ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

চলমান বন্যায় মানুষ যেন কষ্ট না পায়

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২ আগস্ট ২০১৬

চলমান বন্যায় মানুষ যেন কষ্ট না পায়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশে চলমান বন্যায় কোন মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সে দিকে খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতা কমিয়ে ‘পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৬’-এর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বন্যা পরিস্থিতি কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে। বন্যাদুর্গত এলাকায় কোন মানুষ যেন কষ্ট না পায় তার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে। এ সময় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের কাছে দেশের খাদ্য মজুদ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এই মুহূতে প্রায় নয় লাখ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য মজুদ আছে। এবার দেশে ৭ লাখ মেট্রিক টন ধানও সংগ্রহ করা হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা হতদরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে চাল বিতরণ করব। এতে প্রতি পরিবার মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কর্মসূচী শুরু করা হবে। এতে বন্যাকবলিত এলাকার হতদরিদ্র পরিবার এই ধকল থেকে রক্ষা পাবে। পর্যাপ্ত মজুদ এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচী জেনে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শুধু খাদ্য সরবরাহ করলেই চলবে না। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নানাবিধ রোগবালাই দেখা দেবে। তাদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হবে। বন্যা চলাকালে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোবাবেলায় দলে পক্ষ থেকে ৮টি গ্রুপ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া রয়েছে কেন্দ্রী কমিটি। এরাও সেবা প্রদান করছে। পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা কমছে। চেয়ারম্যানের ক্ষমতা কমিয়ে ‘পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৬’ এর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনে বড় কোন সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়নি। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আঞ্চলিক পরিষদের প্রধান সন্তু লারমার তরফ থেকে সংশোধনের জন্য কিছু প্রস্তাব ছিল। সংশোধনের দুটো মূল বিষয় হলো- কোরাম ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ। তিনি বলেন, কমিশনের মোট মেম্বর হলো ৭ জন। আগের আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যানসহ অপর ২ সদস্য নিয়ে কোরাম হবে, নতুন আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যানসহ চারজন হলে কোরাম হবে। শফিউল আল বলেন, আগে ছিল চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত কমিশনের সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে। চেয়ারম্যানের বড় একট ক্ষমতা ছিল। তারা প্রস্তাব করেছেন চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সিদ্ধান্ত কমিশনের সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে। এখন চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তে কোন বিষয় চূড়ান্ত হবে না। কমিশনের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে কিনা- একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, না, খর্ব বলি না। এটা একটু ‘মোডিফাই’ করা হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে শফিউল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বিষয়ক আঞ্চলিক পরিষদের দাবির প্রায় সব নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সংশোধনের বিষয়ে সামরিক-বেসামরিক সবার সঙ্গে আলোচনাও করা হয়েছে। পরিষদ ১৪টি প্রস্তাব দিয়েছিল। ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে আইনের অধ্যাদেশ জারি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু সংসদ প্রায় ২ মাস পরে বসবে। তাই জরুরী বিবেচনায় এটাকে অধ্যাদেশ আকারে জারি করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১২টি স্থানে সংশোধন আনা হলেও এগুলো খুব ছোট ছোট। সব প্রায় ঘষামাজা করা হয়েছে। এছাড়া মিশন স্টেটমেন্ট প্রণয়নের বিষয়ে মন্ত্রিসভার গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ভার্চুয়াল জগতের সবকিছু সমন্বয় করে আইন হচ্ছে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘জাতীয় ই-সেবা আইন, ২০১৫’ এর খসড়ার বিষয়ে মন্ত্রিসভার গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা একটা বড় আইন করবে, এর নাম হবে ন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার এ্যাক্ট (এনইএএ)। এজন্য তারা ছোট আইনটি (জাতীয় ই-সেবা আইন) প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। নতুন আইনটি হবে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম আইন। ভার্চুয়াল জগতে যতকিছু হচ্ছে এটার কাঠামো হচ্ছে ন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার এ্যাক্ট। তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশে এ ধরনের আইন আছে। আমরাও সেই আদলে করতে যাচ্ছি।
×