ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে বেল্লাল বাহিনীর হাতে জিম্মি পাঁচ গ্রামের মানুষ

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৮ আগস্ট ২০১৬

বাউফলে বেল্লাল বাহিনীর  হাতে জিম্মি পাঁচ গ্রামের মানুষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ৭ আগস্ট ॥ বাউফলের নওমালা ইউনিয়নের ৫ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ বেল্লাল ওরফে রামদা বেল্লালের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। বেল্লাল বাহিনীর অত্যাচারে কয়েকটি পরিবার এলাকা ছেড়ে অনত্র চলে গেছেন। গত ইউপি নির্বাচনের সময় বেল্লালের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা ৪২টি বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। ওই ইউপির আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট কামাল হোসেন বিশ্বাস অভিযোগ করেন, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদারের ছত্রছায়ায় থেকে বেল্লাল ও তার বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় নানা ধরনের অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করছে। বেল্লালের ভয়ে তার আপন চাচা আবদুর রশিদ ব্যাপারী গ্রাম ছেড়ে অনত্র চলে গেছেন। কলেজ পড়ুয়া এক চাচাত বোন (১৮) তার দ্বারা ধর্ষিত হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। সম্প্রতি নওমালা আবদুর রশিদ খান ডিগ্রী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর এক কলেজছাত্রী (১৮) প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বেল্লাল প্রকাশ্য দিবালোকে ওই ছাত্রীকে মারধর করে শ্লীলতাহানি করেছে। এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওই ইউনিয়ন কমিটি সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেনকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ধরে নিয়ে ইট দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেঁতলে দিয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে বেল্লালের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নগরের হাটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় বাধা দেয়ায় কবির হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতাকে ওই বাহিনী কুপিয়ে জখম করে। ওই যুবলীগ নেতা বর্তমানে বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট কামাল হোসেন বিশ্বাস আরও অভিযোগ করেন, গত ইউপি নির্বাচনের সময় বেল্লাল ওরফে রামদা বেল্লাল ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাদা হাওলাদারের পক্ষ নিয়ে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি রত্তন আলী মৃধা, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক কবির মৃধাসহ সহযোগী সংগঠনের ৪২ নেতাকর্মী ও সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। এই বাহিনীর সদস্যরা নওমালা আবদুর রশিদ খান ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ আবদুল মালেকের বাড়িতে ব্যাপক তা-ব চালিয়ে ভাংচুর করে। বেল্লাল ওরফে রামদা বেল্লাল আদাবাড়িয়া ইউপির স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আশ্রাফ ফকির হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। তার ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে থানা ও কোর্টে ৮-১০টি মামলা রয়েছে। বেল্লাল বাহিনীর হাতে ওই ইউপির নওমালা, বটকাজল, ম্যেশাদি, পূর্ব নওমালা ও নিজবটকাজল গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়লেও প্রাণভয়ে তারা কোন প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।
×