ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রিপাবলিকান প্রার্থী সঙ্কীর্ণমনা, নেতৃত্ব দেয়ার অযোগ্য ॥ খিজির খান

ট্রাম্পকে জবাব দিলেন নিহত মুসলিম সেনার মা

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ২ আগস্ট ২০১৬

ট্রাম্পকে জবাব দিলেন নিহত মুসলিম সেনার মা

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একজন ‘সঙ্কীর্ণমনা’ ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন এক মার্কিন মুসলিম দম্পতি পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত খিজির খান-গাজালা খান, যাদের সন্তান ১২ বছর আগে ইরাক যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে রিপাবলিকান পার্টির পদপ্রার্থী ট্রাম্পের সমালোচনা করার পর এ বিতর্ক শুরু হয়। তিনি রবিবার বলেন, ট্রাম্প খুবই সঙ্কীর্ণমনা একজন ব্যক্তি এবং তিনি সহানুভূতি পাওয়ার অযোগ্য। এদিকে স্বামী বক্তব্য দেয়ার সময় পাশে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ট্রাম্পকে জবাব দিয়েছেন গাজালা খান। খবর গার্ডিয়ান ও ওয়েবসাইটের। খিজির ও গাজালার সন্তান ক্যাপ্টেন হুমায়ুন কবীর (২৭) ২০০৪ সালে ইরাকে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। ডেমোক্র্যাটিক দলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের সমাবেশে খিজির খান বলেন, ‘ট্রাম্প একজন নিচুমনা ব্যক্তি, তিনি এ সুন্দর দেশটির নেতৃত্ব দেয়ার পুরোপুরি অযোগ্য।’ হিলারি এদিন ক্লিভল্যান্ডের একটি গির্জায় বক্তব্যে বলেন, ট্রাম্পের বক্তব্যে (খিজির খানের প্রতি) উপহাস ছাড়া আর কিছু নেই। ট্রাম্প যা বলেছেন তা মুসলিমদের জন্য অবমাননাকর। তার কথায়, আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে চরম ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হবে।’ খিজির খানের স্ত্রীর চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, তাকে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়নি। খিজির খানের স্ত্রী গাজালা খান এ সম্পর্কে ওয়াশিংটন পোস্টের কলামে লিখেছেন, তখন ভীষণ রকম ‘মন খারাপ’ থাকায় তিনি বক্তব্য দিতে চাননি। তিনি জানান, তার স্বামী তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তিনি কিছু বলতে চান কি-না, কিন্তু ছেলে হারানোর সেই শোক ফিরে আসায় তিনি কিছু বলেননি। তিনি বলেন, কারণ একটা কিছু না বললেও পুরো বিশ্ব, পুরো আমেরিকা আমার ব্যথা অনুভব করেছে। আমি গোল্ড স্টার পাওয়া মা। যে আমাকে দেখেছে সেই তার হৃদয়ে আমাকে অনুভব করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প জানতে চেয়েছেন কেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সম্মেলনে আমি কথা বলিনি, তিনি আমার কথা শুনতে চান। ট্রাম্পের প্রতি এ আমার জবাব। গাজালা খান বলেন, ট্রাম্প বলেছেন, আমার বলার কিছু ছিল না। আমার বলার আছে। আমি ছেলে হুমায়ুন খান, সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন ১২ বছর আগে ইরাকে মারা যায়। দুই বছর বয়সে সে এখানে আসে, সে আমেরিকাকে ভালবাসত। যখন হুমায়ুনকে ইরাকে পাঠানো হয়, আমি ও আমার স্বামী তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতাম। পাকিস্তানে হাই স্কুলে পড়ার সময় ১৯৬৫ সালে আমিও যুদ্ধ দেখেছি। তাই আমি খুব ভয়ে থাকতাম। আমার আরও দুই ছেলে থাকলেও হুমায়ুনকে হারানোর বেদনা আমি সব সময় অনুভব করি। এ বিষয়ে কথা বলা আমার জন্য সব সময়ই কঠিন। প্রতিদিন আমি যখন প্রার্থনা করি, আমি তার জন্য প্রার্থনা করি ও কাঁদি। তিনি বলেন, যে ঘরে হুমায়ুনের ছবি রাখা আছে আমি সে ঘরে যেতে পারি না, এত বছরে পারিনি। সম্মেলনের মঞ্চের পেছনে আমার ছেলের বিশাল ছবির সামনে দিয়ে হেঁটে আসার সময় আমি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম না। কোন মা পারবে? ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও সন্তান আছে, যাদের তিনি ভালবাসেন। কেন আমি কথা বলিনি তা নিয়ে তার আশ্চর্য হওয়ার সত্যি কিছু কি আছে? তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প ইসলাম নিয়ে অজ্ঞের মতো কথা বলেন।
×