ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গলাচিপায় সরকারী খাল প্রভাবশালীদের দখলে

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৬ আগস্ট ২০১৬

গলাচিপায় সরকারী খাল প্রভাবশালীদের দখলে

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরআগস্তি বিটের চরনজির বনাঞ্চলের অভ্যন্তরের খালগুলো লিজ দেয়ার ক্ষেত্রে এলাকার প্রকৃত গরিব জেলেদের বঞ্চিত করা হয়েছে। বন বিভাগের একশ্রেণীর কর্মকর্তা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্রভাবশালীদের খালগুলো লিজ দিয়েছে এবং এক্ষেত্রে মন্ত্রী ও কয়েক এমপির নির্দেশ উপেক্ষা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। প্রভাবশালীরা খালগুলো লিজ নিয়ে বিষ দিয়ে মাছ নিধনসহ গরিব জেলেদের ধরা মাছ লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে অভিযোগ করেও গরিব জেলেরা কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। ফলে প্রত্যন্ত চরে বাস করা গরিব জেলেরা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, রাঙ্গাবালী উপজেলার চরনজির বনাঞ্চলের অভ্যন্তরে অন্তত ২৫-৩০টি বড় খাল এবং ছোট ছোট অসংখ্য উপখাল ও সরুনালা রয়েছে। গলাচিপা উপজেলার চরনজির এলাকায় বসবাস করা বহু গরিব জেলে পরিবার রয়েছে, যারা বছরের পর বছর বন বিভাগের কাছ থেকে খালগুলো একসনা লিজ নিয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু এ বছর অর্থাৎ গত চৈত্র মাস থেকে এলাকার প্রভাবশালী চক্র খালগুলো দখল নিতে মাঠে নামে। চরনজিরের গরিব জেলেরা অভিযোগ করেছে, তাদের অর্থাৎ গরিব জেলেদের নামে খালগুলো লিজ দেয়ার জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, মাহবুবুর রহমান এমপি ও পটুয়াখালী জেলা পরিষদের প্রশাসক খান মোশারেফ হোসেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া গরিব জেলেদের পক্ষে রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষস্থানীয় অনেকেই সুপারিশ করেছেন। কিন্তু এসব নির্দেশ-সুপারিশ উপেক্ষা করে স্থানীয় বন কর্মকর্তারা খালগুলো প্রভাবশালীদের লিজ ও দখল দিয়েছেন। গরিব জেলেদের পক্ষে বারেক মৃধা অভিযোগ করেছেন, প্রভাবশালীরা খালগুলো লিজ নিয়ে বিষ দিয়ে অবাধে মাছ নিধন করছে। বিষের তীব্র প্রভাবে অবস্থা এত ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, পানি পর্যন্ত ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বিষ ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। একই এলাকার আরেক গরিব জেলে হামিরুল ফকির অভিযোগ করেছেন, বনের অভ্যন্তরের সরুনালাগুলোতেও তাদের মাছ ধরতে বাধা দেয়া হচ্ছে। প্রভাবশালীরা অতিসম্প্রতি তাদের সোয়া লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে গেছে এবং আরও অন্তত এক লাখ টাকার মাছ বিষ দিয়ে মেরে ফেলেছে। এ বিষয়ে তারা আদালতে মামলাও করেছেন। জেলে মনির ফকির, আঃ জলিল, আঃ ছত্তার, জাহাঙ্গীর সরদারসহ কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, খালগুলোতে মাছ ধরতে না পেরে চরনজিরে শতাধিক জেলে পরিবার বর্তমানে অভাব অনটনে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে বন বিভাগের চরআগস্তি বিট অফিসার নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশের আগেই খালগুলো লিজ দেয়া হয়েছে। তারপরও জেলেরা যাতে মাছ ধরতে পারে, সে বিষয়টি সমন্বয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
×