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে যে, একাত্তরের আলবদরের শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীসহ মুক্তিকামী মানুষ হত্যার চর্চা থেকে সরে না এসে তারা নানা জঙ্গী নামে হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে। এই যে মারাত্মক জীবাণু হিসেবে বিদ্যমান দেশী জঙ্গীগোষ্ঠীগুলো, প্রাণ পায় জামায়াত-বিএনপির প্রেরণায়। জঙ্গীরা কার স্বার্থ সংরক্ষণ করছে, কারা তাদের পৃষ্ঠপোষক সেসব দিবালোকের মতো পরিষ্কার। এই জঙ্গী সংগঠন এবং তাদের অপকর্ম নিয়ে বিএনপি-জামায়াত একটি বাক্যও ব্যয় করেনি। আগুন সন্ত্রাস চালানো জামায়াত-শিবিরের সেই ক্যাডারদের সঙ্গে আরও নতুন নতুন শিক্ষার্থীদের রিক্রুট করা হচ্ছে। ছক বেঁধে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করার চেষ্টা অবিরাম চালিয়ে আসছে। মুক্তমনা বুদ্ধিজীবী, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী; শান্তিবাদী, ধর্মীয় নেতা, উদারবাদীদের ওপর ক্রমাগত নৃশংসতা চালিয়ে হত্যা করেছে এরা। এই একই কাজ তারা ১৯৭১ সালেও করেছে। এবার বিদেশী হত্যা করছে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য শুধু নয়, বিদেশীরা যাতে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারকে অপসারণে সহায়ক হয়, বিএনপি-জামায়াতের এই মনোবাসনা পূরণের জন্যই বিদেশীদের রক্ত এদেশের মাটিতে গড়াল। সবই এই দুই দলের ইচ্ছা, আকাক্সক্ষা, লক্ষ্য পূরণেরই ছল। এই জঙ্গীরা স্বাভাবিক মানুষ থেকে অস্বাভাবিক মানুষে রূপান্তরিত হয়ে জঙ্গীবাদে দীক্ষিত হচ্ছে এবং মানুষ হত্যায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে, তারা মূলত গিনিপিগ। এক্ষেত্রে তরুণদের ব্যবহার করা হচ্ছে। কলুষিত ও বিষাক্ত চেতনায় আবৃত হয়ে এরা যা করছে, তা তাদের নিজেদের আত্মস্বার্থেও কাজে লাগছে না। সম্মোহনী শক্তির কাছে এরা পরাভূত হয়ে অবলীলায় খুনী বনে গেছে। এদের ফেরার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছেন অন্ধকারের নেত্রী ও যুদ্ধাপরাধীরা। জামায়াত স্বপ্ন দেখায় দেশকে অস্থিতিশীল করা না গেলে এই সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। আর তা করা না গেলে ক্ষমতায় আসীন হওয়া কঠিন হবে। সুতরাং, সহজ পথ জঙ্গী লালন-পালন। তাই জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা জঙ্গীরা শক্তি অর্জন করছে। তাদের প্রধান সহায়তা প্রদানকারী শক্তি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ও জঙ্গীবাদী চেতনার ইসলাম নামধারী দলগুলো। এই এতবড় শক্তিকে (!) বেগম জিয়া উপেক্ষা করবেন, এমন বিভ্রান্তিতে পড়তে রাজি নন। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব ধ্বংস করার জন্য পঁচাত্তরপরবর্তী জান্তা শাসক জেনারেল জিয়ার যে পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে জামায়াত, তাকে হেলাফেলায় দূরে ঠেলে দেবেন, বেগম জিয়া তেমন অকৃতজ্ঞ নন। যুদ্ধাপরাধীদের তিনি অপরাধী হিসেবে দেখেছেন, এমন আচরণ বেগম জিয়া কখনও করেছেন, কেউ বলতে পারবে না। তবে সত্যকথা মাঝে মধ্যে তিনি বলেন, বেফাঁসে হলেও। যেমন জামায়াত যে সন্ত্রাসী রাজনীতি করে এবং বোমাবাজি যে তাদের হাতিয়ার সে কথা অকপটে বেগম জিয়া বলে ফেলেছেন। ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে কথা প্রসঙ্গে তিনি জামায়াতকে উদ্দেশ করে বলেছেনও, ‘ভুলি নাই, আপনারাও আমার জনসভায় বোমা মেরেছেন।’ ঘটনাটি গত শতকের শেষের। জামায়াত যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরেই চালিয়ে আসছে, এই বক্তব্যে সেই স্বীকৃতি মেলে। সেই জামায়াত তাদের শীর্ষনেতা যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদ-ে দ-িত হওয়ার দৃশ্য দেখে। এমনিতেই গণরোষে প্রকাশ্য রাজনীতি করা দুরূহপ্রায়। অবশ্য স্বাভাবিক রাজনীতি তারা কখনও করেনি। তাই জনসমক্ষে আসার পথ তাদেরও রুদ্ধপ্রায়, যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে আদালতে অভিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই। আগের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে সাংগঠনিক কাজ করতে না পারলেও বসে নেই তারা। তাদের নেতাকর্মীদের অনেকে আত্মগোপনে। কেউ পাকিস্তানে, মধ্যপ্রাচ্যে, ইউরোপে। পাকিস্তানে সে দেশের জামায়াত তাদের রক্ষাকবচ। শোনা যায়, মৃত্যুদ-প্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার পাকিস্তানে অবস্থান করছে। পাকিস্তানের জঙ্গী সংগঠনগুলো বাংলাদেশে তাদের অনুসারী হিসেবে জামায়াত-শিবির ক্যাডারদেরই অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। জামায়াতের বড় খুঁটি যুক্তরাষ্ট্র। তারা জামায়াতের সন্ত্রাসী ও জঙ্গী তৎপরতা সম্পর্কে অবহিত হলেও সে সম্পর্কে কোন বাক্য ব্যয় করে না। বরং জামায়াতকে মডারেট ইসলামী দল হিসেবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতরা সার্টিফিকেট দিয়ে এসেছেন। পাকিস্তানভিত্তিক এই দলটির প্রতি তাদের মনোভাব পরিবর্তন হয়েছে এমনটি শোনা যায় না। অথচ বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে বাংলাদেশে জঙ্গী তৎপরতা শুরু হয়। মধ্যপ্রাচ্যে আইএসের জন্মলাভের অনেক আগেই বাংলাদেশে জঙ্গী সংগঠন গড়ে ওঠেছিল জামায়াতের তত্ত্বাবধানে। জেএমবি, হিযবুত তাহরীর, হুজি ইত্যাদি নানা নামের সংগঠনগুলো গড়ে তোলার নেপথ্যে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা ও তালেবানসহ অন্য জঙ্গী সংগঠনগুলো সহায়তা করেছিল। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের তালেবানের সঙ্গে এদের সংযোগ ঘটে। পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইএ’র তত্ত্বাবধানে এদের অনেকে জামায়াত-বিএনপি সরকার আমলে দেশে অনুপ্রবেশ করে। বাংলা ভাইদের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিষ্ঠিত হয় জেএমবির। রাজনৈতিক শক্তির পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া যেখানে পাড়ার মাস্তান, সন্ত্রাসীর উত্থান ঘটতে পারে না, ক্যাডার গড়ে উঠে নাÑ সেখানে জঙ্গী সংগঠনগুলো রাজনৈতিক দল নামক মাতৃসংগঠনের সমর্থন ছাড়া বিস্তার লাভ করার কথা নয়। এদের দাঁড়াবার জায়গাটা তো করে দিতে হয়েছে। নতুবা একক শক্তিতে সশস্ত্র হয়ে জঙ্গীপনা করা দুঃসাধ্য। যে ইসলামী ছাত্রশিবির দেয়াল লিখন করত, ‘এসো তরুণ সত্য ও ন্যায়ের পথে’ সেটা যে আদতে ছিল ভণিতা, তা প্রমাণ হয় যখন সেøাগানটির বাস্তবরূপ দেখা যায়। এখন তো ‘এসো তরুণ জঙ্গী ও মানুষ হত্যার পথে’Ñ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হচ্ছে। তারা ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে মানবতাবিরোধী