ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আগস্টে গঙ্গার পানি বাড়লে নতুন করে বন্যা দেখা দিতে পারে;###;এক সপ্তাহের মধ্যে বর্তমান বন্যা স্বাভাবিক হয়ে আসবে

এ মুহূর্তে দেশে বড় কোন বন্যার আশঙ্কা নেই

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২ আগস্ট ২০১৬

এ মুহূর্তে দেশে বড় কোন বন্যার আশঙ্কা নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশে নতুন করে বড় ধরনের বন্যার কোন আশঙ্কা নেই। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তবে পানি সাগরে নেমে যাওয়ার পথে মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের নতুন কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী রিপন কর্মকার জনকণ্ঠকে বলেন, উত্তরাঞ্চল থেকে বিশেষ করে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র, সুরমা, কুশিয়ারার পানি দ্রুতই নেমে যাচ্ছে। এ কারণে বন্যা পরিস্থিতিও দ্রুত উন্নতি হচ্ছে বলে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন অসম, মেঘালয়ের পাহাড়ী এলাকায় এ বছর প্রচ- ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের পানি যমুনা, সুরমা কুশিয়ারা দিয়ে দেশের ভেতরে প্রবেশ করেছে। উজান থেকে নেমে আসা এই পাহাড়ী ঢলের কারণেই মূলত উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বেড়ে অস্বাভাবিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তবে বর্তমানে এ অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা বলেন, অসম ও মেঘালয় এলাকায় গত কয়েকদিনে কোন ভারি বর্ষণও নেই। এমনকি ওই এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও গত কয়েকদিনে অনেক কমে এসেছে। এ কারণে উজানের পানির চাপ না থাকায় বড় বড় নদীর পানি নামতে শুরু করেছে। এদিকে সাগরেও ইতোমধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত আবহাওয়া অধিদফতর থেকে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে নিম্নচাপের কারণে যদি সাগরের পানির স্তর উঁচু থাকে তাহলে নদীর পানি একটু ধীরে ধীরে নামবে। সেক্ষেত্রে পানি নেমে যাওয়ার পথে ভাটির দিকে নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। একই সঙ্গে উত্তর থেকে পানি ধীরে ধীরে নামবে। তবে এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে পানি দ্রুত নেমে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে বলে তারা জানিয়েছে। তবে মধ্য আগস্ট নাগাদ দেশে নতুন করে বন্যার সম্ভাবনার কথা এখনই তারা জানাতে পারেননি। তবে এ সময়ে নতুন করে আশঙ্কাও এখনই উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তারা বলছেন উজানে গঙ্গার পানি স্থিতিশীল থাকলেও সমতলে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রিপন কর্মকার জানান, গঙ্গার পানি সাধারণত বৃদ্ধি পায় আগস্টে। এ কারণে মধ্য আগস্ট নাগাদ বন্যার আশঙ্কার উড়িয়ে দেয়া যায় না। এটা নির্ভর করছে মূলত গঙ্গার পানি বৃদ্ধি ওপর। তবে এখনই এ সম্পর্কে বলার সময় আসেনি। তিনি জানান, গঙ্গার পানি দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এ নদীর পানি বৃদ্ধির পরিমাণ এখন পর্যন্ত অনেক কম। এর উজানেও এখন পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাত হয়নি। পানি স্থিতিশীল থাকার কারণে এখন বলা যাচ্ছে না আগস্টে এ নদীর পানি আরও বাড়বে কি না। যদি গঙ্গার পানি বাড়তে শুরু করে তাহলে দেশে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। আর যদি গঙ্গা পানি স্থিতিশীল থাকে তাহলে দ্বিতীয়বার বন্যার কোন আশঙ্কা নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছেন উজান থেকে ব্রহ্মপুত্র দিয়ে পানি আসার কারণেই উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, এখন পর্যন্ত গঙ্গার পানি স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি জানান, গঙ্গার পানি যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে দেশে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এ নদীর পানি বাড়া সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে যদি গঙ্গার নদীর পানি সমানভাবে বৃদ্ধি পায় তাহলে দেশে অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন