ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় বাণিজ্যমন্ত্রী

বিএনপি ঐক্যের কথা বলে বাংলার মানুষের সঙ্গে তামাশা করছে

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৭ আগস্ট ২০১৬

 বিএনপি ঐক্যের  কথা বলে বাংলার মানুষের সঙ্গে  তামাশা করছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ৬ আগস্ট ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিএনপি জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যের কথা বলে বাংলার মানুষের সঙ্গে তামাশা করছে। যারা মানবতাবিরোধী, যারা ৭১ এ মাকে হত্যা করেছে, বোনের ইজ্জত নিয়েছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, যে দলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত করেছে, সেই দলের সঙ্গে কখনও ঐক্য হতে পারে না। শনিবার দুপুরে ভোলার বাংলা স্কুল মাঠের ভাসানী মঞ্চে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জঙ্গীবাদবিরোধী সমাবেশে বাণিজ্যমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন। জঙ্গীবিরোধী এ সমাবেশে ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিতে সকাল থেকে ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেয়। এ সময় ভোলা বাংলা স্কুল মাঠসহ পুরো এলাকায় তিল ধারনের ঠাঁই ছিল না। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন ছিল স্বাধীন বাংলা হবে সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামলা সোনার বাংলার। আজ তার কন্যার নেতৃত্বেই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা হতে চলছে। কিন্তু আমার দুভাগ্য যারা ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল হাওয়া ভবন থেকে। যারা ২০১৩ সালে একটি বছর গোলজোগ সৃষ্টি করে উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করেছিল, অনেক মানুষকে হত্যা করে যারা ২০১৪ সালের নির্বাচনকে বানচাল করে একটি অনির্বাচিত সরকারকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। যারা ২০১৫ সালে ৯২ দিন ২৪ জন পুলিশকে হত্যা করে অনেক মায়ের কোল খালি করে দেশে অরাজগতা সৃষ্টি করে ব্যর্থ হয়েছে তারা আজকে গুপ্তহত্যার আশ্রয় নিয়েছে। গুলশানে হলি আর্টিজানে বিদেশীসহ ২২ জনকে হত্যা করেছে। শোলাকিয়া ঈদের জামাতে গুলি করে মানুষকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। কল্যাণপুরে ৯ জন বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ করার পরিকল্পনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। আজ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশব্যাপী জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে। সমস্ত জাতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। আর তার বড় প্রমাণ এই ভোলা। তিনি বলেন, ৭১ এ বঙ্গবন্ধুর ডাকে যেভাবে ঘরে ঘরে দুর্গ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। ঠেক সেইভাবে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে ঘরে ঘরে জঙ্গীবিরোধী দুর্গ গড়ে তুলে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করব। বাংলাদেশ জঙ্গীর স্থান নয়। এ সময় তিনি জঙ্গীবাদদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। এ সময় মন্ত্রী ২০০১ সালের নির্বাচন-পরিবর্তী অত্যাচারের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেদিন বিএনপি-জামায়াত জোটের নির্মম অত্যাচারের স্বীকার হয়েছিলেন সারা বাংলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আমার বাড়িতে ও গাড়িতে হামলা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আজকের মহামান্য রাষ্ট্রপতি সেদিন ভোলায় এসেছিলেন। তাকেও তখন মিটিং করতে দেয়া হয়নি। কিন্তু আমরা কোন প্রতিশোধ নেইনি। কারণ আমরা প্রতিহিংশার রাজনীতি করি না। ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি দোস্ত মাহামুদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক আব্দুল মমিন টুলু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোশারেফ হোসেন, সম্পাদক নজুরুল ইসলাম গোলদার। জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট জুলফিকার আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নকিব, এনামুল হক আরজু, সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব, শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি নাজিবুল্লাহ নাজু, সম্পাদক আলী নেওয়াজ পলাশসহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পরে শহরে সন্ত্রাসবিরোধী বিশাল একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে। পরে বাণিজ্যমন্ত্রী ভোলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন আয়োজিত জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী পৃথক মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
×