ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৮ দিনের রিমান্ডে ॥ গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড হাসনাত ও তাহমিদ

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৫ আগস্ট ২০১৬

৮ দিনের রিমান্ডে ॥ গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড হাসনাত ও তাহমিদ

শংকর কুমার দে ॥ রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গী হামলার সময়ে সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে জঙ্গীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে দেখা যাওয়া জঙ্গী হামলার মাস্টারমাইন্ড নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিম ও কানাডার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ হাসিব খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। এই দুই জনকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। এক মাস তিন দিন আগে গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গী হামলার পরের দিন জিম্মিদের সঙ্গে উদ্ধার করা হয় এই দুই জনকেও। বৃহস্পতিবার তাদের রিমান্ডে আনার মধ্য দিয়ে তারা এক মাস দুই দিন ধরে কোথায় আছেন সেই প্রশ্নের উত্তরও মিলল। গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর কোরীয় এক নাগরিকের গোপনে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর থেকেই হাসনাত করিম ও তাহমিদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষকের নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগ ওঠার পর হলি আর্টিজানের জিম্মি ঘটনায় তাকে জঙ্গীদের কয়েকজনের সঙ্গে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে হাঁটতে ও কথা বলতে দেখা যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। জঙ্গী হামলার সময়ে হাসনাত করিমকে জঙ্গীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে দেখা গেছে সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে। দুই বিদেশী মহিলার স্মার্টফোন হাসনাত করিমের হাতে দেখা যায়। ফোনসেট থেকে ‘উইকার ও থ্রিমা’ নামক মোবাইল এ্যাপস ডাউনলোড করে দেন জঙ্গীদের। এই এ্যাপসের মাধ্যমে জঙ্গীরা বিদেশীদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ছবি ও ভিডিওচিত্র মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক একটি উগ্রপন্থী সংগঠনের মুখপত্র ‘আমাক’ নিউজ এজেন্সির কাছে পাঠিয়ে দিতে সক্ষম হয়। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারী গোয়েন্দা সংস্থা সাইট ইন্টিলিজেন্সের স্বত্বাধিকারী রিটা কাৎসের কাছে ওইসব ছবি ও ভিডিও চলে যায়। কিলিং মিশন শেষে হাসনাত করিম ও তাহমিদকে জঙ্গী নিবরাস ইসলামের সঙ্গে অস্ত্র হাতে বেকারির ছাদে হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিমায় কথা বলতে দেখা যায়। হলি আর্টিজান বেকারির ভেতরে ও বাইরে থাকা কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও জঙ্গীদের ধারণ করা মোবাইলের ভিডিও থেকে এসব তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর বিষয়গুলো জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিব খানকে। গত ১ জুলাই গুলশানের জঙ্গী হামলার পর অন্যান্য জিম্মির সঙ্গে এই দুই জনকে উদ্ধারের পর গত এক মাস দুই দিন ধরেই পুলিশ বলেছে, জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা বাড়ি ফিরেনি, গোয়েন্দা হেফাজতেই আছেন। বৃহস্পতিবার তাদের রিমান্ডে আনার পর তারা কোথায় সেই প্রশ্নের অবসান ঘটেছে। তবে গুলশান জঙ্গী হামলার মাস্টারমাইন্ড হাসনাত করিম ও তার সহযোগী তাহমিদকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে ইতোমধ্যেই অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বৃহস্পতিবার দৈনিক জনকণ্ঠকে জানান, বুধবার রাতে গুলশান ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, গুলশান আড়ংয়ের সামনের রাস্তা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে গ্রেফতার করা হয় হাসনাত করিমকে। আর রাত পৌনে ৯টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাহমিদকে। ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে বৃহস্পতিবার হাসনাত করিম ও তাহমিদকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তাহমিদ হাসিব খান আফতাব বহুমুখী ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে রহিম খান শাহরিয়ারের ছেলে। তিনি কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং কানাডার স্থায়ী নাগরিক। তাহমিদ ১ জুলাই গুলশান হামলার দিনই দুপুরে ঢাকায় আসেন। জিম্মিদের সঙ্গে উদ্ধার করা হয় তাহমিদকে। হাসনাত করিমের বাবা মোহাম্মদ রেজাউল করিম। হাসনাত বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের দ্বৈত নাগরিক। ব্রিটেনের নাগরিক হলেও সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে এসে বাবার আর্কিটেক্ট ফার্মে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ঘটনার দিন মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে তিনি হলি আর্টিজানে পরিবার নিয়ে খেতে গিয়েছিলেন। যা বলা হয় রিমান্ডের আবেদনে ॥ গুলশান হামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম ও কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ হাসিব খানের রিমান্ড আবেদনে গুলশান হামলার সঙ্গে হাসনাত ও তাহমিদের কী ধরনের সংশ্লিষ্টতা জানানো হয়েছে আদালতকে। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, হাসনাত করিম নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিজবুত তাহরীরের একজন সক্রিয় সদস্য। বিভিন্ন সময় হাসনাতকে সাহায্য করে তাহমিদ। আবেদনে আরও বলা হয়, হলি আর্টিজানে হামলার দিন জঙ্গীরা তাদের নিজস্ব যোগাযোগের জন্য ডব্লিউআইসিকেআর (ডওঈকজ) নামে একটি এ্যাপস ব্যবহার করে। হাসনাত করিমের মোবাইলে এ্যাপসটি পাওয়া গেছে। জঙ্গীরা রাত ৮টা ৪৪ মিনিটে হলি আর্টিজানে ঢুকে এরপর রাত ৮টা ৫৭ মিনিটে তার মোবাইলে এ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়। এ বিষয়ে রিমান্ডে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বৃহস্পতিবার হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিব খানকে আদালতে হাজির করা হয়। এই দুই জনকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির। ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালতে এই শুনানি হয়। শুনানি শেষে দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। যেভাবে জঙ্গী সম্পৃক্ততায় হাসনাত ও তাহমিদ ॥ গুলশান হামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমের সম্পৃক্ততার বিষয়টি এখন অনেকটা স্পষ্ট। কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণের কারণেই তদন্তের জালে আটকা পড়েছেন এই দুই জন। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ওই রেস্তরাঁয় গেলেও হাসনাত করিম জঙ্গীদের হাতে আক্রান্ত হওয়া তো দূরের কথা তাকে জঙ্গীদের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠভাবেই দেখা গেছে। এমনকি এই হত্যাকা-ের পর দুই বিদেশী মহিলার স্মার্টফোন দেখা যায় হাসনাত করিমের হাতে। জঙ্গীদের পরামর্শ অনুযায়ী ফোনসেট থেকে ‘উইকার ও থ্রিমা’ নামক মোবাইল এ্যাপস ডাউনলোড করে দেন তিনি। আর এই এ্যাপসের মাধ্যমে জঙ্গীরা বিদেশীদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ছবি ও ভিডিওচিত্র মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক একটি উগ্রপন্থী সংগঠনের মুখপত্র ‘আমাক’ নিউজ এজেন্সির কাছে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে ওসব ছবি ও ভিডিও চলে যায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারী গোয়েন্দা সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্সের স্বত্বাধিকারী রিটা কাৎসের কাছে। এছাড়া কিলিং মিশন শেষে হাসনাত করিম ও তাহমিদকে জঙ্গী নিবরাস ইসলামের সঙ্গে অস্ত্র হাতে রেস্তরাঁটির ছাদে হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিমায় কথা বলতে দেখা গেছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যেমন হাসনাত করিম তেমনি নিহত জঙ্গী নিবরাস ইসলামও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এই দুই জনকে জঙ্গী হামলার সময়ে হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিমায় কথা বলতে দেখা যাওয়ার ঘটনাটির বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হলি আর্টিজান বেকারির ভেতর ও বাইরে থাকা কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও জঙ্গীদের ধারণ করা মোবাইলের ভিডিও থেকে দেখা যায়, খুনের শিকার ইতালিয়ান নাগরিক ক্লদিয়া মারিয়া দান্তানার ব্যবহৃত মোবাইল ফোসেটটি ও জীবিত শ্রীলংকার নাগরিক প্যাপথা সায়মার স্মার্টফোন সেটটি নিয়ে নেয় জঙ্গীরা। এরপর এ দুটি ফোনসেট হাসনাত করিমের হাতে দেয় এবং তারপর কী যেন জঙ্গীদের বলতে দেখা যায়। তদন্তকারীদের হস্তগত হয়েছে এসব তথ্য-প্রমাণ। হাসনাত করিমকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি তদন্ত কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, জঙ্গীরা তাকে উইকার ও থ্রিমা নামে দুটি এ্যাপস ডাউনলোড করে দিতে বলেছিল। তিনি প্রাণভয়ে ওই দুটি এ্যাপস নামিয়ে দেন। তবে হোটেলটিতে জিম্মি থাকাবস্থায় ভোর