ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ জামাল ১-১ রহমতগঞ্জ

শেখ জামালকে রুখে দিল রহমতগঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২ আগস্ট ২০১৬

শেখ জামালকে রুখে দিল রহমতগঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যতই দিন যাচ্ছে ততই যেন জায়ান্ট কিলার থেকে জায়ান্ট হয়ে উঠছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। দলের কোচ কামাল বাবু বলেÑ কয়েই যেন পয়েন্ট ছিনিয়ে নিচ্ছেন প্রতিপক্ষ দলগুলোর কাছ থেকে। এই যেমন সোমবারের ম্যাচেও নিলেন শেখ জামাল ধানম-ির কাছ থেকে। আগে গোল খেয়ে গোল শোধ দিয়ে তারা জিততে দিল না লীগের বর্তমান শিরোপাধারীদের। ম্যাচটি ড্র হয় ১-১ গোলে। চলমান ‘জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে পুরনো ঢাকার ক্লাবটি এখন বাকি দলগুলোর কাছে মূর্তিমান বিভীষিকার মতো। প্রথম ম্যাচে তারা ড্র করে মোহামেডানের সঙ্গে। দ্বিতীয় ম্যাচে তো হারিয়েই দেয় শেখ রাসেলকে। তৃতীয় ম্যাচে রুখে দিল শেখ জামালকে। আর জামাল তাদের প্রথম ম্যাচে আরামবাগের সঙ্গে ড্র করে শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে উত্তর বারিধারাকে হারিয়ে যে ছন্দ ফিরে পেয়েছিল, তা আবার হারিয়ে ফেলে রহমতগঞ্জের সঙ্গে ড্র করে। ৩ খেলায় শেখ জামাল-রহমতগঞ্জের পয়েন্ট ৫। তবে গোল তফাতে কারণে জামাল চলে যায় পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। তাদের পরের স্থান রহমতগঞ্জের (শেখ রাসেল বনাম চট্টগ্রাম আবাহনীর মধ্যে খেলার আগ পর্যন্ত পরিসংখ্যান)। ম্যাচের আগের দিন কামাল বাবু জানিয়েছিলেন, ওয়েডসন আসলেও এবং এমেকা খেললেও এতে তার কোন সমস্যা নেই। শেখ জামালকে তারা ভয় পাচ্ছেন না। সোমবারের খেলায় সেটাই দেখা গেল তার শিষ্যদের খেলায়। ম্যাচ শেষে বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে আমরা হারতে হারতে এক পয়েন্ট পেয়েছি। আজই মনে হয় দলের ছেলেরা তাদের সেরা খেলাটা খেলল। এই পয়েন্টটা আমি আমাদের মতো ছোট দলগুলোকে উৎসর্গ করতে চাই। ছোট বলতে এখন আর কিছু নেই। লিচেষ্টার ক্লাবের সাফল্যে আমরা অনুপ্রাণিত।’ ম্যাচ প্রসঙ্গে কামাল বাবুর বিশ্লেষণ, ‘আমাদের ডিফেন্ডার এলিটা তার স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেনি। সে পুরোপুরি ফিট না, তাকে আজ ইনজেকশন নিয়ে খেলতে হয়েছে। এজন্যই প্রতিপক্ষ আমাদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে পেরেছে। তবে আমাদের গোলরক্ষক মাসুম খুব ভাল করেছে। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের মধ্যে কাকে সামলাতে বেশি বেগ পেতে হয়েছে? ‘ওদের ওয়েডসন আমাদের চাপে রেখেছিল। আজ সে প্লেন জার্নি করে এসে যতটা খেলেছে, তা অন্যদের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়াবে আগামীতে।’ বিদেশী খেলোয়াড়দের ওপর নির্ভরশীল নন কামাল ‘লোকাল চার-পাঁচজন ইনজুরিতে। বিদেশী কয়েকজন খেলোয়াড় আসি আসি করেও এখনও আসেনি। তবে আমার দলটা বিদেশী নির্ভর দল না। কোন বিদেশী না থাকলেও আমরা খেলতে পারব।’ কামাল আরও যোগ করেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল লীগের চট্টগ্রাম পর্বে কমপক্ষে পাঁচ পয়েন্ট অর্জন করা। সেটা পেরেছি। মোহামেডান বা জামালকে হারানোর প্ল্যান ছিল। রাসেলের সঙ্গে জেতার লক্ষ্য ছিল। মজার বিষয় হয়েছে এর উল্টোটি!’ শেখ জামালের গোলরক্ষক কোচ মোশাররফ হোসেন বাদল বলেন, ‘প্রথমার্ধে আমরা ভাল খেলি এবং এক গোল করে এগিয়ে যাই। দ্বিতীয়ার্ধে কয়েকটা আক্রমণ ব্যর্থ হয়। ব্যাডলাক। এই অর্ধে মিডফিল্ড দুর্বল হয়ে পড়ে। কার্ড সমস্যায় মিডফিল্ডার শরীফ এই ম্যাচে খেলতে পারেনি। এর মাশুল দিতে হয়েছে গোল খেয়ে এবং ড্র করে।। তবে ওয়েডসন, এমেকাসহ অন্যরা ভাল খেলেছে। বিশেষ করে ওয়েডসনের কথা না বললেই নয়। সুদূর হাইতি থেকে সে লম্বা বিমানযাত্রা করে আজই ঢাকা এবং পরে আবারও বিমানে করে চট্টগ্রামে এসেই মাঠে খেলতে নেমেছে। একটি গোলও করেছে। এটা অভাবনীয়।’ অন্যদিকে শেখ জামালের কয়েকটা পরিকল্পিত আক্রমণ ব্যর্থ হয়ে যায় রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক সামিউল ইসলাম মাসুমের প্রচেষ্টায়। ৩০ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় জামাল। মাঝমাঠ থেকে থ্রু পাস দেন গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে। ওয়েডসন প্রতিপক্ষ এক ডিফেন্ডার মার্কার ও আগুয়ান গোলরক্ষক সামিউল ইসলাম মাসুমকে কাটিয়ে বল ঠেলে দেন ফাঁকা পোস্টে (১-০)। খেলার ধারার বিপরীতে সমতা আনে রহমতগঞ্জ। ৫৮ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে উড়ে আসা বল নিজেদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝিতে ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন জামালের ডিফেন্ডার লিংকন ও আশরাফুল। তৎপর কঙ্গোলিজ ফরোয়ার্ড সিয়ো জুনাপিয়ো বল আয়ত্তে নিয়ে বাঁ পায়ের শটে পরাস্ত করেন জামাল গোলরক্ষক মুস্তাককে (১-১)।
×