ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কনডেনসেট সরবরাহ বন্ধে সিভিও পেট্রোর সর্বোচ্চ দরপতন

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২ আগস্ট ২০১৬

কনডেনসেট সরবরাহ বন্ধে সিভিও পেট্রোর সর্বোচ্চ দরপতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কনডেনসেট (গ্যাসের উপজাত) বাজারে ছেড়ে দিয়ে উৎপাদিত জ্বালানি তেল পরিশোধন না করেই সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি লিমিটেডের বিরুদ্ধে। এছাড়াও প্রাপ্ত কনডেনসেট পরিশোধন ছাড়াই চোরাই পথে সরাসরি পেট্রোলপাম্পে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। আর এমন অভিযোগের কারণে প্রথম পর্যায়ে জ্বালানি তেলের উপজাত কনডেনসেট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে পেট্রোবাংলা। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে একই অভিযোগ রয়েছে গোল্ডেন ও লার্ক রিফাইনারি নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কারণ ওই দুটি প্রতিষ্ঠান বেশি তেল উৎপাদন করত। মূলত ওই প্রতিষ্ঠান দুটির কর্মকা-ের ফলই ভোগ করতে হচ্ছে সিভিও কর্তৃপক্ষকে। এদিকে সিভিও পেট্রোতে কনডেনসেট সরবরাহ না করার সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারে শেয়ার দরে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দেয়। এমনকি দিনটিতে শেয়ারটি সর্বোচ্চ দরপতনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। একইসঙ্গে বাজারে কারসাজির চক্রের সদস্যরা নানা নেতিবাচক গুজব ছড়িয়ে শেয়ারটির দরে প্রভাব ফেলছে। অনেকেই অল্প দামে শেয়ারটি হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। সোমবার ডিএসইতে শেয়ারটির মোট ১৬ কোটি টাকার ৬ লাখ ৫০ হাজার ৯৩০টি শেয়ার মোট ৪ হাজার ৩৫০ হাওলায় লেনদেন হয়েছে। আগের দিনের প্রতিটি শেয়ারের দর কমেছে ৭.৪৩ শতাংশ অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ার দর হারিয়েছে ১৯.৯০ টাকা। তবে বিনিয়োগকারীদের আশাবাদ সরকার কোনভাবেই অন্যায়ভাবে কনডেনসেট সরবরাহ বন্ধ করতে পারবে না। কারণ পুুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানিতে শুধু কর্তৃপক্ষ নয় সাধারণ বিনিয়োগকারীই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই খুব তাড়াতাড়ি এই জটিলতা কেটে যাবে। প্রসঙ্গত, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল পেট্রোবাংলার কাছ থেকে কনডেনসেট (গ্যাসের উপজাত) কেনে। কনডেনসেট পরিশোধন করে এর থেকে পেট্রোল, অকটেন ও অন্যান্য জ্বালানি তেল উৎপাদন করে বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন) এর কাছে বিক্রি করে। কিন্তু অভিযোগ আছে সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল পেট্রোল পাম্প মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশে ক্রয় করা কনডেনসেট পরিশোধন (রিফাইন) না করেই অপরিশোধিত আকারে পাম্পগুলোতে বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে বিপিসিরও আগের তুলনায় মুনাফা কমে গেছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত পেট্রোবাংলা থেকে সিভিও পেট্রো ক্রয় করেছিল ১৯ হাজার টন কনডেনসেট। আইন অনুযায়ী পুরোটাই বিপিসি’র কাছে বিক্রি করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তারা বিক্রি করেছে মাত্র ৭৯২ টন (৯ লাখ ৯০ হাজার লিটার) পেট্রোল। বাকি ১৮ হাজার ২০৮ টন কনডেনসেটের হিসাব নেই। ক্রয় করা কনডেনসেট দিয়ে অন্য কোন জ্বালানি তৈরি করেছে কিনা সে সংক্রান্ত ও কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। মন্ত্রণালয়ের তদন্তে সিভিও পেট্রোর বিরুদ্ধে পেট্রোবাংলার কাছ থেকে ৪৪ টাকায় কনডেনসেট ক্রয় করে তা কোন রকম পরিশোধন ছাড়াই ভেজাল আকারে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল বলে পেট্রোল পাম্পের কাছে ৭০-৭২ টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
×