উজানে বৃষ্টিপাত কমে আসায় বড় নদীগুলোর পানির যেহেতু কমতে শুরু করেছে এ কারণে আপাতত বন্যার অবনতি হওয়ার কোন লক্ষণ দেয়া যাচ্ছে না। দ্রুতই পানি নেমে যাচ্ছে। একই সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তারা জানান, পানি উন্নয় বোর্ড থেকে সর্বক্ষণিকভাবে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে আপডেট সঙ্গে সঙ্গে জানিয়েছে দেয়া হচ্ছে। বোর্ডের পক্ষ থেকে বড় ৫ থেকে ১০ দিনে পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব। এরপর পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেবে তা পর্যবেক্ষণ ছাড়া বলা সম্ভব নয়। এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলের এখন পর্যন্ত ১৬ জেলার ৫৯ উপজেলায় বন্যাকবিলত হয়ে পড়েছে। ২৯ জুলাই পর্যন্ত বন্যায় তিন লাখ ৯৩ হাজার ৪৯৬টি পরিবারের মোট ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬১৫ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৯ হাজার ৩১৪টি ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১২ হাজার ৩৭১টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছয় শতাধিক। দুর্গত এলাকায় ত্রাণের কোন অভাব নেই। বন্যাকবলিত জনগণের জন্য সহায়তা কার্যক্রম ও আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় ৩৪৬টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। আট হাজার প্যাকেট ও পর্যাপ্ত পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট প্লাবিত জেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বলেও মন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া উল্লেখ করেন। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে দেশে এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণাধীন ১৯ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পর্যবেক্ষণাধীন ৯০টি সমতল স্টেশনের মধ্যে পানি বেড়েছে ৩৭টি পয়েন্টে। কমেছে ৪৭ পয়েন্টে। অপরিবর্তিত অবস্থায় রয়েছে ৩টি পয়েন্টে। অপরদিকে তিনটি পয়েন্টের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। যেসব এলাকায় নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ॥ এখন পর্যন্ত ১৯টি পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রামের কাছে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘটের পানি গাইবান্ধা সীমান্তে বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি চিলমারী সীমান্তে ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ এলাকায় ৮৫ সেন্টিমিটার, সারিয়াকান্দিতে ৭৪ সেন্টিমিটার, কাজীপুরে ৫৪ সেন্টিমিটার, সিরাগঞ্জ এলাকায় ৭০ সেন্টিমিটার, আরিচায় ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গুর নদীর পানি সিংড়ায় ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়ি এলাকায় ১০৬ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন এলাকায় ১৩৭ সেন্টিমিটার, শীতলক্ষ্যা নদী নারায়ণগঞ্জ এলাকায় ২০ সেন্টিমিটার, কালিগঙ্গা নদী তারাঘাট এলাকায় ৯৮ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী জাগির এলাকায় ১১ সেন্টিমিটার, পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দের কাছে ১শ’ সেন্টিমিটার, ভাগ্যকুল এলাকায় ৬০ সিন্টিমিটার, সুরেশ্বরে ৪০ সেন্টিমিটার, কংস নদীর পানি জারিয়া জঞ্জাইল এলাকায় ৪৪ সেন্টিমিটার, তিতাস নদীর পানি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ব্রহ্মপুত্র সুরমা কুশিয়ারা নদীর পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে। গঙ্গা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকলেও পদ্মা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র যমুনা, সুরমা কুশিয়ারা নদীর পানি সমতলে হ্রাস অব্যাহত থাকবে। ব্রহ্মপুত্র যমুনা নদী এলাকায় গাইবান্ধা, জামালপুর ও বগুড়া ধরলা নদী এলাকায় কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি ইতোমধ্যে উন্নতি হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি অব্যাহত থাকবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদ্মা নদীর পানি সমতলে বাড়বে। যার ফলে রাজবাড়ি, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ঢাকার আশপাশে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা নদীসমূহের পানি আরও বাড়বে। বিভিন্ন জেলার বন্যার খবর গাইবান্ধা ॥ জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এ ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চত্বর এবং কাতলামারির ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। তিন সপ্তাহের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় ৪টি উপজেলার ৩২টি ইউনিয়নের ৩ লাখ ৭৫ হাজার বন্যাকবলিত মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এছাড়া সোমবার সকালে বাঁধ ভাঙ্গা বন্যার পানির তোড়ে ফুলছড়ির কালিরবাজার সড়কের পশ্চিম ছালুয়া গ্রাম সংলগ্ন ব্রিজটি ভেঙ্গে গেছে। এ নিয়ে ফুলছড়ি উপজেলা সদরের উড়িয়া-কালির বাজার, কাঠুর-কালিরবাজার, হাজিরহাট-উদাখালি এবং সিংড়িয়া-কালিরবাজার সড়কের ৫টি ব্রিজ ধসে গেছে। গাইবান্ধা-ফুলছড়ি সড়কে গোদার বাজারের রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় ফুলছড়ি উপজেলা সদরের সঙ্গে গাইবান্ধাসহ গোটা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। জামালপুর ॥ জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জামালপুর সদর উপজেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রেললাইন তলিয়ে যাওয়ায় তিনদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার দুপুর থেকে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। বন্যায় ৬২টি ইউনিয়ন ও ৭টি পৌরসভায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ১৮ হাজার ৫শ’ ৫০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। রাজশাহী ॥ পদ্মার চরাঞ্চলে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে বাঘা উপজেলার তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে কয়েকদিনের মধ্যেই এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে এরইমধ্যে এসব স্কুলে কমে গেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। চরাঞ্চলের চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯০ মিটার, পূর্ব চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১০ মিটার ও চৌমাদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫০ মিটার দূরত্বে রয়েছে নদী ভাঙ্গন থেকে। চকরাজাপুর এলাকায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে শতাধিক পরিবারের বাড়ি-ঘর পদ্মাগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। তাঁরা বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছেন। ফরিদপুর ॥ জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের নতুনডাঙ্গি এলাকায় পদ্মা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পদ্মা নদীর পানি ঢুকে নতুন করে ১৫ গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। রবিবার রাত নয়টার দিকে পদ্মা নদীর পানির তোড়ে বেড়িবাঁধের প্রায় একশ’ মিটার অংশ ধসে যায়। মুন্সীগঞ্জ ॥ বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দী পরিবারগুলোর দুর্ভোগ বেড়েছে। লৌহজং উপজেলার কলমা, ডহরী, শামুরবাড়ি, কনকশার, যসলদিয়া, কান্দিপাড়া, টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাসাইল, বানারী, পাঁচনখোলা, নগরযোয়ার, পাঁচগাঁও, কামারখাড়া ও শ্রীনগর উপজেলার কবুতরখোলাসহ পদ্মা তীরের গ্রামগুলো কয়েক হাজার পরিবার এখন বন্যাকবলিত। পানি বেড়ে যাওয়ায় শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই কাওড়াকান্দির একটি ঘাট তলিয়ে গেছে। তাই গুরুত্ব এই ফেরি সার্ভিস হুমকির মুখে রয়েছে। মানিকগঞ্জ ॥ জেলার অভ্যন্তরীণ নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া গ্রামে লাল চান নামের দুই বছরের এক শিশু মারা গেছে। জেলায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। টাঙ্গাইল ॥ সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যাকবলিত ৬টি উপজেলার এলাকারগুলোর ঘড়বাড়ি এখন রয়েছে পানির নিচে। পানিবন্দী পরিবারগুলোকে উদ্ধার এবং ত্রাণ সরবরাহ কম বলে অভিযোগ রয়েছে। খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রায় ২ হাজার পরিবার।
×