কাজকর্ম করছে। এরা সবকিছুকে চ্যালেঞ্জ জানাবার ক্ষমতা রাখে না। কারণ এদের পক্ষে কোন জনসমর্থন গড়ে ওঠেনি। যুবকদের ফুঁসলিয়ে তাদের মনে উগ্র ধর্মান্ধতা ও প্রতিহিংসার বিষবীজ বপন করে নরসংহারে লেলিয়ে দেয়ার পেছনে নিশ্চিতভাবেই একাত্তরের পরাজিত শক্তিগুলোর ইন্ধন ও চক্রান্ত রয়েছে। ধর্মীয় মোড়কে মধ্যপ্রাচ্যের হিংসার কালো মেঘ এদেশে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা তারা চালাতে পারছে না। কারণ এদেশের মানুষ পাকিস্তান যুগ থেকেই জামায়াতের রাজনীতিকে বিশেষত মওদুদীবাদকে বর্জন করে আসছে। এরপরে একাত্তরে এদের নরঘাতকরূপ দেশবাসী দেখেছে। একুশ শতকে এরা ভয়াবহরূপ ধারণ করেছে। এদের বিষবৃক্ষের ফল ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বেগম জিয়া ও তার দলের জন্য। খুনী নরঘাতক যুদ্ধাপরাধীরা বিএনপি নামক নানা মত ও পথের দলটিকে গ্রাস করেছে এমনভাবে যে, তার থেকে বেরিয়ে আসার সব পথই আজ রুদ্ধ হয়ে পড়েছে বেগম জিয়ার জন্য। তাই তিনিও ধর্মকে বর্ম করে মাঝে মধ্যেই ‘ধর্মরক্ষায়’ অবতীর্ণ হন। ‘মসজিদে উলুধ্বনি শোনা যাবে’ মার্কা অভব্য এবং ধর্মকে হেয় করা বক্তব্য তিনি এখনও দিয়ে আসছেন। ধর্মের নামে যা চালাতে চান, তিনি ও জামায়াত, তা যে আসলে ধর্ম নয়, তা সাধারণ বোধসম্পন্ন মানুষকে সম্ভবত বুঝিয়ে দিতে হয় না। ধর্মকে কেন্দ্র করে যত হানাহানির চেষ্টাই হোক না কেন, তার মূলে রয়েছে এক ধূম্রজাল। একদল সুযোগ সন্ধানী, ক্ষমতালোভী দুর্বৃত্ত ধর্মের নামে রোজ ফালি ফালি করে কাটছে বিশ্ব মানবতাকে। ধর্মের নামে তারাই ওই ধূম্রজাল বুনে আসছে। তারাই বাষ্পাচ্ছন্ন করে রাখে ধর্মের ধারণাকে। ধর্ম-অধর্মের সীমারেখাটা অস্পষ্ট করার চেষ্টা থাকে যেন। সেই ধোঁয়াশার আড়ালকে ব্যবহার করে তারা হিংসা ছড়ায়, বিদ্বেষ ছড়ায়, ছড়ায় রক্ত। ধর্মের আড়ালে তা নয়। জানে এদেশবাসী। আর তাই জামায়াতের রাজনীতি মানুষ ধারণ করতে চায় না। বেগম খালেদা জিয়া তারই পোষ্য জঙ্গীদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার যে ডাক দিয়েছেন, তা বিস্ময়কর মনে হতে পারে কারও কারও কাছে। জঙ্গীদের মূল জামায়াতকে ছেড়ে আসার জন্য যতই পীড়াপীড়ি করুক সরকারী দল, এমনকি বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অধ্যাপক, তিনি তা করতে পারছেন না, করবেনও না। জামায়াতবিহীন বেগম জিয়া সম্পূর্ণ অসার। যুদ্ধাপরাধীদের লালন-পালন ছাড়া তার টিকে থাকার পথ করুণ ও কঠিন। তাই তিনি কাউন্সিল অধিবেশনের চার মাস পর যে কমিটি ঘোষণা করলেন, তাতে দ-িত যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে সে দেশের সংসদে সাকা চৌধুরীকে বলা হয়েছিল। তার বংশধরদের খালেদা উপেক্ষা করেননি, করতে পারেন না। গুলশানের বদ্ধ প্রকোষ্ঠে অন্ধকারে বসে বেগম জিয়া ব্যর্থকাম মানুষের মতো দেশজুড়ে অনর্থ ঘটাতে চান। কিন্তু তা যে অসম্ভবের পায়ে মাথা কুটে মরবে, তা হয়ত বোঝেন না। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের শরণার্থীদের কলকাতায় অবস্থান নিয়ে নির্মিত উমাপ্রসাদ মৈত্রর ‘নয়া মিছিল’ ছবিতে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া গানটি মনে পড়ছেÑ ‘দাও দাও সূর্য এনে দাও, বন্ধ ঘরের অন্ধকার ঘুচাও।’ বেগম জিয়ার সেই অন্ধকার ঘুচাতে প্রয়োজন আজ তারুণ্যের জয়গানে মুখরিত সমাজ গড়ে তোলা।
×