ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এডাবের মতবিনিময় সভা

বিপথগামী তরুণ প্রজন্মকে যে কোন মূল্যে উগ্রপন্থা থেকে ফেরাতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৮ আগস্ট ২০১৬

বিপথগামী তরুণ প্রজন্মকে যে কোন মূল্যে উগ্রপন্থা থেকে ফেরাতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কতিপয় তরুণ বিভ্রান্ত হলেও তরুণ সমাজ বিভ্রান্ত নয়, তাদের হৃদয়ে প্রেম ও করুণা আছেÑ তারা মানবিক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিভ্রান্ত তরুণদের অপকর্মের ফল সমগ্র তরুণ সমাজকেই বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। গুটিকয় যুবকের কুকর্মের ফল ৫ কোটি যুবক বয়ে বেড়াতে পারে না, তাই তাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। এমনকি ডাক দিতে হবে বৃহত্তর গণপ্রতিরোধের। মানবিকভাবে শক্তিশালী হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে জঙ্গীবাদ। যে কোন মূল্যে উগ্রপন্থা থেকে বিপথগামী তরুণ প্রজন্মকে ফিরিয়ে আনতে হবে। যুক্তিবাদী শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে তাদের। রবিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সিবিসিবি মিলনায়তনে ‘বিভ্রান্ত তরুণ সমাজ ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। চলমান উগ্র জঙ্গী তৎপরতা ও সহিংসতা প্রতিরোধের লক্ষ্যে দেশে কর্মরত বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাসমূহের সমন্বয়কারী সংগঠন এডাব এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও এনজিও কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম বলেন, জঙ্গীবাদ কেবল বাংলাদেশের একার সমস্যা নয়, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা দূর করতে হলে সামগ্রিক রাজনীতি নিয়েও ভাবতে হবে। দেশের সব তরুণ বিভ্রান্ত নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, কতিপয় তরুণ আজ বিভ্রান্তির দিকে পা বাড়িয়েছে। কারণ তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে হতাশ। নীতিহীন শিক্ষা, আদর্শহীন রাজনীতি তাদের বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। যারা বিভ্রান্ত হচ্ছে তারা জানে না কেন তারা এই ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হচ্ছে। বিপথগামী তরুণদের উগ্রপন্থা থেকে যে কোন মূল্যে আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, জঙ্গীবাদ কোন ধর্মের ব্যাপার নয়, এটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ওপর জোর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে এমনভাবে শিক্ষা দিতে হবে যাতে তাদের মধ্যে যুক্তিবাদী মানবিকতা গড়ে ওঠে। বাউশির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবা বেগম বলেন, সমাজের বর্তমান পরিস্থিতি সন্তানকে এমনটা বুঝাতে সক্ষম হচ্ছে যে, তোমার বাবা-মা এর চেয়ে বেশি খরচ করতে পারত। এতে বোঝা যায় খরচের প্রবণতা থেকেও সন্তানের মধ্যে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়। এক্ষেত্রেও আমাদের সচেতন হতে হবে। সন্তান কোন পরিবেশে, কার সঙ্গে বেড়ে উঠছে তাও ভেবে দেখা দরকার রয়েছে। সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, কতিপয় তরুণ বিভ্রান্ত, তরুণ সমাজ বিভ্রান্ত নয়। আজ ওই বিভ্রান্ত তরুণদের অপকর্মের ফল সমগ্র তরুণ সমাজ বয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ জঙ্গীদের বিচারের জন্য দ্রুতবিচার আইন নেই। জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে সমাজের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জয়ন্ত অধিকারী বলেন, সমগ্র জাতির ওপর আজ যে আঘাত তা সামগ্রিকভাবেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এক্ষেত্রে এনজিও সংস্থার ভূমিকা রয়েছে। তাদের আরও সোচ্চার হতে হবে। কতিপয় বিভ্রান্ত তরুণের কাছে পুরো তরুণ সমাজ কেন পরাজিত হবেÑ তা তরুণ সমাজকেও ভাবতে হবে। তাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, ধর্মের মানবিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। সামাজিক বৈষম্য হ্রাস করে যুক্তিভিত্তিক সমাজ গঠন সম্ভবপর হলে দেশ উগ্রবাদ থেকে মুক্তি পাবে আমাদের বিশ্বাস। এডাবের চেয়ারপার্সন জয়ন্ত অধিকারীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এডাবের সাবেক চেয়ারপার্সন আব্দুল মতিন, ভার্কের নির্বাহী পরিচালক শেখ আব্দুল হালিম, বাংলাদেশ যুব ফেডারেশনের মহাসচিব একেএম নেয়ামত উল্লাহ বাবু ও অধ্যাপিকা সেলিনা আক্তার।
×