ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকৃতির প্রেরণায় নির্মিত পোশাক প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১ আগস্ট ২০১৬

প্রকৃতির প্রেরণায় নির্মিত পোশাক  প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যাপিত জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে পোশাক সংস্কৃতি। পোশাক যেহেতু পরতেই হবে তাই সেটা হতে হবে নান্দনিক। পোশাক সংস্কৃতির বিচিত্র রূপের দেখা মিলল জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী কক্ষে। প্রতিটি পোশাকেই রয়েছে প্রকৃতির নিবিড় ছোঁয়া। গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা বসন্তের নানা অনুষঙ্গকে সঙ্গী করে নির্মিত হয়েছে পরিধেয় বস্ত্রগুলো। সঙ্গে আছে বিভিন্ন দিবসভিত্তিক পোশাকের উপস্থাপনা। রকমারি নক্সা ও বিচিত্র গড়নের পোশাকগুলো সৃজন করেছেন নবীন উদ্যোক্তারা, যাদের অধিকাংশই নারী। দেশীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির সংযোগে ঘটেছে বহুমাত্রিক ধারণার প্রকাশ। লাইন, কালার, টেক্সচার ও শেডের সমন্বয়ে নির্মিত হয়েছে নারী-পুরুষ ও শিশুদের পোশাকগুলো। রবিবার থেকে জাদুঘরে শুরু হয় নবীন উদ্যোক্তাদের প্রেরণার প্রকাশে ‘ফ্যাশন কনসেপ্ট এক্সিবিশন’ শীর্ষক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পনির্ভর প্রতিষ্ঠান এসএমই ফাউন্ডেশন। এসএমই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে নবীন উদ্যোক্তাদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেই কর্মশালায় নির্বাচিত ৪১ উদ্যোক্তার তৈরি পোশাক নিয়ে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রদর্শনীটি আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এসব উদ্যোক্তার সঙ্গে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের সংযোগ স্থাপন। দেশীয় কাপড় ও উপকরণে কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সংযোগে বৈচিত্র্যময় বিষয় ও রঙের প্রয়োগে ৩৫টি ধারণার ভিত্তিতে পোশাকগুলো তৈরি করেছেন উদ্যোক্তারা। সামুদ্রিক জীবন, প্রকৃতি, পরিবেশ, রংময় গ্রীষ্ম, বর্ষা, সামার ওয়েডিং, প্রজাপতি, গ্রীন কনসেপ্টÑএমন বহুমুখী ধারণার ভিত্তিতে গড়া পোশাকগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে প্রদর্শনীতে। বিকেলে জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ফ্যাশন এন্টারপ্রেনার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এফইবি) সভাপতি আজহারুল হক। বক্তব্য রাখেন কর্মশালার প্রধান প্রশিক্ষক ফ্যাশন ডিজাইনার চন্দ্র শেখর সাহা। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তৃতা দেন ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক এসএম শাহীন আনোয়ার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশের পোশাকশিল্পের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে আমির হোসেন আমু বলেন, রফতানিমুখী তৈরি পোশাক বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প খাত। রফতানি আয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মূল্য সংযোজন ও জনগণের জীবন মানোন্নয়নে এ শিল্প খাতের রয়েছে ব্যাপক অবদান। তৈরি পোশাক রফতানিতে বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। অচিরেই এটি এক নম্বর স্থান দখল করবে বলে আশা করা হচ্ছে। পোশাক শিল্প খাতে বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রগতির দৃষ্টান্ত বিশ্বের যে কোন দেশের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনে আমরা নারীর সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। নারীদের উন্নয়নের স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন তৃণমূল পর্যায় থেকে নারী উদ্যোক্তা তৈরির ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। ফলস্বরূপ অনেক নারী উদ্যোক্তা দেশ-বিদেশে পুরস্কৃত হয়েছে এসএমই খাতকে সমৃদ্ধ করছে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ফ্যাশন ডিজাইন কোর্স আয়োজন ফাউন্ডেশনের ধারাবাহিক কর্মকা-েরই অংশ। