ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তদন্তে সত্যতা মিলেছে

জঙ্গী অর্থায়নের অভিযোগ ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৩ আগস্ট ২০১৬

জঙ্গী অর্থায়নের অভিযোগ ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভের বিরুদ্ধে

রহিম শেখ ॥ অবৈধ ব্যাংকিংয়ে অভিযুক্ত সমবায় প্রতিষ্ঠান ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভের বিরুদ্ধে এবার অর্থপাচার ও জঙ্গী অর্থায়নের অভিযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকা বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) তদন্তে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে অবৈধ ব্যাংকিং, জঙ্গী অর্থায়ন ও অর্থপাচারের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়। এছাড়া একাধিক সরকারী সংস্থা এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পাশাপাশি তদন্ত করছে সমবায় অধিদফতরও। যদিও প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে, জঙ্গী অর্থায়ন বা অর্থপাচারের কোন অভিযোগ সঠিক নয়। একই সঙ্গে সমিতি হওয়ার পরও ‘ব্যাংক’ শব্দ যুক্ত করে অবৈধ ব্যাংকিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ। জানা গেছে, গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও প্রধান শাখা পরিদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল। সদস্য নয় এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ, জমি বন্ধক রেখে ঋণ দেয়া, অনুমতি ছাড়া সারাদেশে শাখা খোলা প্রভৃতি অনিয়ম দেখতে পায় তারা। বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সমবায় অধিদফতরকে কিছু সুপারিশ করে পরিদর্শক দল। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল আরও দেখতে পায়, গত তিন বছরে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসার উন্নয়নে অনেক টাকা ব্যয় করেছে। কিন্তু ব্যয়ের হিসাব দেখাতে অস্বীকার করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে দেখা গেছে, উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে দুই লাখের বেশি আমানতকারীর কাছ থেকে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত নেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের পরিচালন নীতিতে বলা আছে, প্রতি সদস্যের অনুকূলে অন্তত ১০০ টাকার শেয়ার বিতরণ করা হবে। গত জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের আমানতকারী গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১৩ হাজার ৬১৭। অথচ শেয়ার মূলধনের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। নিয়ম মেনে সদস্যদের মাঝে শেয়ার দেয়া হলে বর্তমানে শেয়ার মূলধনের পরিমাণ হতো ২০ কোটি টাকার বেশি। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান শেয়ারের বিপরীতে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিট মুনাফা ও লভ্যাংশ দিয়ে আসছে ঢাকা মার্কেন্টাইল। বিনিয়োগকৃত মূলধনের ওপর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ৩২২ শতাংশ নিট মুনাফা দিয়েছে। আগের অর্থবছরে দেয়া হয় ২০০ শতাংশ। এ উপায়ে এর ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও পরিচালকরা দুই বছরেই পুঁজির সমান মুনাফা তুলে নিয়েছেন। গত অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ৫০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দিয়েছিল। আগের বছর দেয়া হয় ৪০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল জনসাধারণের আমানতের একটি বড় অংশ পাচার হওয়ার শঙ্কায় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর দুই দফায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের কর্মকর্তারা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভের প্রধান কার্যালয় ও কর্পোরেট শাখা পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের তদন্তে লভ্যাংশ বিতরণের প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ প্রমাণিত হওয়া অর্থপাচারের বিষয়টি উঠে এসেছে। একই সঙ্গে উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি সিএসআরের (কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি) মাধ্যমে জঙ্গী বা নাশকতামূলক কার্যক্রমেও সহায়তা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির নামের শেষে ব্যাংক শব্দ যুক্ত থাকায় এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতো শাখার কাউন্টারে নগদ জমা ও উত্তোলনের সুযোগ থাকায় সাধারণ মানুষ প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যাংক বলে মনে করে। আর বর্তমানে ব্যাংক খাতে সুদের নিম্নমুখী প্রবণতাকে পুঁজি করে বার্ষিক ১৩ শতাংশ সুদের আকর্ষণীয় প্রলোভন দেখিয়ে আমানত সংগ্রহ করে চলেছে এ প্রতিষ্ঠান। ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির ঋণ ছিল ৯৪৫ কোটি টাকা এবং আমানত ৮৩৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমানতের চেয়ে বেশি ঋণ দেয়া হয়েছে। আর এসব আমানতের অধিকাংশই নেয়া হয়েছে সদস্যদের বাইরে বিভিন্ন গ্রাহক থেকে। অথচ সমবায় আইনে সদস্যদের বাইরে কারও কাছ থেকে আমানত নেয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা জনকণ্ঠকে বলেন, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আমরা প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম তদন্ত করছি। তদন্তে অনেক কিছুই বেরিয়ে এসেছি। এই মুহূর্তে তা বলা যাবে না তিনি জানান। জানা গেছে, দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের বিরুদ্ধে অবৈধ ব্যাংকিং, জঙ্গী অর্থায়ন ও অর্থপাচারের অভিযোগে জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। গত ৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পরিচালক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকারের স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় পাঠানো হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের লেনদেন ও সম্পদ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে ২০০৩-০৫ এই দু’বছরে এ প্রতিষ্ঠানের কো-অপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে জমা ছিল ৮১ হাজার ১৫০ টাকা। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে উন্নয়ন ফান্ডে জমা হয় ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৫৮ টাকা। এক বছরে জমার পরিমাণ ৮০ শতাংশ বেড়েছে। ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ফান্ডে জমার পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ৯১ হাজার ৪৫৭ টাকা। হঠাৎ লাফ দিয়ে বেড়ে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে দি ঢাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে জমার পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৭৪ টাকা। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে ৩০৯ ভাগ। এছাড়া পরবর্তী বছর ডেভেলমেন্ট ফান্ডে জমার পরিমাণ তিন শ’ শতাংশ বেড়ে অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ লাখ ৬২ হাজার ৬১২ টাকা। সর্বশেষ ২০০৯-১০ অর্থবছরে এ ফান্ডে জমার পরিমাণ ছয় শ’ শতাংশ বেড়ে অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৯১৫ টাকা। চিঠিতে আরও বলা হয়, এ প্রতিষ্ঠানটি সমবায় অধিদফতর থেকে নিবন্ধন নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এ প্রতিষ্ঠান কোন তফসিলি ব্যাংক নয় এবং ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে না। এছাড়া সংশোধিত সমবায় আইনের ২৩(ক) ধারায় পরিষ্কার বলা আছে সমবায় সমিতি হিসেবে নিবন্ধনকৃত প্রতিষ্ঠানের নামের শেষে ব্যাংক শব্দ ব্যবহারে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কারণ ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এর লাইসেন্স গ্রহণ করতে হয়। অথচ এই আইন পাসের পরও দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক দেশব্যাপী ১১৮টি শাখা এবং উপশাখার মাধ্যমে অবৈধভাবে তফসিলি ব্যাংকের মতো ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছে। সেখানে আরও বলা হয়, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নেই। সেখানে প্রতিষ্ঠানটি রীতিমতো শরিয়াহ্ ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করেছে। একদিকে প্রতিষ্ঠানটি ৩৬ থেকে ৫২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে শরিয়া ব্যাংকিং প্রচার যা পরস্পরবিরোধী। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিকে প্রতারণার একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে একদিকে আমানত সংগ্রহ করে ব্যবসার প্রসার ঘটাচ্ছে। পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের বিকল্প হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানে সাধারণ সঞ্চয় হিসাবের সুদ দেয়া হচ্ছে ৭ শতাংশ হারে, মেয়াদী আমানত (এফডিআর) তিন মাস, ছয় মাস, এক বছর, দুই বছর, তিন বছর, চার বছর, পাঁচ বছর ও ৬ বছর পর্যন্ত রয়েছে। এসব দীর্ঘমেয়াদী আমানতের বিপরীতে ১০ শতাংশ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া এককালীন টাকা রেখে সাত বছরে দ্বিগুণ অর্থ দেয়ার স্কিমও রয়েছে তাদের। অবশ্য উল্লিখিত সব সুবিধা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তুলনায় বেশি। এছাড়া রয়েছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ, বিনিয়োগ, কনজ্যুমার বিনিয়োগ ও সাধারণ বিনিয়োগের স্কিম। এসব হচ্ছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। ফার্মগেট এলাকায় (১৯ ইন্দিরা রোড) প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যান আবু জাফর চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তার কাছে যেতে বলেন। পরে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র এ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ মুনিরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, সব ধরনের নিয়ম মেনে তারা ব্যবসা করছেন। জঙ্গী অর্থায়ন বা অর্থপাচারের অভিযোগ সঠিক নয়। সমবায় সমিতি হয়ে ব্যাংকিং করার অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, তারা শুধু সদস্যদের কাছ থেকেই অর্থ সংগ্রহ করেন এবং তাদের ঋণ দেন। জঙ্গী অর্থায়ন বা অর্থপাচারের অভিযোগও সঠিক নয়। সূত্রে জানা গেছে, নানা অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকার দায়ে এর আগে বিভিন্ন সময়ে সমবায় অধিদফতর থেকে ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক বন্ধের উদ্যোগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এর কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করে বিভিন্ন সময়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব, এ্যাটর্নি জেনারেলসহ বিভিন্ন পক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। শীঘ্রই এর কার্যক্রম বন্ধ না করা হলে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে সেসব চিঠিতে আশঙ্কা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বর্তমানে উচ্চ আদালতে চারটি রিট বিচারাধীন রয়েছে। এর আগে গত ২৪ মে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভকে কেন অবসায়ন করা বা গুটিয়ে ফেলা হবে না জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে সমবায় অধিদফতর। প্রতিষ্ঠানটিতে কেন একজন নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিয়োগ এবং ফৌজদারি মামলা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমবায় অধিদফতরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা কয়েকটি ধাপে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে এর গ্রাহকরা যাতে আমানতের টাকা ফেরত পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সুযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার। কারণ তাদের নামের সঙ্গে ‘ব্যাংক’ শব্দ রয়েছে। সমবায় অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আবু জাফর চৌধুরী, শামসুন্নাহারসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৩ সদস্যের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে অধিদফতর। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে আবু জাফর চৌধুরীর অবৈধ ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তার দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ঢাকা জেলা সমবায় কার্যালয় প্রতিষ্ঠানটিকে নতুন করে আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ ও শেয়ার বিক্রি না করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশনা দেয়ার পরও থেমে নেই আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ কার্যক্রম। মঙ্গলবার সরেজমিন ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির কর্পোরেট শাখার, বাংলামোটর শাখায় ব্যাংকিং কার্যক্রমের চিত্র দেয়া যায়। এদিকে অবৈধ ব্যাংকিং লেনদেন বন্ধ করতে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকে প্রশাসক নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সোমবার প্রশাসক হিসেবে যোগ দিতে যান সমবায় অধিদফতরের যুগ্ম নিবন্ধক মোঃ নুরুজ্জামান। কিন্তু তার যোগদানপত্র গ্রহণ করা হয়নি। সমিতির চেয়ারম্যান আবু জাফর চৌধুরী যোগদানপত্রের ওপর ‘প্রশাসক হিসেবে গ্রহণ করা যাচ্ছে না’ এমন কথা লিখে তা ফেরত দেন। এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রশাসক নুরুজ্জামান বলেন, আমি সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী প্রশাসক হিসেবে যোগদানপত্র দিয়েছি মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু আমার যোগদানপত্রের ওপর প্রশাসক হিসেবে গ্রহণ করতে পারছে না তা লিখে দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এর কারণ হিসেবে আদালতে এ বিষয়ে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি সমবায় অধিদফতর থেকে আইনী মোকাবেলা করা হবে। এ বিষয়ে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে দি মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবু জাফর চৌধুরী কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
×