ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোন ঐক্য করতে যাই নাই ॥ কাদের সিদ্দিকী

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৬ আগস্ট ২০১৬

খালেদা জিয়ার সঙ্গে  কোন ঐক্য  করতে যাই নাই ॥  কাদের সিদ্দিকী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ার বিষয়ে ‘প্রস্তাব দিতেই’ তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। প্রস্তাবের বিষয়ে যদি দুই পক্ষের বনিবনা হয়, কেবল তখনই ঐক্য হবে। তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। প্রস্তাবের সব বিষয়ে একমত হতে হবে এমন কোন কথা নেই। তবে মানার মতো প্রস্তাবে কেউ অসম্মত হলে বনিবনা হবে না। এটা একটা বিয়ের ঘটকালীর মতো। বিয়ে হয় উভয়ের পছন্দে, রাজনীতিও হবে সে রকম। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বাড়িতে তার সঙ্গে হওয়া বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সাহচর্য পাওয়া এই রাজনীতিক বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমি কোন ঐক্য করতে যাই নাই। দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। উনি একটি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন, আমি বলব তিনি একটা ভাল কাজ করছেন। বৈঠকে প্রস্তাবের বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, সার্বিকভাবে জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রচেষ্টা নেয়া দরকার। সেখানে জামায়াত থাকবে না। তেমনি বঙ্গবন্ধুর সরকারকে উৎখাতের জন্য দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দায়ী গণবাহিনীও সেখানে থাকবে না। বিএনপি নেত্রীর সঙ্গে দুই ঘণ্টার বৈঠকে তাকে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছাড়া রাজনীতি করব না, জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতি করব না। খালেদা জিয়াকে জাতীয় নেতৃত্ব দিতে হলে প্রথমে স্পষ্টভাবে বলতে হবে যে, জামায়াত তার জোটে নেই। ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালনেরও সমালোচনা করেন বীর উত্তম খেতাবধারী এই মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বলেন, বৈঠকে আমি বলেছি, বঙ্গবন্ধু আমার অস্তিত্ব। বঙ্গবন্ধুকে গালাগালি করা যাবে না। তার রাজনীতি নিয়ে যদি কোন কথা হয়, তাহলে রাজনীতির সীমায় থেকে করবেন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতের দিনে খালেদা জিয়ার যদি প্রকৃত জন্মদিনও হয়, সেটা পালন করা চলবে না। সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী জুমার খুতবায় জঙ্গীবাদবিরোধী বক্তব্য ঠিক করে দেয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, দুর্বল কিছু লোক, তারা এটার (জঙ্গী) সঙ্গে ইসলামকে জড়ায়। আমি জানি না, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কেন নতুন খুতবা, তাদের নিজস্ব খুতবা দেয়ার জন্য এত তৎপর হয়েছে। এরাও কি জঙ্গীর সঙ্গে জড়িত কি না! খুতবা হাদিস-কোরানে স্পষ্ট আছে, তাই এটা সেভাবেই হওয়া উচিত। ভারতের বিতর্কিত ইসলামী বক্তা জাকির নায়েকের পিস টিভির সম্প্রচার বাংলাদেশে বন্ধের পর অনুমোদনহীন পিস স্কুল বন্ধের যে নির্দেশ সরকার দিয়েছে, তারও সমালোচনা করেন কাদের সিদ্দিকী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে জঙ্গীরা ধরা না পড়ে নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়েও বিএনপি নেতাদের সুরেই কথা বলেছেন এক সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, সবাইকে মেরে ফেলে গোপন তথ্য যাতে বের না হয়, এটার জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভেতরে এদের লোক আছে কী না আমার মধ্যে সন্দেহ হয়। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশে মাত্র দুইজন পুরুষ, আর সবাই অন্য লিঙ্গের মানুষ। আর এ কারণে তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দেশের ক্রান্তিকাল থেকে উত্তরণের চেষ্টা করা উচিত, তবে তা খালেদা জিয়াকে ‘বাদ দিয়ে নয়’। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন অবিসংবাদিত নেতা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বর্তমানে সেই অবস্থানে এসেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রধান জাতীয় নেতা।
×