ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শরণার্থীদের অলিম্পিক আনন্দ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১ আগস্ট ২০১৬

শরণার্থীদের অলিম্পিক আনন্দ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আর মাত্র ৪ দিন পরই শুরু হয়ে যাবে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ অলিম্পিক যজ্ঞ। এবার ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো শহরে বসবে এ মর্যাদার আসর। এবার অলিম্পিকের আকর্ষণ একটা কারণে কিছুটা ম্লান হয়ে যাবে বলে অনেকেই মনে করছেন। সেটা হচ্ছে অন্যতম শক্তিধর দল রাশিয়া পূর্ণাঙ্গ দল নিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশটির ক্রীড়াবিদদের মধ্যে নিষিদ্ধ ড্রাগের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার প্রমাণ হওয়ার পর অনেকেই নিষিদ্ধ হয়েছেন এবং বেশ কিছু ক্রীড়ায় পুরো দলই নিষিদ্ধ হয়েছে। যে কারণে রিও অলিম্পিকের বেশ কয়েকটি ক্রীড়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভাব থাকবে। তবে যেসব এ্যাথলেট সুযোগ পেয়েছেন অলিম্পিকে প্রতিযোগিতা করার তারা বেশ আনন্দেই দিন কাটাচ্ছেন অলিম্পিক ভিলেজে। আছেন বেশ কয়েকজন শরণার্থী অলিম্পিয়ান। যারা বিভিন্ন কারণে নিজ দেশ ত্যাগ করে অন্য দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এবার অলিম্পিকে বর্তমানে বসবাসরত দেশের পতাকাতলেই অংশ নেবেন তারা। রিও অলিম্পিকে এ সংখ্যাটা ১০! এখনও মূল প্রতিযোগিতা শুরুর চারদিন বাকি। বেশ আগেভাগেই বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদরা রিও অলিম্পিকে অংশ নিতে চলে এসেছেন ব্রাজিলে। অনুশীলন করছেন নিয়মিত। অলিম্পিক ভিলেজে থেকে নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছেন দেশটির পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে। এর পাশাপাশি ব্রাজিলের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা, স্থানসমূহ ঘুরে ঘুরে দেখারও সুযোগ মিলছে। বিশেষ করে অলিম্পিক ভিলেজে এসে দীর্ঘদিন পর যেন শান্তিতে বুক ভরে বাতাস নিতে পারছেন শরণার্থীরা। বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের দামামায় অনেকেই দেশ ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে ক্রীড়াবিদরাও আছেন। দেশ ছাড়ার কারণে আর সেই দেশের হয়েও অলিম্পিকে অংশ নিতে পারছেন না। রিও অলিম্পিকে অংশ নিতে হচ্ছে বর্তমানে যেখানে আবাসস্থল সেই দেশটির পতাকার নিচে। তবে এরপরও বেশ শান্তিতেই আছেন শরণার্থী অলিম্পিয়ানরা। এই শরণার্থীরা সম্প্রতিই ঘুরে এসেছেন ব্রাজিলের বিখ্যাত ভাস্কর্য ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’। রিডিমারের মূর্তি দেখে দারুণ অভিভূত হয়ে অলিম্পিয়ানরা সেখানে প্রার্থনাও করেছেন। এমনকি জার্মানির হয়ে অংশ নিতে আসা সিরিয়ান সাঁতারু ইয়ুসরা মারদিনি এটা দেখে আপ্লুত হয়ে বলে ওঠেন, ‘এটা সত্যিই নিঃশ্বাস বন্ধ করে দিচ্ছে! এটা দেখতে সত্যি অনেক বিস্ময়কর রকমের ভাল।’ রিডিমারের ছবির পোস্টকার্ড সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ব্রাজিলে। ১০ শরণার্থী এ্যাথলেটের মধ্যে ৫ জনই এবার কেনিয়ার হয়ে অংশ নিচ্ছেন। এই পাঁচজনই দক্ষিণ সুদানের বংশোদ্ভূত। দেশ ছেড়ে চলে এসে বসবাস করছেন কেনিয়াতে। কঙ্গো ও সিরিয়ার আছেন দুইজন আর ইথিওপিয়ার একজন। তারা এবার অলিম্পিকের অন্যতম আকর্ষণ জ্যামাইকান স্প্রিন্টার উসাইন বোল্টের সঙ্গেও প্রথমবার দেখা করেছেন। সর্বকালের সবচেয়ে গতিধর এ এ্যাথলেটের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়েও দারুণ উৎফুল্ল শরণার্থী অলিম্পিয়ানরা। বেশ আনন্দেই সময় কাটছে তাদের।
×