ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিন মাস পরই ৫০ প্রাইমারী স্কুলের নলকূপ নষ্ট

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৬ আগস্ট ২০১৬

তিন মাস পরই ৫০ প্রাইমারী স্কুলের নলকূপ নষ্ট

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ৫ আগস্ট ॥ হোসেনপুরে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (পিইডিপি) আওতায় তিন বছর আগে উপজেলার ৭৯ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গভীর নলকূপ স্থ্াপন করা হয়। তবে এক মাসের মধ্যেই অকেজো হয়ে পড়ে অর্ধশতাধিক নলকূপ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি। এতে সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের (ডিপিএইচই) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে হোসেনপুর উপজেলার ৭৯ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গভীর নলকূপ স্থাপনের লক্ষ্যে ৭৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জের মেসার্স আওলাদ ট্রেডার্স ৪৯টি ও বরিশালের মেসার্স ডাইনামিক ট্রেডার্স ৩০টি নলকূপ স্থাপনের দায়িত্ব পায়। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০১৩ সালের জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যে এগুলোর কাজ সম্পন্ন করা হয়। তবে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানায়, স্থাপনের তিন দিনের মধ্যে অনেক স্কুলের নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। এভাবে প্রায় এক মাসের মধ্যে অর্ধশতাধিক নলকূপ নষ্ট হয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি স্কুল সরেজমিন পরিদর্শন করে নলকূপ নষ্টের সত্যতাও পাওয়া গেছে। হোসেনপুরের কেশেরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমাদুজ্জামান জানান, ‘স্থাপনের তিন দিন পরই গভীর নলকূপটি অকেজো হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকার লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।’ উত্তর গড়মাছুয়া মুক্তার উদ্দিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আল আমিন জানান, ‘বিদ্যালয়ের নলকূপটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ায় নিজ খরচে এটি কয়েকবার মেরামত করেছি। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন কাজ হয়নি।’ একইভাবে উপজেলার সাহেবের চর ভাটিপাড়া, ধুলঝুড়ি, চরজামাইল, ধনকুড়া, ঢেকিয়া, আশুতিয়া, মাধাখোলা, তারাপাশা প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভীর নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ফাটারেল, জিআই পাইপে থ্রেড না থাকা, পাইপ ভাঙাসহ বিভিন্ন কারণে এসব নলকূপে পানি উঠছে না। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নি¤œ মানের উপকরণ ব্যবহার করায় নলকূপগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। সরকার প্রতিটি নলকূপের জন্য এক লাখ টাকার ওপরে খরচ করেছে। অথচ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সুপেয় পানি পাচ্ছে না।’ এসব নলকূপ তদারকির দায়িত্বে থাকা ডিপিএইচই’র উপজেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম জানান, ‘নলকূপগুলো সচল করার জন্য সংশ্লিষ্ট দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দুবার কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে জরিপ করে অচিরেই এগুলো মেরামতের জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে।’
×