ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আরিফ আহাম্মেদ

সামাজিক ব্যাধি

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৪ আগস্ট ২০১৬

সামাজিক ব্যাধি

নারী ও শিশুর ওপর নির্যাতন আমাদের সমাজে নতুন কোন ব্যাধি নয়। আগের মতই বিদ্যমান এই পাশবিক নির্মম বর্বরতা। তবে বর্তমানে এটি যেন মহামারী রূপ নিয়েছে যার পরিণাম খুবই ভয়াবহ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ার বিচক্ষণতায় প্রতিদিন সবার সামনে উঠে আসছে কিছু পাশবিক অমার্জনীয় নারী ও শিশু নির্যাতনের চিত্র যা দেখলে চোখের জল আর হৃদয়ের দহন কোনটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আমরা সবাই দেখি, মন্তব্য করি, কিন্তু বিশেষ কোন সামাজিক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। রাজন হত্যা সমগ্র জাতিকে কাঁদিয়েছে। তারপরেও বন্ধ হয়নি অমানবিক শিশু নির্যাতন। আইনের লিখিত শক্ত অবস্থান আমরা দেখেছি যা শুধু পুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ, কিন্তু শক্ত প্রয়োগটা দেখছি না। প্রয়োগটা যেন শুধুই মেকি। নারীর ওপর নির্যাতন বেড়েই চলছে। পাল্লা দিয়ে যেন বাড়ছে শিশু নির্যাতনও। নারী ও শিশু নির্যাতন যেন সমাজের এক ঘোর অন্ধকারে পরিণত হয়েছে। পারিবারিক মূল্যবোধের অভাব, নৈতিক শিক্ষার অভাব, সামাজিক সচেতনতার অভাব, আইনের প্রয়োগের শিথিলতা এর জন্য প্রধানত দায়ী। আইনের শক্ত প্রয়োগ হয়তবা এই সমস্যার প্রতিকার করতে পারে, কিন্তু এর প্রতিরোধ কে করবে? নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে দরকার শক্ত সামাজিক আন্দোলন। প্রত্যেক পরিবারে এই শিক্ষা থাকতে হবে যে নারী মা, নারী কন্যা, নারী পুরুষের পূর্ণতার অবলম্বন, আজকের শিশু আগামী দিনের কর্ণধার, শিশুরা পৃথিবীর প্রাণ। নারীর গায়ে হাত তোলার আগে যেন সবার চোখে তার মায়ের চেহারাটা ভেসে ওঠে, আর শিশুর মাঝে যেন সবাই দেখতে পায় একটা নতুন পৃথিবী। সমাজ যেন বুঝতে পারে আজকের শিশু না থাকলে আগামী দিনের পৃথিবীটাও থাকবে না। আমরা আর কোন গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু দেখতে চাই না, শুনতে চাই না কোন শিশুর বুকফাটা কান্না। আমরা এমন একটা পৃথিবী গড়বো যেখানে প্রত্যেকটা শিশু বেড়ে উঠবে পরম ভালবাসা আর স্নেহে, প্রত্যেকটা নারী থাকবে ঝিনুকে থাকা মুক্তোর মতো নিরাপদ। আমাদের সমাজ হবে নারী ও শিশুর অভয়ারণ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×