ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চীন-ব্রিটেন সম্পর্কে অনিশ্চয়তার ছায়া

পরমাণু প্রকল্প অনুমোদন বিলম্বিত করলেন তেরেসা

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ৮ আগস্ট ২০১৬

পরমাণু প্রকল্প অনুমোদন বিলম্বিত  করলেন তেরেসা

তেরেসা মে’র নেতৃত্বাধীন ব্রিটেনের নতুন সরকার হিঙ্কলে পয়েন্ট পরমাণু স্থাপনার অনুমোদন বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে চীনের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে দূরত্ব তৈরির ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তেরেসার পূর্বসূরী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের প্রধান অর্থনৈতিক নীতিতে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। খবর এএফপির। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত বছর ব্রিটেন সফরে এলে ক্যামেরন তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেন। সরকারী ব্যয় অতিরিক্ত কাটছাঁটের ফলে ব্রিটেনের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন দুর্বল। তাই চীনের বিনিয়োগ প্রয়োজন ব্রিটেনের। জিনপিংয়ের ওই সফরে চীনের সঙ্গে ৫৩০ কোটি ডলারের কয়েকটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে হিঙ্কলে পয়েন্ট পরমাণু স্থাপনাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ব্রিটেনে এক প্রজন্মের মধ্যে প্রথম কোন পরমাণু জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্র হতো এটি। ক্যামেরন বলেছিলেন, ব্রিটেন পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে চীনের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হতে চায়। জুন মাসে ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে গণভোটের রায় অনুকূলে না আসায় ক্যামেরন পদত্যাগ করেন। গত মাসের ১৩ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তেরেসা। পরমাণু কেন্দ্র নিয়ে ২৯ জুলাই চীনের সঙ্গে চুক্তি সই স্থগিত করেন তেরেসা। সম্ভবত সেপ্টেম্বরে সেটা হতে পারে। এর ফলে এখন চীনের সঙ্গে ব্রিটেনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে অনিশ্চয়তার পথে গেল। এরকম এক সময় তেরেসা এ সিদ্ধান্ত নিলেন ব্রেক্সিট বা ইইউ ছাড়ার পক্ষে রায় আসার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির সঙ্গে ব্রিটেনের সঙ্গে সম্পর্ক যখন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। লন্ডনের কিংস কলেজের চীন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্রফেসর কেরি ব্রাউন মনে করেন, ‘সরকার কাজটি ঠিক করেনি।’ তিনি মনে করেন, ‘এই মুহূর্তে ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য ব্রিটেনের আরও নিজেকে উন্মুক্ত করা উচিত ছিল।’ বিষয়টি নিয়ে কিছুটা ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে চীনের গণমাধ্যমেও। বলা হয়েছে, এর ফলে চীন-ব্রিটেন সম্পর্কে ‘সুবর্ণ যুগের’ ওপর অনিশ্চয়তার ছায়া পড়ল। অন্যদিকে ব্রিটিশ গণমাধ্যম চুক্তি স্বাক্ষর পিছিয়ে যাওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে। রক্ষণশীল ঘেঁষা সংবাদপত্রগুলো মনে করে ব্রিটিশ অবকাঠামোগুলোর সঙ্গে চীনের অধিক সংশ্লিষ্টতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হানিকর। এর আগে ২৮ জুলাই পরমাণু প্রকল্পের অপর গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ফ্রান্সের বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানি ইডিএফের সঙ্গে ব্রিটেনের চুক্তি হয়। ইডিএফের সঙ্গে চুক্তি হলেও সিংহভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিটির দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্রান্স সরকার প্রকল্পের ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছে। কারণ দীর্ঘ মেয়াদে নিজেদের পরমাণু শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্যই ফ্রান্স ব্রিটেনের ওই প্রকল্পে আগ্রহ দেখিয়েছে।
×