ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অতিবৃষ্টি ও বন্যার প্রভাব

রাজধানীতে সবজি সরবরাহ কমেছে, দামও বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৬ আগস্ট ২০১৬

রাজধানীতে সবজি সরবরাহ কমেছে, দামও বেড়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আলু ছাড়া খুচরা বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। অতিবৃষ্টি ও বন্যার প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেতগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে রাজধানীতে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। যদিও শ্রাবণ-ভাদ্রমাসের এই সময়টায় আকাল থাকে সব জাতীয় সবজির। গ্রীষ্মকালীন মৌসুম শেষ হয়ে গেছে, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর শুরু হবে শীতকালীন শাক সবজির আবাদ। তাই নতুন সবজি না আসা পর্যন্ত আপাতত বেশি দাম দিয়ে কিনতে হবে এসব পণ্য। চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আটার দাম স্বাভাবিক রয়েছে। কমেছে চিনির দাম। ডিম ও রসুনের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। বাজারে মাছের সরবরাহ বেড়েছে। দেশীয় প্রজাতির দু’একটি মাছের দাম কমলেও ইলিশ বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। এদিকে, জাত ও মানভেদে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৩০ টাকা পর্যন্ত। আর ৫০ টাকার নিচে মিলছে না কোন সবজি। প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২২-২৫ টাকায়। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার এবং ফকিরাপুল বাজার ঘুরে দেখা গেছে কাঁচাপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ, বেগুনের দাম বেড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের। এছাড়া কয়েকটি সবজির দামও বেড়েছে। বরাবরের পাইকারি বাজারের তুলনায় স্থানীয় বাজারগুলোতে সবজি দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। কাওরান বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩৫ টাকা দামে। অন্যদিকে বিভিন্ন খুচরা বাজারগুলোতে প্রতিকেজি সবজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকায়। রাজধানীর স্থানীয় বাজারগুলোতে ঢেঁড়স, মুলা, ঝিঙা, জালি, বরবটি, ধুনদুল, পটল ও টমেটো বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫০-৭০ টাকা করে। এছাড়া কচুরমুখী ৬০, ধনেপাতা ১৬০, করলা ৬০, পেঁপে ৪০-৫০, শসা ৫০, গাজর ৫০, কাঁচকলা ৩০ টাকা হালি, লেবু ২০ টাকা হালি। এছাড়া বাজারে নতুন শিম পাওয়া যাচ্ছে প্রতিকেজি ১০০ টাকায়। কাঁচাপণ্যের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কাপ্তান বাজারে বিক্রেতা খলিল জনকণ্ঠকে বলেন, বন্যায়তো সব ভাইস্যা নিয়ে গেছে, দাম বাড়ব না? বাজারে মাল সরবরাহ নাই, দাম তো বাড়বেই। তবে সবজির দাম বাড়ায় বিরক্ত ক্রেতারা। ফকিরাপুল বাজারের সবজি ক্রেতা সালাম সেখ জানালেন, যেভাবে সবজির দাম বেড়ে যাচ্ছে তাতে আলু ছাড়া আর কিছু খাওয়া যাবে না। ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা হওয়ার খবর আসছে। এই বন্যায় সবজিক্ষেতগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দাম বাড়ছে। তবে পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে সবজির দাম দ্বিগুণ রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে তার। সঠিক দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের মনিটরিং টিম সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। এদিকে, কাঁচাবাজারে দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকলেও রাজধানীর বাজারে এ সপ্তাহে মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রয়লার প্রতিকেজি ১৪০-১৫০ টাকা। লেয়ার ১৮০ টাকা এবং আকারভেদে দেশী মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৪০ টাকা। পাকিস্তানী মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ২২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়। এছাড়া চলতি সপ্তাহে গরুর মাংস (বাজারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪২০-৪৫০ টাকা। খাসির মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭২ টাকা। মসুর ডাল (দেশী) মানভেদে ১৪০-১৫০ টাকা, (আমদানি) মানভেদে ১০০-১৩০ টাকা। মুগ ডাল (মানভেদে) ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের দাম গত সপ্তাহে যে দাম বেড়েছে তা স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতিকেজি সরু চাল মানভেদে ৪৪-৫৫, মাঝারি ৪০-৪৪ এবং মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৪ টাকায়। এছাড়া মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ বাজারে সরবরাহ বাড়লেও ইলিশ মাছের দাম কমছে না।
×