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ৬০০ ফ্যাশন ডিজাইনারকে প্রশিক্ষিত করেছে। এসএম শাহীন আনোয়ার বলেন, মানুষ এখন বিষয়ভিত্তিক পোশাক করে। এই বিষয়ের সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে সৃজনশীলতা মেলে ধরার প্রয়াস। প্রদর্শনীর পোশাকগুলো স্তরে স্তরে বিন্যাস করে সাজানো হয়েছে। আছে বিশেষ দিবস, পারিবারিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে ঋতুভিত্তিক পোশাক। পয়লা বৈশাখ, মে দিবস, বিজয় দিবস, ঈদ উৎসব, শারদীয় পূজা উৎসব, একুশে ফেব্রুয়ারি, বসন্ত উৎসব, গায়ে হলুদসহ নানা বিন্যাসে সজ্জিত করা হয়েছে প্রদর্শনীকে। আছে বাহারি রং ও নক্সায় গড়া মেয়েদের শাড়ি থেকে শুরু করে সালোয়ার-কামিজ, জিন্স-টপসসহ ফিউশনধর্মী পোশাক। শিশুদের পোশাকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, বিয়ের পাগড়িসহ নানা রকমের পোশাক। তিন দিনের এ প্রদর্শনী শেষ হবে মঙ্গলবার। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। কাজী মোতাহার হোসেনের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান ॥ বহুমাত্রিক প্রতিভায় দীপ্ত এক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেন। লিখেছেন বিজ্ঞান, সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক গ্রন্থ। কথাসাহিত্যিক পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন পরিসংখ্যানবিদ, বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদের পরিচয়। শনিবার ছিল এই জ্ঞানতাপসের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে রবিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে কাজী মোতাহার হোসেন স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ। কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. সন্জীদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম ‘কাজী মোতাহার হোসেনের সঞ্চরণ : চিন্তার পরিধি ও ব্যাকরণ’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান, প্রাণ-পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ জলিল ও হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন বক্তব্য রাখেন। কাজী মোতাহার হোসেনের জীবন ও দর্শন শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করায় ৩ শিক্ষার্থীকে কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন পুরস্কার প্রদান করা হয়। জ্ঞানতাপস অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে এর উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে নেতৃত্ব ও পরামর্শ দিয়েছেন। কাজী মোতাহার হোসেন স্মৃতি স্বর্ণপদক পেয়েছেন এমএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী মিরাজুল ইসলাম এবং বৃত্তি পেয়েছেন বিএস অনার্স পরীক্ষায় যৌথভাবে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত মোছাঃ সোনিয়া খাতুন ও এএইচএম মুশফিকুর রহমান নবীন। এছাড়া, রচনা প্রতিযোগিতায় ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারী শিক্ষার্থীরা হলেন যথাক্রমে মোশারফ হোসেন, মোঃ হাসিবুল ইসলাম ও তুশি মারইয়াম। ‘শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয়’ গ্রন্থের প্রকাশনা ॥ রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল খালেক প্রণীত গ্রন্থ ‘শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয়’। বইটির প্রকাশনা ও পুনর্মিলনী উৎসবের আয়োজন করা হয় রবিবার। বিকেলে বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় বাংলা বিভাগ এ্যালামনাই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাংলা বিভাগ এ্যালামনাইয়ের সভাপতি আপেল আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবে মিল্লাত। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পিএম সফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন কবি জামিল রায়হান, মাহমুদ হাসান, আজিজার রহমান আজু, অধ্যাপক অনীক মাহমুদ, ড. রতন সিদ্দিকী, অধ্যাপক শহীদ ইকবাল। উপস্থাপনায় ছিলেন আমিনুর রহমান সুলতান। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আবদুল খালেক। আলোচনা পর্ব শেষ ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। ‘অনেক কথা বলেছিলাম’ এ্যালবামের প্রকাশনা ॥ প্রকাশিত হলো মীরা ম-লের রবীন্দ্রসঙ্গীতের এ্যালবাম ‘অনেক কথা বলেছিলাম’। রবিবার বিকেলে রাজধানীর একটি রেস্তরাঁয় এ্যালবামটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
×