ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কলকাতার বহরমপুর কলাক্ষেত্র উৎসবে ‘বাঁধ’ নাটকের মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ৪ আগস্ট ২০১৬

কলকাতার বহরমপুর কলাক্ষেত্র উৎসবে ‘বাঁধ’ নাটকের মঞ্চায়ন

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ ভারতের কলকাতার বহরমপুর কলাক্ষেত্র আয়োজিত নাট্যোৎসবে আজ বৃহস্পতিবার মঞ্চস্থ হবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত নাটক ‘বাধ’। গতকাল বুধবার এ উৎসবের উদ্বোধন হয়েছে। উৎসব চলবে আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত। উৎসবে যোগ দিতে আতাউর রহমান ও মোহাম্মদ বারীর নেতৃত্বে ‘বাধ’ নাটকের কলা কুশলীরা ১ আগস্ট ভারতের উদ্দেশে রওনা দেয়। প্রায় দুই বছরের বিরতির পর আবারও মঞ্চে এসেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা শওকত ওসমানের গল্প অবলম্বনে নির্মিত নাটক ‘বাঁধ’। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ বারী। বিভিন্ন নাট্যদলের শিল্পীরা নাটকে অভিনয় করছেন। গত ৩১ জুলাই রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে নাটকটির তৃতীয় প্রদর্শনী হয়। আর আজ কলকাতায় নাটকটির চতুর্থ মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন তৌফিকুল ইসলাম ইমন, সাইফ সুমন, এ কে আজাদ সেতু, শাকিল সিদ্ধার্থ, এহসানুর রহমান, বাকার বকুল, মোহাম্মদ বারী, হাসনাত রিপন, এজাজ বারী, শফিকুল ইসলাম, কাজী রাকিব, ম. সাঈদ, মেরিনা মিতু, রফিকুল ইসলাম, কান্তা জামান, এইচএম মোতালেব, মিন্টু সর্র্দার, শাহরিয়ার সোহাগ, মাহফুজ সুমন, বিপাশা ম-ল, মাহিয়া নূর প্রমুখ। নাটকটির মঞ্চ ও প্রকাশনা ডিজাইন করেছেন শাহীনুর রহমান, কোরিওগ্রাফি করেছেন বাকার বকুল, সঙ্গীত পরিকল্পনা করছেন রিফাত আহমেদ নোবেল, আলোক পরিকল্পনা করছেন অম্লান বিশ্বাস, পোশাক পরিকল্পনায় এনাম তারা সাকী। প্রযোজনা অধিকর্তা এজাজ বারী। নাটকের গল্পে দেখা যায়, নদীবর্তী প্রান্তিক এক জনপদ নিয়ামতনগর। এই গ্রামের দুই জনগোষ্ঠী উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়া পরস্পরের আজন্ম শত্রু। এক মধ্যরাতে প্রলয়ঙ্করী আকস্মিক বন্যায় ভেসে যাওয়া নিয়ামতনগরের গৃহস্থ নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ আশ্রয় নেয় জেলা বোর্ডের ভঙ্গুর বাঁধে। এ বাঁধেও বিভক্তি রেখা টেনে উত্তরপাড়ার মানুষ আশ্রয় নেয় বাঁধের উত্তর অংশে, আর দক্ষিণপাড়ার মানুষ দক্ষিণ অংশে। বাঁধের ক্রমাগত ভাঙ্গনের ফলে একসময় সকলে এক জায়গায় আশ্রয় নেয়। কিন্তু চরম সঙ্কটকালেও প্রতিশোধ প্রতিহিংসায় হিংস্র হয়ে ওঠে উভয় পক্ষ। উত্তর-দক্ষিণের মারামারি-হানাহানি-কাটাকাটিতে প্রায় নরক হয়ে ওঠে বাঁধের জনপদ। এরই মধ্যে পানির প্রবল তোড়ে পুরো বাঁধ ভেঙ্গে যখন সম্পূর্ণ বিলীন হওয়ার উপক্রম, তখনও বোধোদয় ঘটে না অনেকের। অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়, তবু অন্তঃসারহীন বিরোধের মীমাংসা ঘটে না। অবশেষে মহাপ্লাবনে ভেসে যাওয়া পিঁপড়ার দল থেকে শিক্ষা নেয় সকলে- ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। ‘বাঁধ’ নাটকের নির্দেশক মোহাম্মদ বারী বলেন, এই নাটকের পটভূমিতে রয়েছে বিভাজিত সমাজের উগ্রবাদিতা। জাতীয় ও বৈশ্বিক রাজনীতি এবং সামাজিক বাস্তবতায় বিপরীতমুখী চিন্তা ও দর্শনের সহাবস্থান আজ ভয়াবহ হুমকির মুখোমুখি। উগ্রবাদ ও ভেদচিন্তার দর্শন শেষ পর্যন্ত ধর্মের নামে আজ ভয়ঙ্কর জঙ্গীবাদে রূপ নিয়েছে। তাই বলা যায়, ওই বাঁধে গল্প থেকে রচিত নাটক ‘বাঁধ’ মূলত উগ্রবাদ ও ভেদচিন্তার বিরুদ্ধে মানবিক ঐক্যের জয়গান। মোহাম্মদ বারী আরও জানান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দেশব্যাপী সাহিত্যনির্ভর নাট্য রচনা ও নির্মাণের আয়োজন করে। এ কর্মসূচীর আওতায় ২০১৪ সালের ১১ জুলাই নাটকটি মঞ্চে আসে। কিন্তু দুটি প্রদর্শনীর পর নাটকটির আর প্রদর্শনী হয়নি। এবার নাটকটি পুনর্মঞ্চায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিতভাবে নাটকটির প্রদর্শনী হবে।
×