ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অলিম্পিক সফলভাবে পরিচালনা কঠিন চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৩ আগস্ট ২০১৬

অলিম্পিক সফলভাবে পরিচালনা কঠিন চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আর দু’দিন পরেই বর্ণাঢ্য উদ্বোধনীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে যাবে মর্যাদার গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ক্রীড়াবিদদের সমস্যাটাই সমাধান হয়নি। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপক হারে ডোপ পাপে জড়িয়ে পড়ার কারণে রাশিয়ার ১১৭ ক্রীড়াবিদ রিও অলিম্পিকে হয়েছেন নিষিদ্ধ। তাদের অনেকেই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ক্রীড়া সালিশ নিষ্পত্তি আদালতে (সিএএস) আপীল করেছেন। আর তাই দারুণ ক্ষিপ্ত হয়েছেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) প্রেসিডেন্ট থমাস বাখ। রাশিয়াকে পুরোপুরি অলিম্পিক থেকে নিষিদ্ধ করেনি আইওসি, দায়িত্ব দিয়েছে প্রতিটি ক্রীড়ার আন্তর্জাতিক ফেডারেশনগুলোকে। এরপরও রাশিয়ান ক্রীড়াবিদদের এমন মনোভাব দেখানোর জন্য দারুণ সমালোচনা করেছেন বাখ। এছাড়া ব্রাজিলের অর্থনৈতিক অবস্থা, আয়োজনের বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি ইত্যাদি নিয়ে এবার অলিম্পিক সফলভাবে পরিচালনা করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে আইওসির জন্য। ডোপ পাপে সঙ্গে জড়িয়ে গেছে রাশিয়ার ক্রীড়াবিদরা। আর সে কারণেই দেশটির ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ড এ্যাথলেটরা অনেক আগেই নিষিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া সাঁতারের ৭ জন, পুরো ভারোত্তোলন দল এবং অন্যান্য ক্রীড়া মিলিয়ে ১১৭ এ্যাথলেট রিও অলিম্পিকে অংশ নিতে পারছেন না। অবশ্য আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশন (আইডব্লিউএফ) ডোপ পাপে একেবারে জর্জরিত। শুধু ২০১৫ সালেই আইডব্লিউএফ ৭০ এ্যাথলেটকে ডোপ পাপের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে। সংখ্যাটা ২০১৪ সালে ছিল ৩৬ এবং ২০১৩ সালে ৯৭! কাজেই শুধু রাশিয়ান ভারোত্তোলকরাই নয়, সারাবিশ্বের ভারোত্তোলকদের মধ্যেই নিষিদ্ধ ড্রাগ গ্রহণের মাত্রাতিরিক্ত প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। হাউস্টনে গত বছর অনুষ্ঠিত বিশ্ব ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায়ও ২৪ জন হয়েছিলেন ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ। তাই এবার রিও অলিম্পিক নিয়ে আইডব্লিউএফ বেশ বিপাকে রয়েছে। এবারও প্রায় ২০ জনের দেয়া রক্তের নমুনা পজিটিভ হয়েছে। রিও অলিম্পিক থেকে নিষিদ্ধ হওয়াদের মধ্যে লন্ডনে ৪ স্বর্ণজয়ী এবং ডাবল অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ইলিয়া ইলিনও আছেন। এসব কারণে আইওসিও বেশ বিপাকে আছে। রাশিয়ার ক্রীড়াবিদদের মধ্যে ডোপের ছোবলটা বেশি থাকায় সবার দাবি ছিল এবার রিও থেকে পুরো দেশকেই নিষিদ্ধ করা হোক। কিন্তু আইওসি শিথিল হয়ে সেটা স্ব-স্ব ফেডারেশনগুলোকে দায়িত্ব দিয়েছিল। ফলে রাশিয়ার অনেক ক্রীড়াবিদই অংশ নিতে পারছেন এবার। তবে এরপরও রাশিয়ার কিছু ক্রীড়াবিদ মামলার প্রক্রিয়াতে যাওয়ার কারণে আরেকটি বিপদ হয়েছে আইওসির। সঙ্গে আছে ব্রাজিলের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। বর্তমান সরকারের বিরোধীরা অলিম্পিক আয়োজনের বিরুদ্ধেই নিয়মিত রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থাও তেমন উন্নত নয়। আছে জিকা ভাইরাসে প্রাদুর্ভাব, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা। সবমিলিয়ে তাই রাশিয়ার ওপরই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন আইওসি সভাপতি বাখ। তিনি বলেন, ‘যদি প্রমাণ হওয়ার পরও তারা এমন মনোভাব দেখায় সেটা উদ্ধত আচরণ। আর এটি অবশ্যই ক্রীড়ার জন্য ও অলিম্পিকের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য যথেষ্ট বড় কারণ হয়ে যাবে। এসব নিয়ে ঝামেলার কারণে আমরা অলিম্পিক আয়োজন সুষ্ঠুভাবে করার দিকে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারছি না। দক্ষিণ আমেরিকায় প্রথমবার অলিম্পিক আয়োজনের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক বড় পরীক্ষার সামনে দাঁড়াতে হয়েছে। ব্রাজিলের পরিস্থিতি সুখকর নয়। তাই আইওসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সফলভাবে অলিম্পিক আয়োজন করা।’
×