ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

হজ ফ্লাইট শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৫ আগস্ট ২০১৬

হজ  ফ্লাইট শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিজি-১০১১ নম্বরের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। সকাল ৮টা ৫ মিনিটে ৪০১ জন যাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে গেছে প্রথম ফ্লাইট। দুই মন্ত্রী হজযাত্রীদের বিদায় জানান। একই দিন দুপুর ২টা ৫ মিনিটে ৪১৯ জন, বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে ৪১৯ জন এবং রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে আরও একটি নিয়মিত ফ্লাইটে ৪১৯ জন হজযাত্রী ঢাকা ছেড়েছেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে হজ শুরু হওয়ার কথা। এবার বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় ৯১ হাজার ৭৫৮ জন ও সরকারী ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার মানুষ হজ করতে যাবেন। হজযাত্রীদের বিদায় জানানোর সময় বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বিমানের এমডি এবং চেয়ারম্যান দু’জনই এখানে রয়েছেন। এবার বিমান ফ্লাইট সিডিউল বজায় রাখবে বলে আমি আশা করছি। গত বছর মিনায় পদদলনের ঘটনার কারণে ফিরতি ফ্লাইটে সমস্যা হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এবার আশা করছি, যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে কোন সমস্যা হবে না। সৌদি আরবও এবার নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক রয়েছে জানিয়ে মেনন বলেন, আমরা আশা করব, হজযাত্রীরা অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যে থাকবেন এবং তাদের কোন অসুবিধা হবে না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিমানযাত্রাকে সবার জন্য নিরাপদ করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে নিরাপত্তার বিষয়টিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। সবাইকে চেক করা হচ্ছে। বিমানবন্দরের বাইরে এপিবিএন নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে মেনন বলেন, সবার আঙ্গুলের ছাপ রাখা হয়েছে, তথ্য রাখা হয়েছে। হজযাত্রীরা গিয়ে ফিরে আসবেন না, এমনটি হবে না। হজের টিকেট গুটিকয়েক এজেন্সিকে দেয়া হয়েছে এবং সেগুলো অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিমানমন্ত্রী বলেন, আমরাও অভিযোগ পেয়েছি। আশা করছি, সমস্যার সমাধান করতে পারব। ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আশা করি সবাই সুন্দরভাবে হজ পালন করে সুস্থভাবে দেশে ফেরত আসবেন। যারা বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় হজে যাচ্ছেন, তাদের সময়মতো পুলিশ ভেরিফিকেশন পেতে কোন সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দেন ধর্মমন্ত্রী। অন্যদের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব, বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিভিল এ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ে নির্বিঘেœ হজ ফ্লাইট পরিচালনার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়ছে। চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকেও এ বছর হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এবার বিশেষ হজ ফ্লাইট এবং নিয়মিত ফ্লাইটে মোট ৫১ হাজার যাত্রী হজ পালনে বিমানে করে জেদ্দা যাবেন। এসব যাত্রীকে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে পারাপারের জন্য বিমান ইতোমধ্যে নিজস্ব সুপরিসর বোয়িং ট্রিপল সেভন উড়োজাহাজ প্রস্তুত রেখেছে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটেও কিছু হজযাত্রী মক্কা শরীফ যাবেন। পবিত্র হজ্জের গুরুত ও ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিমান একটি সুন্দর হজ কার্যক্রম পরিচালনায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে দাবি করছে বিমান কর্তৃপক্ষ। দুই মাসব্যাপী হজ ফ্লাইট পরিচালনায় বিমান নিয়মিত ফ্লাইটসহ মোট ২৮১টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এর মধ্যে ২২০টি বিশেষ ফ্লাইট এবং ৬১টি নিয়মিত ফ্লাইট। ৪ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রি-হজে মোট ১৪৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। পোস্ট হজে ১৩৭টি ফ্লাইট চলবে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত। পাঁচ হাজার ২০০ জন সরকারী ব্যবস্থাপনার যাত্রীসহ মোট ৫১ হাজার যাত্রী হজ পালনের জন্য বিমানে করে জেদ্দা যাবেন। হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান ঢাকা-জেদ্দা উভয় স্থানেই বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করেছে। প্রত্যেক হজযাত্রী বিনামূল্যে ইকোনমি ক্লাসে সর্বাধিক দুটি লাগেজে ৪৬ কেজি, বিজনেস ক্লাসে দুই লাগেজে ৫৬ কেজি এবং কেবিন ব্যাগেজে সাত কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। প্রত্যেক লাগেজের ওজন ইকোনমি ক্লাসের জন্য ২৩ কেজি এবং বিজনেস ক্লাসের জন্য ২৮ কেজির বেশি হতে পারবে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য ৫ (পাঁচ) লিটার জমজমের পানি ঢাকায় নিয়ে আসা হবে এবং হাজীরা ঢাকায় ফেরত আসার পর তাঁদের তা দেয়া হবে। সঙ্গে করে কেউ পানি বহন করতে পারবেন না। এছাড়া যে কোন ধরনের ধারালো বস্তু যেমন ছুরি, কাঁচি, নেইলকাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলন, কান পরিষ্কারক সঙ্গে বহন করা যাবে না।
×