ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বুড়িয়ে যাওয়া শিশু বায়েজিদ ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৭ আগস্ট ২০১৬

বুড়িয়ে যাওয়া শিশু বায়েজিদ ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাত্র চার বছর বয়সে বার্ধক্যে নুয়ে পড়া মাগুরার শিশু বায়েজিদ সিকদারকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টার দিকে তাকে সেখানে নেয়া হয়। বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডাঃ আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ভর্তির পরপরই তার শরীরের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রফেসর আব্দুল কালাম আজাদ জানান, ‘শিশু বায়েজিদের শারীরিক গঠন দেখে অনেকে ধারণা করবে তার বয়স অনেক বেশি। কিন্তু তার বয়স মাত্র চার বছর। এরই মধ্যে সে বৃদ্ধ শিশু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আমরা চেষ্টা করব দ্রুত একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তার শারীরিক সমস্যা নির্ণয় করে ব্যবস্থা নেয়া। এরপর তার প্রকৃত রোগটি কি তা জানানো হবে। জানা গেছে, মাগুরা জেলার মহাম্মদপুর উপজেলার খালিয়া গ্রামের লাভলু সিকদারের ছেলে বায়েজিদের জন্ম ২০১২ সালের ১৪ মে। তার মা তৃপ্তি খাতুন। লাভলু জানান, বায়েজিদের বয়স চার বছরের কিছু বেশি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বায়েজিদ সিকদারের দিকে তাকালে চমকে উঠবেন যে কেউ। তার চার বছরের ছোট্ট দেহটার ওপর কেউ যেন বসিয়ে দিয়েছে আশি বছরের বৃদ্ধের মুখ। চাহনি, অঙ্গভঙ্গিও অনেকটা বৃদ্ধ মানুষের মতো। শরীর কুঁজো হয়ে গেছে। ঝুলে পড়েছে শরীরের চামড়া। ডাক্তারদের ধারণা, অত্যন্ত বিরল জটিল কোন জেনেটিক রোগে আক্রান্ত বায়েজিদ। এ ধরনের বিরল ‘জেনেটিক ডিজঅর্ডারে’ আক্রান্ত। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যাকে বলা হয়, প্রোজেরিয়া বা ‘হাচিনসন-গিলফোর্ড প্রোজেরিয়া সিনড্রোম’। পৃথিবীতে এ রোগে আক্রান্ত শতাধিক শিশু রয়েছে। মূলত এই রোগে আক্রান্তরা দ্রুত বুড়িয়ে যেতে থাকে। স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ছয়গুণ দ্রুত হারে। বায়েজিদ সিকদার ঠিক প্রোজেরিয়াতেই আক্রান্ত কিনা। সেটা এখনও নিশ্চিত করেননি চিকিৎসকরা। তবে বায়েজিদে সমস্ত লক্ষণই মিলে যায় প্রোজেরিয়ার যে লক্ষণ তার সঙ্গে। বায়েজিদের অস্বাভাবিক শারীরিক গঠন সম্পর্কে জানাজানি হওয়ার পর বিভিন্ন জনের পরামর্শে কয়েকদিন আগে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তার বাবা মা। পরে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
×