ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৃষ্টি বাড়বে ॥ বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৮ আগস্ট ২০১৬

বৃষ্টি বাড়বে ॥ বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ব্যাহত হওয়ার  আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। এতে দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে বন্যা ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশে উজানের পানি প্রবল বেগে প্রবেশ করছে। বায়ুচাপের তারতম্য বেশি থাকায় উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে উপকূলীয় জেলাসমূহ। রবিবার আবহাওয়াবিদ মোঃ রাশেদুজ্জামান জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ-চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে। এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী রিপন কর্মকার জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা,গঙ্গা-পদ্মা ও সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা এবং সুরমা-কুশিয়ারানদ-নদীসমূহের পানি সমতলের হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মানদী সংলগ্ন, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও শরিয়তপুর জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। আর ঢাকার আশপাশের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা (নারায়ণগঞ্জ) প্রভৃতি নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। রবিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পর্যবেক্ষণাধীন ৯০টি পানি স্টেশন সমতলের মধ্যে ৭৪টি পয়েন্টে পানি কমছে; এখন বিপদসীমার ওপরে মাত্র ৯টি পয়েন্টে পানি বয়ে যাচ্ছে। তবে রবিবারও আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়ীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে ২১ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরীর পানি এলাসিনে ৬৫ সে:মি: ও জাগির স্টেশনে ৪৫ সে:মি:, লক্ষ্যা নদীর পানি নারায়ণগঞ্জে ১০ সে:মি:, কালিগঙ্গার পানি তারাঘাটে ৪৭ সে: মি:, পদ্মার পানি গোয়ালন্দে ২৪ সে: মি:, ভাগ্যকূলে ৩ সে:মি: ও সুরেশ্বরে ২৫ সে:মি:, তিতাস নদীর পানি ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমী বায়ুর বর্ধিতাংশের অক্ষ রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি থেকে প্রবল রয়েছে। আর আজ সোমবার খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণের আভাসও রয়েছে।
×