ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক-বাজার রক্ষার আকুতি

ভাঙ্গায় তীব্র ভাঙ্গন

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৩ আগস্ট ২০১৬

ভাঙ্গায় তীব্র ভাঙ্গন

অভিজিৎ রায়, ভাঙ্গার দরগা বাজার থেকে ফিরে ॥ ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের দুয়াইর গ্রামের দরগা বাজার এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙ্গনে বাড়ি-ঘর, দোকান, ফসলী জমি নদে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে গোয়ালন্দ-তারাইল আঞ্চলিক সড়কটিও। হুমকির মুখে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী দরগা বাজার এলাকা। জানা গেছে, নাসিরাবাদ ইউনিয়নের দুয়াইর গ্রামের দরগা বাজার এলাকায় এ বছরের ১৮ জুলাই থেকে এ ভাঙ্গন দেখা দেয়। গত ১৫ দিনে ওই গ্রামের আদু খা, ফরহাদ মাতুব্বর, খলিল ব্যাপারী, কালাম মিয়াসহ ২৫টি পরিবারের ৫১টি বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙ্গে গেছে সামাদ মাতুব্বর ও নওয়াব মাতুব্বরের দুটি দোকান। এছাড়া আমির ব্যাপারী, ফারুক মাতুব্বর বাহাদুর মাতুব্বরসহ ৩০টি পরিবারের ২৭ একর ফসলী জমি নদে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের হুমকির মুখে রয়েছে বাজার সংলগ্ন কুন্ডু মার্কেট, কালাম হাজি মার্কেট, সাঈদ হাদীর মার্কেটসহ সমগ্র দরগা বাজার এবং মোনাই ফকিরের দরগা। ভেঙ্গে যাচ্ছে গোয়ালন্দ-তারাইল সড়ক। ভাঙ্গা-দড়গা বাজার সড়কের তিন শ’ মিটার নদে বিলীন হয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এলাকাবাসী তাদের দোকান ও বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিচ্ছে। এলাকাবাসী সবচেয়ে চিন্তিত গোয়ালন্দ-তারাইল সড়ক নিয়ে। এ সড়ক যাতে ভেঙ্গে না যায় এজন্য তাদের আকুতির শেষ নেই। এ সড়ক ভেঙ্গে গেলে জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের বাড়িঘর, দোকান, জমি সবই গেছে। এগুলো তো আর ফিরে পাব না। আমাদের দাবি একটাই যে কোন মূল্যে রক্ষা করা হোক গোয়ালন্দ-তারাইল সড়কটি। দর্জি মোস্তফা মুন্সী বলেন, আমাদের বাজারটা খুবই সমৃদ্ধ ছিল। কয়েকবার ভাঙ্গনের ফলে বর্তমান অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। এভাবে ভাঙ্গন চললে আমরা নিস্ব হয়ে যাব। আব্বাস মাতুব্বর জানান, ২০০৮ সালে এই এলাকায় নদের ভাঙ্গনের ফলে গোয়ালন্দ-তারাইল সড়কের পাঁচ শ’ মিটার অংশ নদে বিলীন হয়ে যায়। পরে সড়ক বিভাগ সড়কটি সরিয়ে এনে দরগা বাজারের পূর্বদিক দিয়ে পুনর্নির্মাণ করে। কিন্তু সড়কটি আবার নতুন করে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙ্গন ঠেকাতে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় মঙ্গলবার গঙ্গা পূজার আয়োজন করে। সকাল ৯টার দিকে প্রায় অর্ধশত হিন্দু নারী প্রদীপ, ধুপ জ্বালিয়ে এবং তেল, সিঁদুর, লবণ, চিনি, ফল, দুর্বা নিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদের গোয়ালন্দ-তারাইল সড়কের ভেঙ্গে যাওয়া অংশে পূজা দেন। এ সময় তাদের দুই হাত জোর করে নদের উদ্দেশ্যে কাকুতি মিনতি করতে দেখা যায়। গত ২৫ জুলাই থেকে ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সোমবার পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। নাসিরাবাদ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম সিদ্দিকি বলেন, সড়কটি রক্ষা করতে এবং ভাঙ্গন রোধে দুইজন ঠিকাদারের মাধ্যমে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। তিনি বলেন, ফান্ডের সমস্যার কারণে ঠিকাদাররা ঠিকমতো কাজ করছেন না।
×