ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিতাসের বিতরণ চার্জ পুনর্নির্ধারণে গণশুনানি সোমবার

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ৪ আগস্ট ২০১৬

তিতাসের বিতরণ চার্জ পুনর্নির্ধারণে গণশুনানি সোমবার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী সোমবার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির গ্যাস বিতরণ চার্জ পুনর্নির্ধারণে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এই শুনানির আয়োজন করেছে। শুনানিতে সং্িশ্লষ্টদের বক্তব্য, যুক্তি-তর্ক পর্যালোচনার ভিত্তিতে চার্জ পুনর্নির্ধারণ করবে জ্বালানি-বিদ্যুত খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। একই দিনে গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়েও শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। তবে গ্যাসের মূল্য নয়, বিতরণ চার্জ পুনর্নির্ধারণ বিষয়েই পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের যত আগ্রহ। কারণ গতবছর কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই আকষ্মিক এই চার্জ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিইআরসি। এর তীব্র প্রভাব পড়ে কোম্পানির মুনাফায়। ধস নামে কোম্পানির শেয়ারের দামে। এই তুঘলকি সিদ্ধান্তের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুরো পুঁজিবাজারে। জানা গেছে, শুনানিতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি পক্ষ অংশ নেবে। এছাড়া আগের কমিশন পুনর্বহালের অনুরোধ জানিয়ে বিইআরসিকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ডিএসই ব্রোকার্স এ্যাসোসিয়েশন। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, শুনানির পর ফের আগের বিতরণ চার্জ পুনর্বহাল হবে। এমনকি এই চার্জ কিছুটা বাড়তেও পারে। এমনটি হলে ফের সুদিন ফিরে আসবে জ্বালানি খাতের সবচেয়ে বড় কোম্পানির। গত বছরের আগস্ট মাসে বিইআরসি তিতাসের গ্যাস বিতরণ মাসুল (প্রতি ঘন মিটার গ্যাসের) ৩২ পয়সা থেকে কমিয়ে ২২ পয়সা নির্ধারণ করে। অথচ কোম্পানির গ্যাস বিতরণে খরচ হয় তারচেয়ে বেশি। প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিতরণে তিতাসের গড় ব্যয় ২৯ পয়সা। নতুন হার ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর কার্যকর হয়। এতে তিতাস গ্যাসের মুনাফায় ধস নামে। নতুন বিতরণ হার কার্যকর হওয়ার পরবর্তী প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’১৫) তিতাস গ্যাসের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয় ৩২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ১৬ পয়সা। এক বছরের ব্যবধানে আয় কমে প্রায় ৮৫ শতাংশ। বিইআরসির সিদ্ধান্তের কারণে কোম্পানির মুনাফায় যে ধস নামবে সে আশঙ্কা আগেই করতে সক্ষম হয় অনেক বিনিয়োগকারী। এতে তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা তাই হাতে থাকা শেয়ার বিক্রির জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেন। এর প্রভাব পড়ে শেয়ারের দামে। কিছু দিনের মধ্যে শেয়ারের দাম ৭৫ টাকা থেকে ৪২ টাকায় নেমে আসে। এতে অসংখ্য বিনিয়োগকারী ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন। বাজারের প্রতি তাদের আস্থা কমে যায়। বিশেষ করে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের অনেকেই এ দেশে বিনিয়োগের বিষয়ে আস্থা হারিয়ে ফেলে। তিতাসের ওই ঘটনার প্রভাব পড়ে পুরো বাজারে। বিশেষ করে সরকারী মালিকানার বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম ও বাজার মূলধন ব্যাপকভাবে কমে যায়। এমন অবস্থায় চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ডিএসই ব্রোকারস এ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ সম্মেলনে তিতাস গ্যাসের গ্যাস বিতরণ চার্জ বাড়ানোর দাবি জানায়।
×