ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শৈশবের দারিদ্র্যই অনুপ্রেরণা ফারাহর

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৭ আগস্ট ২০১৬

শৈশবের দারিদ্র্যই অনুপ্রেরণা ফারাহর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুতে জন্ম হলেও শৈশবের ৮ বছর কাটিয়েছেন ডি’জিবুতির এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে। টিনের চালা দেয়া এক ঝুপড়ি ঘরে দারিদ্র্যর মধ্যেই বড় হয়েছেন মোহাম্মদ মুক্তার জেমা ফারাহ, যাকে সবাই এখন মোঃ ফারাহ বলেই চেনেন। ৩৩ বছর বয়সী এ দূরপাল্লার দৌড়বিদ অনেক অনুপ্রাণিত হন, যখন ছোটবেলার সেই আটটি কঠিন বছর মনে পড়ে। আর তখনই জেতার জন্য হয়ে ওঠেন আরও দুরন্ত। এই বিষয়গুলো নিজের নতুন আত্মজীবনীমূলক বই ‘টুইন এ্যামবিশন্স’ লিখছেন ব্রিটিশ এ দৌড়বিদ। তিনি চান নিজের উত্থানের ঘটনা জানিয়ে বাচ্চাদের অনুপ্রাণিত করতে। এখন অলিম্পিকে অংশ নিতে রিও ডি জেনিরো অবস্থান করছেন ফারাহ। গত অলিম্পিকে ৫ হাজার ও ১০ হাজার মিটারে স্বর্ণজয়ী এ দৌড়বিদ যেভাবেই হোক আবার ডাবল জিততে চান। মৌসুম শেষ করতে চান সেপ্টেম্বরে ‘গ্রেট নর্থ রান’ এ অংশ নিয়ে। সেখানে কৌতুক করার জন্য পাশাপাশি দৌড়াবেন জীবনসঙ্গিনী তানিয়া নেলও। ৮ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে চলে এসেছিলেন ফারাহ বাবার সঙ্গে। এরপর থেকেই বদলে গেছে তার জীবন। আফ্রিকার ছোট্ট দেশ ডি’জিবুতির প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা এ দৌড়বিদ পড়ে হয়ে গেছেন ব্রিটিশ নাগরিক। আর একইসঙ্গে তিনি দেশটির পক্ষে ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে ৫০০০ ও ১০০০০ মিটারে স্বর্ণপদক জিতে গৌরব অর্জন করেছেন। আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপস আসরের গত দুই আসরে ডাবলসহ জিতেছেন ৫ স্বর্ণ ও ১ রৌপ্য। এবার রিও অলিম্পিকেও দুটি স্বর্ণপদকই ধরে রাখতে চান তিনি। এ বিষয়ে ফারাহ বলেন, ‘আমার অনুশীলন খুব ভালভাবেই চলছে এখনও। আমি নিজেকে প্রস্তুত করছি। গত তিন সপ্তাহ ধরেই আমি অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। সেটা মনে হয় আরও তিন সপ্তাহের মতো চালিয়ে যেতে হবে। এটা ভাবলেই অলিম্পিক আমার জন্য সহজ হয়ে যাবে, নয় তো হবে চাপের।’ লন্ডন অলিম্পিকে যখন ডাবল জিতলেন তখন তার গর্ভবতী স্ত্রী ও প্রথম কন্যা রাইয়ানা উপস্থিত হয়েছিলেন। মাত্র দুই সপ্তাহ পরেই যমজ কন্যার (আমানি ও আয়িশা) পিতা হন ফারাহ। গত বছর অক্টোবরে প্রথম পুত্র হুসেইনের বাবাও হয়েছেন। জীবনটাই তাই রঙ্গিন হয়ে গেছে ফারাহর। কিন্তু এখনও দৌড় চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে মাঝে ছোট্ট আমানি প্রশ্ন করে, ‘বাবা, তোমার দৌড়াতে হবে কেন? তুমি কখন এটা থামাবে? এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাবারা দৌড়ায় বাসায় ফিরে ভাল থাকার জন্য। সে কারণেই আমি এত কঠোর পরিশ্রম করি। আর এত দ্রুত থামতেও চাই না। শৈশবের দারিদ্র্যপীড়িত জীবনটা আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমি সেজন্য বাচ্চাদের জন্য কিছু লিখে জানাতে চাই- আমি কোথায় ছিলাম এবং কিভাবে আমি এখনকার অবস্থানে আসলাম। সেজন্য আমি একটি ডকুমেন্টারিও করার পরিকল্পনা নিয়েছি।’
×