পর্যন্ত হাসনাত করিমকে মোবাইল ফোনসেট ব্যবহার করতে দেখা গেছে। সিসিটিভি ফুটেজে এর প্রমাণ দেখানোর পর হাসনাত করিম বলেছেন, জঙ্গীরা তার ডাউনলোড করে দেয়া এ্যাপস ব্যবহার করে সাইট ইন্টেলিজেন্সসহ বিভিন্ন স্থানে ছবি ও ভিডিও চিত্র পাঠিয়েছে। কিন্তু এত বড় হত্যাকা-ের মধ্যে তাকে সপরিবারে জীবিত রাখা এবং পুরো সময় তাকে কেন স্বাভাবিক দেখা গেছে, সে প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি হাসনাত করিম। হলি আর্টিজান বেকারিতে হাসনাত করিমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলতে দেখা গেছে তাহমিদ হাসিব খানকে। যিনি কানাডার ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর শিক্ষার্থী। এমনকি একপর্যায়ে হাসনাত করিম, তাহমিদ খান ও নিহত জঙ্গী নিবরাসকে একসঙ্গে হোটেলটির ছাদে দেখা যায়। সেখানে তাহমিদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। কথা বলার সময় তাদের প্রত্যেককে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। সিসিটিভি ফুটেজে এমন দৃশ্য দেখার পর জঙ্গী হামলার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জঙ্গী হামলার মনিটরিং ॥ গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেছেন, বেসরকারী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম ও কানাডার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসিব খান গত এক মাস দুই দিন ধরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ছিলেন, যা বিভিন্ন সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে আইজিপি, তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারাও ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, তারা নজরদারির মধ্যেই আছেন। গোয়েন্দাদের ধারণা, হলি আর্টিজান বেকারিতে সরেজমিনে উপস্থিত থেকে হাসনাত করিম গুলশানের জঙ্গী হামলার ঘটনাটির সমন্বয়কের ভূমিকা পালন বা মনিটরিং করেছেন, যা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জঙ্গীর বাসায় হাসনাত করিমের বৈঠক ॥ কল্যাণপুরে নিহত ৯ জঙ্গীর মধ্যে মার্কিন নাগরিক তাজ-উল-হক রাশিকের ধানম-ির বাসায় যাতায়াত ও বৈঠক করেছে হাসনাত রেজা করিম। জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিক রাশিকের ধানম-ির ১১/এ নম্বর রোডের ৭২ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে গণমাধ্যমের কাছে এই ধরনের তথ্য দিয়েছে নিহত রাশিকের বাবা রবিউল ইসলাম। গত ৫ এপ্রিল রাশিক বাসা থেকে নিখোঁজ হয়। অভিমানে ছেলে চলে গেছে-এমন ভাবনা থেকে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন জিডি করা হয়নি। রাশিক নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রনিক্স এ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর মাস্টার্স শেষ করে। গত বছর দুই বার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিম ধানম-ির ঐ বাসায় রাশিকের সঙ্গে দেখা করার জন্য গিয়েছিলেন বলে পরিবারের সূত্র নিশ্চিত করেছে। রাশিকের বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, হাসনাত রেজা করিম গত বছর দুই বার তার বাসায় এসে ছেলের সঙ্গে দেখা করেন। ড্রইং রুমে বসে হাসনাত রেজা করিম তার ছেলের সঙ্গে অনেক সময় ধরে গল্প করেন। তবে কী আলাপ হয়েছে- সে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। রাশিক ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির হিযবুত তাহরীরের সদস্য। এ অভিযোগে গত বছরের ১৫ আগস্ট ধানম-ি থানা পুলিশ রাশিককে বাসা থেকে আটক করেছিল। পরে মুচলেকা নিয়ে রাশিককে ছেড়ে দেয়া হয়। কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গী রাশিকের সঙ্গে গোপন বৈঠক, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জিম্মি অবস্থায় জঙ্গীরা তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থ্রিমা এ্যাপস ব্যবহার করে তথ্যচিত্র পাঠানোর ঘটনায় জড়িয়ে পড়া শিক্ষক হাসনাত রেজা করিম এক রহস্যময় পুরুষ। প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই গুলশানে স্প্যানিশ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা করে জঙ্গীরা। এতে ২০ জিম্মি ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২২ জন নিহত হন। এছাড়া পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’-এ নিহত হয় ৬ জঙ্গী। তারা হচ্ছে নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্ব¡ল, মীর সামিহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ও শরীয়তপুরের সাইফুল ইসলাম চৌকিদার। এছাড়া সন্দেহভাজন জঙ্গী জাকির হোসেন শাওন চিকিৎসাধীন ৮ জুলাই হাসপাতালে মারা যায়।
×