ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বাগত রিও অলিম্পিক

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ৫ আগস্ট ২০১৬

স্বাগত রিও অলিম্পিক

আজ থেকে শুরু হচ্ছে ৩১তম অলিম্পিক প্রতিযোগিতা। বিশ্বের সবচেয়ে জমকালো ক্রীড়া উৎসব হচ্ছে এই অলিম্পিক। শুধু মাঠে থেকেই নয়, সারাবিশ্বের কোটি কোটি মানুষ টেলিভিশনের মাধ্যমে অলিম্পিকের নানা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখে থাকবে। তারা দেখবে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা ক্রীড়াবিদদের নৈপুণ্য। এর আগে ৩০তম অলিম্পিকের আসর বসেছিল লন্ডনে। সেবার অংশগ্রহণ করেছিল ২০৪টি দেশের সাড়ে দশ হাজার এ্যাথলেট। এবার ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনিরোর বিখ্যাত মার্কানা স্টেডিয়ামে পর্দা উঠবে ৩১তম আসরের। এবারের অলিম্পিক বসল দক্ষিণ আমেরিকার কোন দেশে প্রথমবারের মতো। এ আসর চলবে আজ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত। এতে যোগ দিচ্ছেন ২০৬ দেশের ১০ হাজার ৫০০’রও বেশি ক্রীড়াবিদ। ৩২টি ভেন্যুতে ৩০৬টি ইভেন্টে এবার পদকের জন্য লড়বেন ক্রীড়াবিদরা। আমাদের দেশও এই উৎসবে শরিক। ৭ প্রতিযোগী লড়বেন রিও অলিম্পিকে। শূটিং, এ্যাথলেটিক্স, সাঁতার, আর্চারি ও গলফে অংশ নেবেন তারা। ১৯৮৪ সালে অনুষ্ঠিত লস এ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছিল প্রথমবারের মতো। সেই থেকে অলিম্পিকে নিয়মিত অংশ নিয়ে এলেও এই প্রথম কোন বাংলাদেশী অলিম্পিক গেমসে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন গলফার সিদ্দিকুর রহমান। অলিম্পিকের ইতিহাস খুব বড়। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এটি। প্রথম অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয় খ্রিস্টপূর্ব ৭৭৬ অব্দে। কোন কোন ইতিহাসবিদের মতে অলিম্পিকের সূচনা আরও আগে, খ্রিস্টপূর্ব ১৩৭০ অব্দে অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম অলিম্পিক। সুতরাং দেখাই যাচ্ছে অলিম্পিকের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। অবশ্য আধুনিক অলিম্পকের যাত্রা ১৮৯৯ সালেÑ সেটারও সূচনা গ্রীসে। জানা যায়, আধুনিককালের প্রথম ওই অলিম্পিকে তখন যোগ দিয়েছিল মাত্র ১৩টি দেশ। তারপর থেকে যতই দিন যাচ্ছে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ততই বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে ইভেন্টের এবং অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের সংখ্যাও। প্রথমদিকে অলিম্পিকে মহিলাদের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা ছিল না। পরে নানা ইভেন্টে মহিলারা অংশ নিতে শুরু করেন। তাদের সাফল্যও অনেক। অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হয় চার বছর পর পর। শুরু থেকেই এই ধারা চলে আসছে। তবে প্রথম মহাযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের কারণে মোট তিনবার অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত অলিম্পিক চলছে ঠিক নিয়মেই। এবার সেই ধারায় অলিম্পিকের আসর বসছে রিওতে। বিশ্বের এই সর্ববৃহৎ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ব্যাপারে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেও রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। আমাদের দেশের মানুষ ক্রীড়াপ্রেমিক। এটা বিভিন্ন খেলার মাধ্যমে বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। অন্যবারের মতো এবারও রিও অলিম্পিকের প্রতিযোগিতাগুলো বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ গভীর আগ্রহ নিয়ে দেখার অপেক্ষায় আছে। বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা অংশ নেয়ায় এই আগ্রহ আরও বেড়ে যাবে নিঃসন্দেহে। খেলাধুলা দুনিয়ার সব দেশের মানুষেরই প্রিয়। সেই খেলাধুলার সবচেয়ে বড় আসর হচ্ছে অলিম্পিক। আজ থেকে বিশ্বব্যাপী ক্রীড়ামোদী মানুষ মেতে থাকবে অলিম্পিক আনন্দে। অলিম্পিক মূলত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হলেও এর একটা বিশেষ গুরুত্ব হচ্ছে এই উৎসব বিশ্ববাসীকে পরস্পরের অনেক কাছাকাছি নিয়ে আসে। বিশ্বের দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে মানুষে মানুষে চেনা-জানা সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি বাড়াতে অলিম্পিক বড় ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ ক্রীড়ার আসর উপভোগ করবেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিবর্গ। রিও অলিম্পিককে স্বাগত। এর সফলতা কামনা করি।
×