ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ছিটমহলে ৬৮ মোমবাতি জ্বালিয়ে বন্দীদশা স্মরণ

আনন্দ-উচ্ছ্বাসে অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার বছরপূর্তি উৎসব

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২ আগস্ট ২০১৬

আনন্দ-উচ্ছ্বাসে অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার বছরপূর্তি উৎসব

স্টাফরিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ নানা আয়োজনে বিজয় দিবস পালন করেছে কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়াবাসী। ৩১ জুলাই মধ্যরাতে আয়োজনের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে কর্মসূচী শুরু করে তারা। এরপর অভিশপ্ত জীবনের ৬৮ বছর ভুলে যেতে ৬৮টি মশাল এবং ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোকিত করে দাসিয়ারছড়ার কালিরহাট প্রাঙ্গণ। মধ্যরাতে ছিটমহলের মানুষজন আনন্দ-উল্লাসে নামে রাস্তায়। দাসিয়ারছড়াসহ কুড়িগ্রামের ১২টি ছিটমহলবাসী অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরে গত বছরের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে। সেদিন বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে তারা। ছিটমহল বিনিময়ের এক বছর পর ৩১ জুলাই রবিবার মধ্যরাতে আবারও আনন্দে ভাসে দাসিয়ারছড়াবাসী। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক জাফর আলী মোমবাতি জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। বক্তব্য রাখেনÑ ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও, ছিটবিনিময় আন্দোলন সমন্বয় কমিটি বাংলাদেশ ইউনিটের সাবেক সভাপতি মইনুল হক, সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, চাষী করিম, সাঈদ হাসান লোবান প্রমুখ। সোমবার সকালে আনন্দ র‌্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়। এর মধ্যে রয়েছেÑ লাঠিখেলা, নৌাকাবাইচ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় থেকে জানান, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উদযাপন করা হলো ছিটমহল বিনিময়ের এক বছর পুর্তি । সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় পঞ্চগড় জেলার বিলুপ্ত ৩৬ ছিটমহলে একযোগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলের মফিজার রহমান কলেজ মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা লায়লা মুনতাজেরী দীনা। নিজস্ব সংবাদদাতা লালমনিরহাট থেকে জানান, ৬৮ বছরের কথা ভেবে কষ্ট না বাড়িয়ে এগিয়ে চলার স্বপ্ন দেখুন। একমাত্র শিক্ষা পারে জাতিকে সমৃদ্ধ করতে। তাই এখন আর ঘরে বসে থাকলে চলবে না। আপনাদের জীবনমান উন্নয়নে নিজেদের লড়াই চালাতে হবে। ছড়িয়ে পড়তে হবে। সাবেক ছিটের প্রতিটি শিশুকে স্কুলে পাঠাতে হবে। শিশুরা শিক্ষা অর্জন করে জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে ছিটমহলগুলোর ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাবে। শেখ হাসিনার সরকার পাশে থাকবে সব সময়। আপনাদের উন্নয়নে নানা কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এক বছরে দৃশ্যমান কিছু উন্নয়ন হয়েছে। অবশিষ্ট কাজসহ সবকিছুই করে দেয়া হবে। লেখাপড়ার বিকল্প কিছু নেই। এজন্য সবার আগে ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে। শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সোমবার দুপুর ১২টায় নতুন এক বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর কুতুবুল আলমের সভাপতিত্বে বিলুপ্ত ১১৯ নম্বর বাঁশকাটা দয়ালটারী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন এমপি এসব কথা বলেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেনÑ পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমীন, ভাইস চেয়ারম্যান সফি কামাল, আওয়ামী লীগ নেতা মাহামুদুল হাসান, বাবু পর্ণূ চন্দ্র, বিলুপ্ত ছিটমহলের নেতা হাফিজুল ইসলাম, আজিজুল হক, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
×