ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রিওতে ৪ ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলে দিয়ে শেষ চ্যালেঞ্জের শুরু কিংবদন্তি এ সাঁতারুর

জলে নামছেন জলদানব ফেলপস

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৭ আগস্ট ২০১৬

জলে নামছেন জলদানব ফেলপস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লন্ডন অলিম্পিকের পরেই অবসরে চলে গিয়েছিলেন। তবে জলে ঝড় তোলা জলদানব মাইকেল ফেলপস মায়াটা ছাড়তে পারেনি। ২০১৪ সালের এপ্রিলে আবার ফিরলেও পুরনো ফেলপসকে দেখা যায়নি। এমনকি ২০১৫ সালের বিশ্ব সাঁতার প্রতিযোগিতায়ও যুক্তরাষ্ট্র দলে সুযোগ পাননি। কিন্তু হাল ছাড়েননি বাটারফ্লাই ইভেন্টে অপ্রতিরোধ্য এ সাঁতারু। ২২ অলিম্পিক পদকজয়ী ফেলপস ঠিকই ফিরেছেন স্বরূপে। এবার সেটা প্রমাণ করার অপেক্ষা। ক্যারিয়ারের পঞ্চম অলিম্পিককে তিনি নিজের শেষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। নামছেন আজই। ব্যক্তিগত তিনটি ইভেন্ট ছাড়াও আছে দলগত তিন ইভেন্টে এবার অংশ নেবেন এ জীবন্ত অলিম্পিক কিংবদন্তি। বাংলাদেশ সময় অনুসারে আজ ভোরেই পুরুষদের দলগত ৪ী১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে নামছেন তিনি। ক্রীড়াক্ষেত্রে একটি কথা আছেÑ ‘ফর্ম ইজ টেম্পোরারি বাট ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট।’ এই অমোঘ বাণীর প্রমাণ হয়ে এবার বিশ্বের সামনে দাঁড়িয়ে ফেলপস। অবসর ভেঙ্গে দুই বছর পর ফিরে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন আরেকটি অলিম্পিকে অংশ নেয়ার। যখন অবসরটা নিলেন সবাই বিস্মিত ও হতচকিত হয়ে পড়েছিল, কারণ দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন ২৯ বছর বয়সী এ সাঁতারু। অনায়াসে আরেকটি অলিম্পিকে অংশ নিতেই পারেন। বিষয়টা পরে উপলব্ধি করেই ফিরেছেন। এখন ৩১ বছর বয়সে রিও অলিম্পিককে নিজের শেষ চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন তিনি। কারণ এ অলিম্পিকে ঠাঁই করে নেয়ার জন্য অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে তাকে। নতুন করে শুরু মানেই যেন গোড়া থেকে যাত্রা। সেটাই হয়েছে ফেলপসের জন্যই। এ কারণে এমনকি গত বছর বিশ্ব সাঁতারে যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক দলেও ঠাঁই হয়নি। অবশ্য, মদ্যপ হয়ে গাড়ি চালনা সংক্রান্ত একটি মামলার কারণে নিষিদ্ধও হয়েছিলেন। সবমিলিয়ে বেশ ঝঞ্ঝামুখর একটি সময় পার করেছেন গত দুই বছরে। কিন্তু ‘ফ্লাইং ফিশ’ নাম পাওয়া ফেলপস আবারও হয়ে গেছেন জলের উড়ুক্কু মাছ। বাটারফ্লাই ইভেন্টে অপ্রতিরোধ্য হওয়ার কারণেই এ নামটি পেয়েছেন তিনি। বিশ্ব সাঁতারে সুযোগ না পেলেও এরপর টানা অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে তিনি আবারও পুরনো গতি ফিরে পান। এই জলদানব পরে মার্কিন জাতীয় সাঁতারের ১০০ ও ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে এবং ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে স্বর্ণ জয় করেন। তিনটিতেই তিনি জেতেন বছরের লিডিং টাইমিং নিয়ে। অলিম্পিক ট্রায়ালে অবশ্য প্রত্যাশিত নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি। সে কারণে মাত্র তিনটি ব্যক্তিগত ইভেন্ট ১০০ ও ২০০ মিটার বাটারফ্লাই এবং ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতেই অংশ নেবেন এবার রিও অলিম্পিকে। ফ্রিস্টাইলের কোন ব্যক্তিগত ইভেন্টে সুযোগ পাননি। তবে প্রথম মার্কিন পুরুষ সাঁতারু হিসেবে তিনি পাঁচ অলিম্পিকে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেন। সার্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এর আগে শুধু মহিলা সাঁতারু ডারা টোরেস ৫ অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন। এবার ফেলপসের দলগত ইভেন্টগুলোর মধ্যে আছে ৪ী১০০ ও ৪ী২০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলে এবং ৪ী১০০ মিটার মিডলে রিলে ইভেন্ট। পঞ্চমবারের মতো এর মধ্যে দলগত ৪ী১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলে দিয়েই এবার অলিম্পিকের যাত্রা শুরু করবেন ‘বাল্টিমোর বুলেট’ খ্যাত এ সাঁতারু। এই ইভেন্টে প্রথম ২০০৮ বেজিং অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন এবং স্বর্ণও জিতেছিলেন। কিন্তু লন্ডন অলিম্পিকে রৌপ্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। এবার এ ইভেন্টে স্বর্ণ জয়ের প্রত্যাশা ফেলপসের। রবিবার দিবাগত ভোর রাতে হবে এর ফাইনাল। এ বিষয়ে ফেলপস বলেন, ‘এটা দারুণ ব্যাপার যে আমি পঞ্চম অলিম্পিকে এসেছি। এটা অবশ্যই অনেক বড় একটা পাওয়া। কিন্তু আমি আরও চাই। আমি যখনই পুলে নামি তখনই আমার মনে হয় আরও দ্রুত আমার সাঁতরানো উচিত। কারণ আমার মনে হয় যে আরও দ্রুত না যেতে পারলে আমি জিততে পারব না। আমি সেজন্য অনেক অনুশীলন করি। সেটা বাদ থাকে না ক্রিসমাসের দিন, জন্মদিন এবং ছুটির দিনেও। কারণ আমার যে সামর্থ্যটা আছে সেটার পুরোটাই আমি প্রয়োগ করতে উদগ্রীব থাকি। সবাই আমাকে মার্ক স্পিটজের সঙ্গে তুলনা করে। কিন্তু আমার মনে হয় আমি কখনও তাকে হারাতে পারতাম না। সে কারণে আমিই একমাত্র মাইকেল ফেলপস হয়ে থাকতে চাই, দ্বিতীয় কোন স্পিটজ নয়।’
×